বাড়তি দাম ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে বেড়েছে সব ধরনের পণ্যের দাম। এই বাড়তি চাপে মধ্যবিত্তদের নতুন আসবাব কেনা কিংবা বানানো সম্ভব হয়ে ওঠে না। সে জন্য অনেকেই ঝুঁকছে পুরোনো আসবাব কেনার দিকে। তাই এই চাহিদা পূরণে রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া–মহল্লায় বেশ কয়েকটি স্থানে গড়ে উঠেছে নানা ধরনের ছোট–বড় দোকান। রাজধানীজুড়ে পুরোনো আসবাবের বড় সাতটি বাজার রয়েছে, যেখানে অর্ধেক কিংবা তারও কম দামে পাওয়া যাচ্ছে নানা ধরনের আসবাব। তিন ভাগের এক ভাগ দামেই মেলে এই আসবাব।

এগুলো হচ্ছে বারিধারা জে ব্লক এলাকার বিসমিল্লাহ ফার্নিচার মার্কেট, খিলগাঁও রেলগেট, সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমির পাশে, মোহাম্মদপুরের টাউন হল মার্কেট, মীরবাগ, আজিমপুর ও পান্থপথ মসজিদের পূর্ব পাশে। এসব বাজারে পুরোনো আসবাবের ছোট–বড় ২৫০ থেকে ৩০০টি দোকান আছে।

ঢাকায় পুরোনো আসবাবের দোকানগুলোতে বাসাবাড়ির ব্যবহার্য চেয়ার, খাট, আলমারি, ওয়ার্ডরোব, খাবার টেবিল, সাজসজ্জার টেবিল, সোফা, শোকেস, পড়ার টেবিল, টিভি ট্রলি, ডিভান ইত্যাদি।

খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা ফরিদুজ্জামান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী। বারিধারার জে ব্লকের বিসমিল্লাহ মার্কেটে এসেছেন পুরোনো ডাইনিং টেবিল কিনতে। সম্প্রতি তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বারিধারার বিসমিল্লাহ মার্কেট থেকে মাসখানেক আগে ৫২ হাজার টাকায় এক সেট সোফা কিনেছিলাম। এখন একটা ভালো ডাইনিং টেবিল খুঁজছি। মনমতো পেলে বাসায় পুরোনো ডাইনিং টেবিল বিক্রি করে এখান থেকে আরেকটা কিনে নিয়ে যাব।’

এ ছাড়া মোহাম্মদপুরের শেখেরটেকের জনতা হাউজিং, উত্তরার মাসকট প্লাজার আশপাশ, কচুক্ষেত এবং মিরপুর ১, ২ ও ১৪ নম্বরসহ বিভিন্ন এলাকার অলিগলি মিলিয়ে আরও শতাধিক দোকান রয়েছে। বেশ কয়েকজন পুরোনো আসবাব ব্যবসায়ী ও এই খাতের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকায় বছরে কমবেশি ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকার বেশি পুরোনো আসবাব কেনাবেচা হয়ে থাকে।

পুরোনো অভিজাত আসবাব

ঢাকার বিভিন্ন পুরোনো আসবাবের বাজারে সব ধরনের আসবাব পাওয়া গেলেও বারিধারার জে ব্লকের ২০ নম্বর রোডের বিসমিল্লাহ ফার্নিচার মার্কেট ও নিউমার্কেটে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের অভিজাত আসবাব। এখানকার আসবাব পুরোনো হলেও কিছুটা অভিজাত বলাই যায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখানে সাধারণ আসবাবের পাশাপাশি বিভিন্ন এম্বাসি ও রাজধানীর অভিজাত এলাকাগুলো থেকে বিভিন্ন আসবাব ক্রয় করা হয়।

এই বাজারে খাট, ডাইনিং টেবিল ও সোফা বাদেও সাইড টেবিল, শু র‍্যাক, টিভি ক্যাবিনেট, রকিং চেয়ার (দোলানো চেয়ার), লকার, হ্যাঙ্গার স্ট্যান্ড, ট্রলি, ডিভান, সেন্টার টেবিল, কফি টেবিল, আর্মচেয়ার, ওটোমান (পা রাখার টুল), লাউঞ্জ চেয়ার, কনসোল টেবিল, বুকশেলফ, শোকেস, ড্রেসিং টেবিল, রিক্লাইনার চেয়ারসহ নানা ধরনের আসবাব পাওয়া যায়।

বারিধারার পুরোনো আসবাবের দোকানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে অফিস ও রেস্টুরেন্টের জন্য বিভিন্ন ধরনের পুরোনো আসবাব.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আসব ব ক ন আসব ব প র আসব ব আসব ব র ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে সোমবার বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামীকাল সোমবার হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। এতে ইউরোপের কয়েকজন নেতাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের বরাত নিউইয়র্ক টাইমস এই খবর জানিয়েছে।

গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠক করেন ট্রাম্প। প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে ইউক্রেন সংঘাত শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মধ্যে এটাই প্রথম বৈঠক। প্রায় তিন ঘণ্টার বৈঠককে ট্রাম্প “উষ্ণ” বলে বর্ণনা করেছেন। অন্যদিকে পুতিনের মতো বৈঠকে “খোলামেলা” ও “গঠনমূলক” আলোচনা হয়েছে।

ট্রাম্প ও পুতিনের প্রত্যাশা, তাঁদের এই বৈঠক ইউক্রেন সংঘাত সমাধানে অগ্রগতি আনতে পারবে।

বৈঠকের পরের দিন গতকাল শনিবার সূত্রের বরাতে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ট্রাম্প সোমবার জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বৈঠকে ‘ইউরোপীয় নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’ তবে ইউরোপের কোন কোন নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

শনিবার সকালে জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক্সে এক পোস্টে জানানা, সোমবার তিনি ওয়াশিংটনে যাবেন। পরে ট্রাম্পও তা নিশ্চিত করেছেন।

নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প সম্ভবত জেলেনস্কির কাছে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তির একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন। প্রস্তাবে ইউক্রেনের পূর্ব দিকের দনবাস অঞ্চলের যেসব এলাকা রাশিয়া বিল পাস করে নিজেদের বলে ঘোষণা করেছেন, কিয়েভকে তা মেনে নিতে হবে। এমনকি দনবাসের যেসব এলাকা এখনো ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে আছে, কিন্তু রাশিয়া নিজের বলে ঘোষণা করেছে, তা-ও মস্কোর বলে স্বীকার করে নিতে হবে।

প্রতিবেদনটি বলছে, ইউক্রেন এসব শর্ত মেনে নিলে অন্যান্য সীমান্তে চলমান সংঘাত বন্ধ করবে রাশিয়া।

কিন্তু এরই মধ্যে জেলেনস্কি বারবার বলেছেন, রাশিয়ার কাছে কোনো ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়া হবে না। হারানো সব ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করা হবে।

ট্রাম্প ও পুতিনের আলাস্কা বৈঠকের পর যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ফিনল্যান্ড, পোল্যান্ড এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। সেখানে তাঁরা ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও জেলেনস্কির সঙ্গে ইউরোপের সহযোগিতায় ত্রিপক্ষীয় শীর্ষ বৈঠকে বসার ব্যাপারে নিজেদের প্রস্তুতির’ কথা জানান।

আলাস্কা বৈঠকের পর ক্রেমলিনের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানিয়েছিলেন, পুতিন, ট্রাম্প এবং জেলেনস্কির সম্ভাব্য বৈঠক নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র এখনো আলোচনা করেনি।

গত বৃহস্পতিবার ফক্স বিজনেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছিলেন, ইউক্রেনের ইউরোপীয় সমর্থকদের “কাজ দেখাতে” না পারলে “চুপ থাকা” উচিত। ইউক্রেন সংঘাত বন্ধের সমাধান খোঁজে বের করতে চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এই পরিস্থিতিতে ওয়াশিংটনের কাছে ইউরোপের দাবি-দাওয়া হাজির করা বন্ধ করতে হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ