পুরোনো আসবাব কিনতে কোথায় যাবেন, দাম কত
Published: 2nd, July 2025 GMT
বাড়তি দাম ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে বেড়েছে সব ধরনের পণ্যের দাম। এই বাড়তি চাপে মধ্যবিত্তদের নতুন আসবাব কেনা কিংবা বানানো সম্ভব হয়ে ওঠে না। সে জন্য অনেকেই ঝুঁকছে পুরোনো আসবাব কেনার দিকে। তাই এই চাহিদা পূরণে রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া–মহল্লায় বেশ কয়েকটি স্থানে গড়ে উঠেছে নানা ধরনের ছোট–বড় দোকান। রাজধানীজুড়ে পুরোনো আসবাবের বড় সাতটি বাজার রয়েছে, যেখানে অর্ধেক কিংবা তারও কম দামে পাওয়া যাচ্ছে নানা ধরনের আসবাব। তিন ভাগের এক ভাগ দামেই মেলে এই আসবাব।
এগুলো হচ্ছে বারিধারা জে ব্লক এলাকার বিসমিল্লাহ ফার্নিচার মার্কেট, খিলগাঁও রেলগেট, সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমির পাশে, মোহাম্মদপুরের টাউন হল মার্কেট, মীরবাগ, আজিমপুর ও পান্থপথ মসজিদের পূর্ব পাশে। এসব বাজারে পুরোনো আসবাবের ছোট–বড় ২৫০ থেকে ৩০০টি দোকান আছে।
ঢাকায় পুরোনো আসবাবের দোকানগুলোতে বাসাবাড়ির ব্যবহার্য চেয়ার, খাট, আলমারি, ওয়ার্ডরোব, খাবার টেবিল, সাজসজ্জার টেবিল, সোফা, শোকেস, পড়ার টেবিল, টিভি ট্রলি, ডিভান ইত্যাদি।
খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা ফরিদুজ্জামান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী। বারিধারার জে ব্লকের বিসমিল্লাহ মার্কেটে এসেছেন পুরোনো ডাইনিং টেবিল কিনতে। সম্প্রতি তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বারিধারার বিসমিল্লাহ মার্কেট থেকে মাসখানেক আগে ৫২ হাজার টাকায় এক সেট সোফা কিনেছিলাম। এখন একটা ভালো ডাইনিং টেবিল খুঁজছি। মনমতো পেলে বাসায় পুরোনো ডাইনিং টেবিল বিক্রি করে এখান থেকে আরেকটা কিনে নিয়ে যাব।’
এ ছাড়া মোহাম্মদপুরের শেখেরটেকের জনতা হাউজিং, উত্তরার মাসকট প্লাজার আশপাশ, কচুক্ষেত এবং মিরপুর ১, ২ ও ১৪ নম্বরসহ বিভিন্ন এলাকার অলিগলি মিলিয়ে আরও শতাধিক দোকান রয়েছে। বেশ কয়েকজন পুরোনো আসবাব ব্যবসায়ী ও এই খাতের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকায় বছরে কমবেশি ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকার বেশি পুরোনো আসবাব কেনাবেচা হয়ে থাকে।
পুরোনো অভিজাত আসবাব
ঢাকার বিভিন্ন পুরোনো আসবাবের বাজারে সব ধরনের আসবাব পাওয়া গেলেও বারিধারার জে ব্লকের ২০ নম্বর রোডের বিসমিল্লাহ ফার্নিচার মার্কেট ও নিউমার্কেটে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের অভিজাত আসবাব। এখানকার আসবাব পুরোনো হলেও কিছুটা অভিজাত বলাই যায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখানে সাধারণ আসবাবের পাশাপাশি বিভিন্ন এম্বাসি ও রাজধানীর অভিজাত এলাকাগুলো থেকে বিভিন্ন আসবাব ক্রয় করা হয়।
এই বাজারে খাট, ডাইনিং টেবিল ও সোফা বাদেও সাইড টেবিল, শু র্যাক, টিভি ক্যাবিনেট, রকিং চেয়ার (দোলানো চেয়ার), লকার, হ্যাঙ্গার স্ট্যান্ড, ট্রলি, ডিভান, সেন্টার টেবিল, কফি টেবিল, আর্মচেয়ার, ওটোমান (পা রাখার টুল), লাউঞ্জ চেয়ার, কনসোল টেবিল, বুকশেলফ, শোকেস, ড্রেসিং টেবিল, রিক্লাইনার চেয়ারসহ নানা ধরনের আসবাব পাওয়া যায়।
বারিধারার পুরোনো আসবাবের দোকানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে অফিস ও রেস্টুরেন্টের জন্য বিভিন্ন ধরনের পুরোনো আসবাব.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আসব ব ক ন আসব ব প র আসব ব আসব ব র ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)