নোয়াখালীতে টানা ভারী বর্ষণের ফলে পাঁচটি উপজেলায় জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। উপজেলাগুলো হলো- সদর, বেগমগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট ও সেনবাগ। এর মধ্যে বেশী জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে সদর, কোম্পানীগঞ্জ ও সেনবাগ। নোয়াখালীতে গত কয়েকদিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছে প্রায় ৪২ হাজার পরিবার।
শুক্রবার (১১ জুলাই) জেলা প্রশাসন সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সূত্রে আরো জানা যায়, জেলাতে মোট ৪৬৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২ লাখ ৩ হাজার ১০০ মানুষ। আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ৪০ ঘরবাড়ি। ৪০টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ১৫০০ মানুষের সাথে আশ্রয় নিয়েছে ২৪০টি গবাদি পশু।
সূত্র আরো জানায়, নোয়াখালী সদর, কবিরহাট ও সেনবাগ উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি। নোয়াখালী সদর উপজেলাতেই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা ৩০ হাজার। এছাড়া সেনবাগে ৩ হাজার ৮৭০, কবিরহাটে ৩ হাজার ৬৫০, কোম্পানীগঞ্জে ৩ হাজার ৫২০, সুবর্নচরে ৫০০ এবং হাতিয়ায় উপজেলায় ৩০০ পরিবার। জলাবদ্ধতায় আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪০টি ঘর।
জেলার ৫৭টি ইউনিয়নে অন্তত ২ লাখ ৩ হাজার মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৪২ হাজার। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গতদের জন্য ৫১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে, যার মধ্যে কাজ করছে ২৯টি।
জেলা শহর মাইজদীর বিভিন্ন সরকারী গুরুত্বপূর্ণ অফিস জলমগ্ন হয়ে আছে। এছাড়া পুরো শহরের সড়কগুলোতে এখনও পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানিতে তলিয়ের আছে শহরের একমাত্র বাজার নোয়াখালী পৌর বাজার। ফলে সড়কে বাজার বসানো হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা অকার্যকর। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পুরো পৌরবাসীকে।
একই সাথে কর্মজীবী মানুষ এবং যানবাহনের চালকসহ নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী এক প্রকার কাজকর্মহীন হয়ে আছে।
মধুসুদনপুর এলাকার বাসিন্দা রবিন বলেন, “গতকাল সন্ধ্যার পর আজ সকাল পর্যন্ত তেমন বৃষ্টি হয়নি। সকালে একটু রোদের মুখ দেখা দিয়েছিলো। কিন্তু বেলা বাড়ার সাথে সাথে মেঘের খেলা শুরু হয়েছে। ফলে আবার বৃষ্টির শংকা দেখা দিচ্ছে। গতবারের বন্যার কঠিন স্মৃতি এখনো দাগ কাটছে না।”
হরিনারায়ণপুর এলাকার একরামুল হক বলেন, “রাস্তাঘাট ও বিভিন্ন বাসাবাড়ির আঙিনায় পানি জমে আছে। পানি নামছে না। এ কারণে আমাদের দুর্ভোগও কমেনি। পানি নিষ্কাশনের কোনো পথ নেই। সব নালা, ড্রেন, জলাশয় ও পুকুর ভরাট।”
ওসমান নামে একজন সিএনজি অটো রিকশা চালক বলেন, “পানিতে ডুবে থাকা রাস্তায় চলতে গিয়ে আমাদের সমস্যার হচ্ছে। গর্তে গাড়ি আটকে ও ইঞ্জিনে পানি ঢুকে গাড়ি অকেজো হয়ে যাচ্ছে।”
ইকবাল হোসেন নামে আরেকজন বলেন, “ড্রেনেজ অব্যবস্থাপনার কারণে পানি ধীর গতিতে নামছে। এ কারণে বৃষ্টি কমলেও শহরের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ কমেনি। মাইজদীসহ আশপাশের বিভিন্ন নিচু এলাকার বেশির ভাগ রাস্তাঘাট এখনো পানির নিচে। সকালে একটু রোদের দেখা মিলেছিল কিন্তু বেলা বাড়ার সাথে সাথে বৃষ্টির সম্ভবনা দেখা যাচ্ছে। আবার যদি বর্ষণ হয়, তাহলে গতবারের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।”
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, “টানা বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি বেড়েছে। আমরা দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য চেষ্টা করছি। জলাবদ্ধতা দূর করতে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পানি চলাচলের পথগুলো সচল করে দিচ্ছে। বৃষ্টি না হলে জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”
ঢাকা/সুজন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র ত হয় ছ স নব গ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।
দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।
ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।
৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।
ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট