কারা হবেন নতুন মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ
Published: 1st, July 2025 GMT
সদ্য বিদায়ী ওয়ানডে অধিনায়ক নাজমুল হোসেনকে নতুন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ কী বলেছেন, তা নিশ্চয়ই জেনে গেছেন। ওয়ানডে দল পরিচালনায় নাজমুলের সাহায্য চেয়ে মিরাজ বলেছেন, দুজন মিলেই দলটাকে ভালো অবস্থায় নিয়ে যেতে চান।
মিরাজের সেই যাত্রা শুরু হবে কাল থেকে, কলম্বোর রানাসিংহে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে দিয়ে। তার ঠিক আগে দলের অধিনায়কত্বে যেমন নতুনত্ব এসেছে, পুরোনো দল থেকে খসে পড়েছেন দুজন বড় তারকাও। গত ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন মুশফিকু রহিম ও মাহমুদউল্লাহ। মুশফিক এখনো টেস্ট খেললেও মাহমুদউল্লাহ এখন সব সংস্করণেই সাবেক ক্রিকেটার। ওয়ানডে থেকে তাঁদের অবসরের পর এই প্রথম ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল।
আরও পড়ুননাজমুলের কাছে যে সাহায্য চাইলেন মিরাজ২০ ঘণ্টা আগেতামিম ইকবাল অবসর নিয়েছেন, সাকিব আল হাসান অবসর না নিয়েও ‘অবসরে’, এখন মুশফিক–মাহমুদউল্লাহও নেই। মাশরাফি বিন মুর্তজা তো নেই আরও আগে থেকেই। সব মিলিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেট থেকে সিনিয়র ক্রিকেটারদের যে ‘যাই যাই’ রব, টি–টোয়েন্টির পর ওয়ানডেতেও এখন সেটির আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটে গেছে।
মুশফিক–মাহমুদউল্লাহর যুগপৎ বিদায়ে একটু অনভিজ্ঞ হয়ে পড়বে বাংলাদেশ দলের মিডল অর্ডার। তাঁরা অবসরে চলে গেলেও মিডল অর্ডারে মুশফিক, মাহমুদউল্লাহর নির্ভরযোগ্য বিকল্প এখনো তৈরি হয়নি বা হলেও তাঁদের পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা এখনো প্রমাণের অপেক্ষায়। অভিজ্ঞতা ও দায়িত্ব নিয়ে খেলার মানসিকতা—দুটো মিলেই আসলে অন্যদের তুলনায় এগিয়ে থাকবেন মুশফিক–মাহমুদউল্লাহ। তাঁদের বিকল্প রাতারাতি হবেও না। তবে যাঁরা আছেন, ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে নতুন করে পথ দেখাতে হলে তাঁদেরই হয়ে উঠতে হবে নতুন মুশফিক–মাহমুদউল্লাহ–সাকিব।
তাওহিদ হৃদয় কি মিডল অর্ডারের হাল ধরতে পারবেন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মারা গেছেন কিংবদন্তি বব সিম্পসন
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক ও দেশটির প্রথম পূর্ণকালীন কোচ বব সিম্পসন সিডনিতে ৮৯ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে ধরা হয় সিম্পসনকে। ১৯৫৭ থেকে ১৯৭৮ পর্যন্ত তিনি খেলেছেন ৬২ টেস্ট, ৪৬.৮১ গড়ে করেছেন ৪ হাজার ৮৬৯ রান, নিয়েছেন ৭১ উইকেট। ছিলেন দুর্দান্ত এক স্লিপ ফিল্ডারও।
তাঁর নামে পাশে আছে ১১০টি ক্যাচও। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লেগ স্পিনও করতেন সিম্পসন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর সংগ্রহে আছে ২১ হাজার ২৯ রান ও ৩৪৯ উইকেট।
১৯৬৮ সালে প্রথমবার অবসরে যাওয়ার আগে ১১ বছরে খেলেন ৫০ টেস্ট, এর মধ্যে ২৯টিতেই তিনি ছিলেন অধিনায়ক। পরবর্তীতে অবসর ১৯৭৭ সালে ৪১ বছর বয়সে আবার টেস্ট দলে ফেরেন সিম্পসন। তখন ভারতের বিপক্ষে ঘরে ও পূর্ণশক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দেন। সব মিলিয়ে অধিনায়ক হিসেবে ৩৯ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সিম্পসন।
টেস্টে সিম্পসনের ১০ সেঞ্চুরির সবগুলোই এসেছে অধিনায়ক হিসেবে। ১৯৬৪ সালে ম্যানচেস্টারে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন ৩১১ রানের ঐতিহাসিক ইনিংস, যা তাঁর ক্যারিয়ার সেরা। অধিনায়ক হিসেবে তাঁর গড় ছিল ৫৪.০৭।
শুধু খেলোয়াড় হিসেবে নন, কোচ হিসেবেও দারুণ ভূমিকা রেখেছেন সিম্পসন। ১৯৮৬ সালে কোচের দায়িত্ব নিয়ে অধিনায়ক অ্যালান বোর্ডারের সঙ্গে মিলে তৈরি করেন নতুন সংস্কৃতি।
তিনি এমন একটা সময়ে কোচের দায়িত্ব নিয়েছিলেন, যখন এর আগের দুই বছরে কোনো টেস্ট সিরিজ জিততে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। তাঁর হাত ধরে উঠে আসেন ডেভিড বুন, ডিন জোন্স, স্টিভ ওয়াহ, ক্রেইগ ম্যাকডারমট, মার্ভ হিউজের মতো খেলোয়াড়রা।
সিম্পসনের যুগেই শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ার সোনালি অধ্যায়। ১৯৮৭ সালে কোচের পাশাপাশি তাঁকে নির্বাচক প্যানেলেও যুক্ত করা হয়। এ সময়ই সামনে আসেন মার্ক টেলর, ইয়ান হিলি, মার্ক ওয়াহ, শেন ওয়ার্ন, জাস্টিন ল্যাঙ্গার, ম্যাথু হেইডেন, ডেমিয়েন মার্টিন, গ্লেন ম্যাকগ্রা ও রিকি পন্টিংরা।
সিম্পসনের অধীনেই ১৯৮৭ সালে বিশ্বকাপ জেতে অস্ট্রেলিয়া। পাশাপাশি ১৯৮৯ সালে ফিরে পায় অ্যাশেজ এবং ১৯৯৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সরিয়ে টেস্টে দখল করে নেয় বিশ্বের এক নম্বর আসন। শেন ওয়ার্নসহ অনেক তারকাই পরে বলেছিলেন—তাদের ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় প্রভাবক ছিলেন সিম্পসন। নিজে দুর্দান্ত স্লিপ ফিল্ডার ছিলেন বলে কোচ হিসেবেও তিনি ফিল্ডিং ও ফিটনেসকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতেন।
১৯৯৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার কোচের দায়িত্ব শেষে কাজ করেছেন ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে, ভারতের রঞ্জি ট্রফিতে রাজস্থান দলের হয়ে, এমনকি নেদারল্যান্ডসের কোচ হিসেবেও। তাঁর হাত ধরেই নেদারল্যান্ডস খেলেছিল ২০০৭ বিশ্বকাপে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে ভারতের পরামর্শকও ছিলেন তিনি।
১৯৭৮ সালে সিম্পসন পান অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়ার সদস্যপদ, ২০০৭ সালে সেটি উন্নীত হয় অফিসার অব দ্য অর্ডারে। ১৯৬৫ সালে হন উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটার, আছেন আইসিসি ও অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট হল অব ফেমেও।