জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটিতে পদ পেয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) দুই নেতা। এর মধ্যে খুলনা মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক সদস্য সচিব মোল্লা শওকত হোসেন বাবুলকে পদযাত্রা বাস্তবায়ন কমিটির উপদেষ্টা এবং জেলার সাবেক সদস্য সচিব মাসুদুর রহমানকে প্রচার সেলের সদস্য করা হয়েছে। মোল্লা বাবুল পদযাত্রা বাস্তবায়নে অর্থায়নও করেছেন। বিষয়টি নিয়ে বিব্রত এনসিপির অনেক সংগঠক।

খুলনা মহানগরে জাপার রওশন এরশাদপন্থি অংশের আহ্বায়ক ছিলেন গফফার বিশ্বাস, সদস্য সচিব ছিলেন শওকত হোসেন বাবুল। জেলা কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন মোক্তার হোসেন, সদস্য সচিব ছিলেন মাসুদুর রহমান। পার্টির এই অংশটি আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যে মাসুদুর রহমান দীর্ঘদিন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে আদালতে দায়িত্ব পালন করেন। গত ১২ এপ্রিল খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তারা দল থেকে পদত্যাগ করেন।

জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার খুলনায় আসছেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। কর্মসূচি সফল করতে গত ৭ জুলাই বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করে জেলা এনসিপি। কমিটিতে উপদেষ্টা হিসেবে সাবেক বিএনপি নেতা আরিফুর রহমান মিঠু এবং শওকত হোসেন বাবুলের নাম প্রকাশ করা হয়। জুলাইয়ের শুরু থেকে মিঠুকে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নিতে দেখা গেছে। বাবুলকে কোনো কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। 

২ জুন রংপুরে এক কর্মসূচিতে জাপা নিষিদ্ধের দাবি জানান এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। লেবার পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, জুলাই ঐক্যসহ একাধিক দল জাপাকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ দাবি করে তাদের নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানাচ্ছে। এ অবস্থায় জাপা নেতাদের বাস্তবায়ন কমিটিতে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী মাহমুদুল হাসান ফয়জুল্লাহ কোনো মন্তব্য করেননি। পদযাত্রা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ডা.

আবদুল্লাহ চৌধুরী এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।

এনসিপির কয়েক সংগঠক জানান, অল্প কয়েকজন এনসিপিকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। মূলত তারাই বিতর্কিতদের কমিটিতে আনছে। তাদের কারও নাম প্রকাশ করেননি তারা। এনসিপির খুলনা মহানগর সংগঠক হামীম রাহাত বলেন, বিতর্কিত কাউকে যুক্ত করার বিষয়টি দুঃখজনক। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদের জানানো হবে।

এনসিপিতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে শওকত হোসেন বাবুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গণহত্যাকারী দল, জাতীয় পার্টি সহায়তাকারী। এ জন্য পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছি। এনসিপির কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটিতে আমাকে রাখলেও যোগ দেওয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আন্দোলনের শুরু থেকে আমার ভূমিকা ছাত্রদের পক্ষে ছিল। এনসিপির কর্মসূচি ভালো লাগে, তাই সঙ্গে থাকার চেষ্টা করছি।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প শওকত হ স ন ব ব ল ম স দ র রহম ন এনস প র ক পদয ত র স গঠক

এছাড়াও পড়ুন:

শিল্পকলায় নোবেল জয়ী নাট্যকারের ‘ডিজায়ার আন্ডার দ্য এলমস’

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চস্থ হবে সাহিত্যে নোবেল জয়ী মার্কিন নাট্যকার ইউজীন ও নীলের রচিত বিখ্যাত নাটক ‘ডিজায়ার আন্ডার দ্য এলমস’। নাটকটি প্রযোজনা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নাট্যকলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) ও রবিবার (২৬ অক্টোবর) এই দুইদিন টিকিটের বিনিময়ে সন্ধ্যা ৭টায় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে নাটকটি প্রদর্শিত হবে।

আরো পড়ুন:

রেজোয়ানের ভাসমান স্কুলের ইউনেস্কোর পুরস্কার অর্জন

ববির ৪ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

নাটকটি অনুবাদ করেছেন কবীর চৌধুরী। পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় রয়েছেন নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুবাইয়া জাবীন প্রিয়তা।

নাটকের বিখ্যাত এফরায়েম ক্যাবট চরিত্রে অভিনয় করা শিক্ষার্থী তাকরিম আহমেদ বলেন, “চরিত্রটি আমার কাছে সাধারণ কোনো চরিত্র নয়, বরং একটি প্রজন্মের প্রতীক। মঞ্চে তার নিঃসঙ্গতা অনুভব করা সহজ ছিল না। জমি মানেই তার জীবন, কিন্তু সেই বিশ্বাসই শেষ পর্যন্ত তার কবর। বাইরে দৃঢ়, ভেতরে অসহায়, এই দ্বৈততাই নাটকের ব্যথা। ক্যাবটের মতো মানুষ আজো আছে, যারা ভালোবাসতে চায়, কিন্তু তা প্রকাশ করতে পারে না। আশা করি, নাটকটি সবার ভালো লাগবে।”

অ্যাবেন চরিত্রে অভিনয় করা মনন মোস্তাকিন বলেন, “অ্যাবেন এমন এক ছেলে, যে ছোটবেলা থেকে মায়ের স্নেহ পায়নি। আর বাবার ওপর প্রচণ্ড রাগ জমে আছে। সেই রাগ আর ভালোবাসা দুইটাই তার মধ্যে লড়াই করে। এই দোটানার জায়গাটা মঞ্চে প্রকাশ করতে চেষ্টা করেছি।”

অ্যাবি চরিত্রে অভিনয় করা শিক্ষার্থী রোকসানা আক্তার সায়মা বলেন, “অ্যাবি আসলে ভালোবাসা পেতে চায়। কিন্তু সমাজ তাকে সেই সুযোগ দেয় না। তাই সে যেমন ভালোবাসে, তেমন ভয়ও পায়। তার ভেতরে দোষ আর মায়া একসঙ্গে কাজ করে। আমি অভিনয়ের সময় চেষ্টা করেছি, যেন দর্শক ওর কষ্টটা বুঝতে পারে। অত্যন্ত সুন্দর ও বিখ্যাত এ নাটকটি দেখতে চলে আসুন শিল্পকলা একাডেমিতে।”

নাটকটির নির্দেশক জবি নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুবাইয়া জাবীন প্রিয়তা বলেন, “নোবেলজয়ী বিখ্যাত নাট্যকার ইউজিন ও নীল-এর এ নাটকটি শুধু এক পারিবারিক সংঘাতের গল্প নয়। এটি মানুষের গভীরতম আকাঙ্ক্ষা, অপরাধবোধ ও মুক্তির তীব্র অনুসন্ধানের নাটক। এই নাটকে যে মানুষদের দেখি— তারা সবাই ভালোবাসা খোঁজে। কিন্তু তাদের ভালোবাসা মিশে থাকে অধিকার, ঈর্ষা ও দোষবোধের সঙ্গে। সেই মিশ্র অনুভূতিই এই নাটকের মূলে থাকা ইচ্ছা বা ডিজায়ারকে জটিল করে তোলে। এই নাটকের পটভূমি সম্পূর্ণ আমেরিকান।”

তিনি আরো বলেন, “এই প্রযোজনার মাধ্যমে আমি দর্শকদের সামনে একটি আবেদন রাখতে চেয়েছি- মানুষ কি কখনো তার ইচ্ছার ঊর্ধ্বে উঠতে পারে নাকি প্রতিটি ইচ্ছাই শেষ পর্যন্ত তাকে তার নিজের তৈরি কারাগারে বন্দি করে ফেলে? আমার অভিনেতারা, আলো-সংগীত-ডিজাইনের সহকর্মীরা সবাই এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে একসঙ্গে ভ্রমণ শুরু করেছে। এই ভ্রমণই আমাদের আসল প্রাপ্তি। দর্শক যদি সেই ভ্রমণে সামান্য সময়ের জন্যও আমাদের সঙ্গে অংশ নেন, তবেই আমাদের প্রয়াস সার্থক হবে।”

এছাড়া নাটকে অভিনয় করেছেন নাট্যকলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাকরিম, মোস্তাকিন, সায়মা, শোভন, খুশি, মিঠুন, জ্যা চাকমা, অর্থি, পলক, রিভা, ইসরাত, সুরুজ ও তুলি।

আবহ সংগীতে আছেন নওমী, শোভন, পলক ও সুরুজ, মঞ্চ নির্মাণে নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী স্পর্শ ও টনি, আলোক প্রক্ষেপণে আছেন খন্দকার রাকিবুল হক ও রাজিন, নাটকের পোস্টার বানিয়েছেন সাদিয়া নিশা এবং প্রকাশনায় ছিলেন মুগ্ধ আনন।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ