অন্তর্বর্তী সরকারকে সব ধরনের বিতর্ক থেকে সরে আসতে হবে: সাইফুল হক
Published: 28th, June 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারকে সব ধরনের বিতর্ক থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেছেন, অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করতে বিদ্যমান নির্বাচনী ব্যবস্থার খোলনলচে পাল্টাতে হবে। সংসদ সদস্য হওয়াকে অলাভজনক করতে হবে। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারকে সব ধরনের বিতর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
শনিবার রাজধানীর ইস্কাটনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সভায় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসব কথা বলেন বলে দলটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সাইফুল হক বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর আগামী বছরের মধ্য ফেব্রুয়ারিতে সম্ভাব্য জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে সব বিভ্রান্তির অবসান ঘটবে আশা করি। নির্বাচনকে একধরনের রাজনৈতিক ব্যবসা ও অর্থবিত্ত গড়ে তোলার মাধ্যমে পরিণত করা হয়েছে। এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হলে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়াকে অলাভজনক করতে হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বিদেশি কোনো কোম্পানিকে লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী ও অদূরদর্শী হবে বলে মন্তব্য করেছেন সাইফুল হক। তিনি বলেন, দেশ ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ কোনো সরকার আমাদের প্রধান সমুদ্রবন্দরকে বিদেশিদের হাতে তুলে দিতে পারে না। অন্তর্বর্তী সরকারের এত বড় জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত এককভাবে নেওয়ারও কোনো এখতিয়ার নেই। তিনি সরকারকে জাতীয় স্বার্থ ও জাতীয় নিরাপত্তায় ঝুঁকি সৃষ্টিকারী তৎপরতা থেকে সরে আসতেও উদাত্ত আহ্বান জানান।
রাজনৈতিক পরিষদের সভায় আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু আনছার আলী দুলাল, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পাট রপ্তানিকারকরা উদ্বিগ্ন বাজার হারানোর শঙ্কা
স্থলপথ দিয়ে বাংলাদেশের পাট ও পাটপণ্য আমদানিতে ভারতীয় নিষেধাজ্ঞায় এ খাতের রপ্তানি ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হতে পারে। সমুদ্রপথে পাট ও পাটপণ্য রপ্তানিতে ব্যয় বেশি। সময়ও বেশি লাগে। সমুদ্রপথে পাট ও পাটপণ্যের মতো ভারী পণ্য রপ্তানি লাভজনক নয়। সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ের সুবিধায় বাংলাদেশের এ ধরনের পণ্যের ৯৯ শতাংশই স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়ে থাকে। এ সুবিধায় দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের পাট ও পাটপণ্যের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার ভারত।
গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাট ও পাটপণ্যের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৫ কোটি ৯৪ লাখ ডলার বা ১ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকার। এর মধ্যে স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়েছে ১৪ কোটি ৭৭ লাখ ডলারের পণ্য।
গত শুক্রবার ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে দেশটিতে বাংলাদেশ থেকে কাঁচা পাট, পাটের রোল, পাটের সুতা ও বিশেষ ধরনের কাপড় আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারির কথা জানানো হয়। স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি নিষেধাজ্ঞা দিলেও বাংলাদেশ থেকে এসব পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সমুদ্রপথে মুম্বাইয়ের নভোসেবা বন্দর দিয়ে বাংলাদেশের এসব পণ্য ভারতে আমদানির সুযোগ রাখা হয়। ওইদিন থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।
জানতে চাইলে বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সংগঠনের সভাপতি ও ক্রিয়েশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল করিম মুন্না গতকাল সমকালকে বলেন, হঠাৎ করে ভারতের এ সিদ্ধান্তে পাটপণ্যের রপ্তানিতে একটা ধাক্কা লাগবে। কারণ, বাংলাদেশের পাটপণ্যের ভারতীয় আমদানিকারকরা মূলত কলকাতাভিত্তিক। স্থলপথে সহজেই কলকাতায় পণ্য পৌঁছানোর সুবিধা দুই দেশের জন্যই লাভজনক ছিল। এখন সমুদ্রপথে মুম্বাইয়ের নভোসেবা বন্দরে পণ্য পৌঁছানো ও সেখান থেকে আবার কলকাতায় নিয়ে আসতে হবে। এতে পরিবহন ব্যয় যেমন বাড়বে সময়ও বেশি ব্যয় হবে। এতে পাটপণ্য বাণিজ্যিকভাবে আর লাভজনক হবে না। তবে ইউরোপ এবং আমেরিকার বাজার লক্ষ্য করে পণ্যে বৈচিত্র্য আনা, মানোন্নয়ন এবং মূল্যসংযোজন করার পরিকল্পনা নেওয়া গেলে কাঁচা পাট রপ্তানির এ প্রতিবন্ধকতা পাট শিল্পের জন্য দীর্ঘমেয়াদে সুফল বয়ে আনতে পারে।
পাট ও পাটপণ্য আমদানিতে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তের প্রভাব এবং করণীয় নিয়ে চিন্তা করছে সরকার। জানতে চাইলে পাটকল করপোরেশনের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কবীর উদ্দিন সিকদার সমকালকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবন করছেন তারা। শিগগরিই সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন।
বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে গত তিন মাসে তিন দফায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল ভারত। গত ১৭ মে স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা ও সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় প্রভৃতি পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ দিয়েছিল। এর পর গত ৯ এপ্রিল ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির সুবিধা প্রত্যাহার করে ভারত।