ফিনল্যান্ডে শিক্ষা একটি জন্মগত অধিকার ও রাষ্ট্রকর্তৃক প্রদত্ত সেবা হিসেবে বিবেচিত হয়। শিক্ষাব্যবস্থা বিশ্বমানের হওয়ায় বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের বিশেষ আগ্রহ রয়েছে ফিনল্যান্ড পড়াশোনা করার। এর নেপথ্যে রয়েছে দেশটির বিশ্বসেরা বিদ্যাপিঠ ও বহুজাতি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে কাজের পর্যাপ্ত সুযোগ। ফিনল্যান্ডের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষার জন্য ইংরেজি কোর্স রয়েছে। তবে বেশির ভাগ কোর্সই ফিনিশ কিংবা সুইডিশ ভাষায় পড়ানো হয়, বিশেষ করে স্নাতক পর্যায়ে। দেশটিতে ২০১৭ সালের আগপর্যন্ত পড়াশোনার জন্য টিউশন ফি লাগত না। এরপর ইউরোপের বাইরের দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি চালু হয়েছে। দেশটিতে উচ্চশিক্ষায় আবেদন, অধ্যয়ন খরচ, স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক—

ফিনল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় আবেদনের পূর্বশর্ত কী কী—

ব্যাচেলর প্রোগ্রামের জন্য উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা, হাইস্কুল ডিপ্লোমা বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য প্রয়োজন স্নাতক ডিগ্রি।

প্রাসঙ্গিক একাডেমিক বিষয়ে সম্পন্ন ক্রেডিট পয়েন্ট ইসিটিএসের (ইউরোপিয়ান ক্রেডিট ট্রান্সফার অ্যান্ড অ্যাকুমুলেশন সিস্টেম) সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।

কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় জিম্যাট বা জিআরই স্কোর চাইতে পারে।

ইউএএস (ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স) বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মাস্টার্সের জন্য আলাদাভাবে দরকার হবে দুই বছরের প্রাসঙ্গিক কাজের অভিজ্ঞতা।

ডক্টরাল প্রোগ্রামগুলোর জন্য স্নাতকোত্তর ডিগ্রির পাশাপাশি গবেষণা প্রস্তাব বা প্রকাশনা থাকতে হবে।

কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির আগে প্রবেশিকা পরীক্ষা, এসএটি পরীক্ষা বা অনলাইন ইন্টারভিউ নেওয়া হতে পারে।

ফিনল্যান্ডের সাধারণ ভাষা ফিনিশ বা সুইডিশ হলেও এখানে ব্যাপক হারে ইংরেজিতে যোগাযোগের প্রচলন রয়েছে। অধিকাংশ ফিনিশরাই, বিশেষ করে তরুণেরা খুব ভালো ইংরেজি বলতে পারেন। তাই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আলাদা করে স্থানীয় ভাষা জানার দরকার পড়ে না। ইংরেজি ভাষা দক্ষতার জন্য সাধারণত আইইএলটিএস বা টোয়েফলের ফলাফলকে বেশি মূল্যায়ন করা হয়।

আরও পড়ুনআইইএলটিএস পরীক্ষার নিবন্ধন যেভাবে করবেন১৩ আগস্ট ২০২৪

চাহিদা সম্পন্ন কোর্সের তালিকা—

আলটো ইউনিভার্সিটি

ইউনিভার্সিটি অব হেলসিঙ্কি

ইউনিভার্সিটি অব অউলু

ইউনিভার্সিটি অব তুর্কু

ল্যাপেনরান্ত ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি

লুট ইউনিভার্সিটি

ট্যাম্পেরে ইউনিভার্সিটি

ইউনিভার্সিটি অব জিভাস্কিলা

ইউনিভার্সিটি অব ইস্টার্ন ফিনল্যান্ড

অ্যাবো একাডেমি ইউনিভার্সিটি

ইউনিভার্সিটি অব ভাসা

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়নের সেরা বিষয়গুলো

কম্পিউটার সায়েন্স ও আইটি

ব্যবসায় প্রশাসন

সাসটেইনেবল ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি

রিনিউয়েবল এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং

আর্লি চাইল্ডহুড এডুকেশন অ্যান্ড কেয়ার

ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট

ডিজাইন ও মিডিয়া

ফিনল্যান্ডে আবেদনের উপায়

সাধারণত দুটি মৌসুমে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি নেয় দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। অটাম সেমিস্টারের ভর্তি শুরু হয় আগস্ট বা সেপ্টেম্বর থেকে। স্প্রিং সেমিস্টার ভর্তি শুরু হয় জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে। উভয় ক্ষেত্রে ভর্তির সময়সীমা সাধারণত পাঁচ থেকে ছয় মাস পর্যন্ত থাকে। মূলত তিনটি উপায়ে বিদেশি ছাত্রছাত্রীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারেন, তা হলো—

ইউএএসগুলোর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে

অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে

স্টাডিইনফোর ওয়েবসাইটে

ইউনিভার্সিটিগুলো সাধারণত দুটি উপায়ে আবেদন গ্রহণ করে

যৌথ আবেদন

পৃথক আবেদন

যৌথ আবেদনে একসঙ্গে সর্বোচ্চ ছয়টি প্রোগ্রামে আবেদন করা যায়। আর পৃথক আবেদনটি হচ্ছে চিরাচরিত পদ্ধতি, যেখানে একটি প্রতিষ্ঠানে শুধু একটি প্রোগ্রামে আবেদনের সুযোগ থাকে।

ভর্তিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

সম্পূর্ণরূপে পূরণ করা আবেদনপত্র।

একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ও ডিপ্লোমার প্রত্যায়িত কপি।

ইংরেজি ভাষা দক্ষতার প্রমাণ (আইইএলটিএস বা টোয়েফল)।

পাসপোর্টের কপি।

ইউএএসে আবেদনের ক্ষেত্রে

কর্মসংস্থানের প্রমাণপত্র।

প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থার আবেদন।

মাস্টার্স বা ডক্টরাল প্রোগ্রামের জন্য।

সিভি।

মোটিভেশন লেটার বা পার্সোনাল স্টেটমেন্ট।

রেফারেন্স লেটার (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।

প্রকাশনা (ডক্টরেটের ক্ষেত্রে)।

ইংরেজি ভাষা দক্ষতা সনদ ও পাসপোর্ট ছাড়া বাকি সব নথি যদি বাংলায় হয়, তাহলে সেগুলোর অফিশিয়াল অনূদিত সংস্করণ সংযুক্ত করতে হবে।

ফাইল ছবি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট ইউন ভ র স ট ব শ বব দ য শ বব দ য ল স ধ রণত র জন য পর ক ষ ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেট-১ আসনে আরিফুল হকের নির্বাচনী প্রচার

আরিফুল হক চৌধুরী। সিলেট বিএনপির অন্যতম শীর্ষ নেতা। সিটি করপোরেশনের মেয়র হয়েছেন দুইবার। বর্তমানে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা। জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে সব সময় রহস্য রেখে কথা বলতেন আরিফুল হক। তবে গতকাল শুক্রবার তিনি বিষয়টি খোলাসা করেছেন।

নগরীর বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন আরিফুল হক। সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক।

নামাজ শেষে সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে আরিফুল হক বলেন, ‘এম সাইফুর রহমান মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ মসজিদে নামাজ আদায় করেছেন। মসজিদটির উন্নয়নে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।’

আরিফুল হক জুমা শেষে ‘ইজাজত’ নিয়ে প্রচার শুরুর কথা মুসল্লিদের জানান। দল চাইলে তিনি সিলেট-১ আসন থেকে নির্বাচন করবেন বলে মন্তব্য করেন। যদিও বক্তব্যে আরিফুল হক এ আসনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে চান বলে জানান।

আরিফুল হক জানান, কোনো কারণে তারেক রহমান এখানে আসতে না চাইলে তিনি নির্বাচন করবেন। পরে সমকালকে সাবেক এ মেয়র বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, সিলেটের মুরুব্বিয়ানসহ সর্বস্তরের মানুষের কাছে দোয়া চেয়ে ইজাজত নিয়ে প্রচার শুরু করেছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ