জুভেন্টাসকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে রিয়াল
Published: 2nd, July 2025 GMT
অপেক্ষাটা ছিল, রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে ক্লাব বিশ্বকাপে কিলিয়ান এমবাপ্পের অভিষেক। অবশেষে সেই দিন এলো ক্লাব বিশ্বকাপের মঞ্চে। যদিও কাঙ্ক্ষিত রূপকথার শুরু হয়নি। তবে রিয়ালের জয়রথ থামেনি। জুভেন্টাসকে ১-০ গোলে হারিয়ে জায়গা করে নিয়েছে কোয়ার্টার ফাইনালে।
সোমবার (০১ জুলাই) রাতে হার্ড রক স্টেডিয়ামে রিয়ালের জার্সিতে প্রথমবার মাঠে নামেন এমবাপ্পে, তবে বদলি হিসেবে। অসুস্থতার কারণে গ্রুপ পর্বে ছিলেন দর্শকসারিতে। আর সেই অনুপস্থিতিতেও দলের পারফরম্যান্সে কোনো ছন্দপতন ঘটেনি। এবার শেষ ষোলোয় ফিরেই ছুঁয়ে ফেললেন মাঠের ঘাস। মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গে গ্যালারির একাংশে দেখা যায় উচ্ছ্বাসের বিস্ফোরণ। কিন্তু এমবাপ্পে নিজে ছিলেন কিছুটা স্তিমিত।
অভিষেক ম্যাচে গোলের দেখা না পেলেও এই ম্যাচে নজর কাড়েন একাডেমি থেকে উঠে আসা তরুণ গনসালো গার্সিয়া। দ্বিতীয়ার্ধের ৫৪ মিনিটে ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আর্নল্ড এর বাড়ানো বল থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন এই তরুণ। এটি ছিল টুর্নামেন্টে তার তৃতীয় গোল। প্রতিভার জোরে নিজেকে বারবার প্রমাণ করে চলেছেন তিনি।
প্রথমার্ধে অবশ্য গোলের চেষ্টা জুভেন্টাসেরই বেশি চোখে পড়ে। কেনান ইলদিজ ও র্যান্ডাল কোলো মুয়ানি কয়েকটি সুযোগ তৈরি করেন। একটিতে বল অল্পের জন্য কোর্তোয়ার ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। পরেরটি লক্ষ্যে না থাকলেও সতর্ক করে দিয়েছিল রিয়ালকে। তবে ধীরে ধীরে ছন্দ খুঁজে পেতে থাকে জাবি আলোনসোর দল।
এই ম্যাচে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নাম মিচেল ডি গ্রেগরিও, জুভেন্টাসের গোলরক্ষক। একের পর এক দুর্দান্ত সেভ করে বড় হার এড়িয়েছেন। জুদ বেলিংহাম ও ফেদেরিকো ভালভের্দে দুজনই চেষ্টা করেছিলেন দূরপাল্লা থেকে। কিন্তু গ্রেগরিও ছিলেন অটল প্রাচীরের মতো।
এমবাপ্পে মাঠে নামলেও বল পেয়েছেন খুব কম। সতীর্থরা তাকে কাঙ্ক্ষিতভাবে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে বিশ্বকাপজয়ীর প্রথম ম্যাচ হয়ে থাকল কিছুটা অনুজ্জ্বল। কিন্তু দলীয় সাফল্যে তিনি নিশ্চিতভাবেই তৃপ্ত থাকবেন।
শেষ সময়ে ভালভের্দে একটি দৃষ্টিনন্দন বাইসাইকেল কিকে চেষ্টা করেছিলেন ব্যবধান বাড়াতে। কিন্তু আবারও গ্রেগরিওর দুর্দান্ত রিফ্লেক্স সেই চেষ্টা ভেস্তে দেন। তবে আক্রমণে ধারহীনতার কারণে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি জুভেন্টাস। তারা চেপে ধরার চেষ্টা করলেও গোলের মুখ খোলার মতো ধৈর্য ও ধার ছিল না শেষভাগে।
কোয়ার্টার ফাইনালে রিয়ালের প্রতিপক্ষ হতে পারে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড অথবা মন্টেরে। ফুটবলপ্রেমীদের চোখ এখন সেটির দিকেই।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাশিয়া খুব বড় শক্তি, যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনের চুক্তি করা উচিত: ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল শনিবার বলেছেন, ‘যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনের উচিত রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি করা। কারণ, রাশিয়া খুব বড় একটি শক্তি। তারা (ইউক্রেন) তা নয়।’
আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প এমন মন্তব্য করেন। শোনা যাচ্ছে, যুদ্ধ বন্ধের শর্ত হিসেবে বৈঠকে পুতিন ইউক্রেনের আরও ভূমি দাবি করেছেন।
স্থানীয় সময় গত শুক্রবার আলাস্কায় ট্রাম্প আর পুতিনের বৈঠকটি হয়। এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও কথা বলেন। ট্রাম্প জেলেনস্কিকে জানান, যদি কিয়েভের পক্ষ থেকে দোনেৎস্ক অঞ্চলের পুরোটা ছেড়ে দেওয়া হয়, তবে রাশিয়া বেশির ভাগ জায়গায় যুদ্ধ থামাবে—এমন শর্ত দিয়েছেন পুতিন।
আরও পড়ুনট্রাম্প–পুতিন বৈঠক নিয়ে ক্ষুব্ধ ইউক্রেনীয়রা, কিন্তু কেন১১ ঘণ্টা আগেএ বিষয়ে জানাশোনা আছে—এমন একটি সূত্র এ কথা নিশ্চিত করেছে। ইউক্রেনের শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত দোনেৎস্ক অনেক আগে থেকে পুতিনের অন্যতম লক্ষ্যবস্তু।
জেলেনস্কি এমন চাওয়া প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে জানায় ওই সূত্র। এরই মধ্যে ইউক্রেনের এক–পঞ্চমাংশ রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দোনেৎস্কের তিন ভাগ এলাকাও তার নিয়ন্ত্রণে। ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো এ অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে শুরু করে রুশ বাহিনী।
ইউক্রেন ও দেশটির ইউরোপীয় মিত্ররা এর আগে যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি চেয়েছিল, সেটা ছাড়াই একটি শান্তিচুক্তি সইয়ের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে পুতিনের সঙ্গে একমত হওয়ার কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুনট্রাম্প–পুতিন বৈঠক কি যুদ্ধ থামাতে পারবে, ইতিহাস কী বলছে১৭ ঘণ্টা আগেনিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, সবার পক্ষ থেকে এটা নির্ধারণ করা হয়েছে যে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলা ভয়াবহ যুদ্ধের অবসান ঘটানোর সর্বোত্তম উপায় সরাসরি শান্তিচুক্তিতে যাওয়া। এটা যুদ্ধ বন্ধ করবে। তবে এ চুক্তি নিছকই একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি নয়, যা প্রায়ই টেকে না।
এদিকে জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জানান, যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার সদিচ্ছা না থাকাটা স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলবে। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ বন্ধ করার একটি মূল উপাদান হত্যা বন্ধ করা।’ জেলেনস্কি জানান, আগামীকাল সোমবার তিনি ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে গিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করবেন।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ট্রাম্প–জেলেনস্কির সর্বশেষ বৈঠক হয়েছিল। বৈঠকে দুই নেতার তুমুল বাগ্বিতণ্ডা বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়। সেদিন জেলেনস্কির সঙ্গে তর্কে জড়ান যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সও।
এবার ট্রাম্প অবশ্য আশা প্রকাশ করেছেন, পুতিন আর জেলেনস্কিকে নিয়ে একসঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন তিনি।
আরও পড়ুনট্রাম্প-পুতিনের সংবাদ সম্মেলনে ‘সংবাদ সামান্যই’১৬ আগস্ট ২০২৫যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছে ইউক্রেনের ইউরোপীয় মিত্ররা। তারা ইউক্রেনের পাশে থাকার ও রাশিয়ার ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, আগামীকাল হোয়াইট হাউসের বৈঠকে জেলেনস্কির পাশাপাশি ইউরোপীয় নেতারাও থাকবেন।
তবে ইউরোপের কোন কোন নেতা হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ পেয়েছেন, সে বিষয়ে কারও পক্ষ থেকে এখনো নিশ্চিত করে কিছু জানানো হয়নি।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করে। বিশ্লেষকদের মতে, ইউরোপে গত ৮০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী যুদ্ধ এটা। উভয় পক্ষে ১০ লাখের বেশি মানুষ হতাহত হয়েছেন। এর মধ্যে ইউক্রেনের হাজারো বেসামরিক মানুষ রয়েছেন।
আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতির বিনিময়ে ভূখণ্ড হারানোর ভয়—ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক নিয়ে হতাশ ইউক্রেনীয়রা১৫ আগস্ট ২০২৫