মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের পাশে এক নারীর লাশ পড়ে আছে। আজ শনিবার সকালে উপজেলার রামের খোলা এলাকার উড়ালসড়কের নিচে লাশটি পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয় লোকজন।

লাশের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন সিরাজদিখান সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ বিল্লাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আজ সকাল আটটার দিকে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। পরে সেখানে যাই। লাশটি কয়েক দিন আগের। লাশের গায়ে পচন ধরেছে। লাশের পরিচয় শনাক্তের জন্য চেষ্টা চলছে। লাশ এখনো এক্সপ্রেসওয়ের পাশে পড়ে আছে। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত উদ্‌ঘাটনের জন্য বিশেষজ্ঞ দল ডাকা হয়েছে।’

সিরাজদিখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো.

নোমান সিদ্দিকি বলেন, ‘স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পাওয়ার পর লাশ উদ্ধারের কাজ চলছে। অজ্ঞাতপরিচয় ওই নারীর বয়স আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ বছর হবে। ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা কয়েক দিন আগে ওই নারীকে হত্যা করে এখানে ফেলে গেছে। লাশের পরিচয় শনাক্তে পিবিআইয়ের সহায়তা নেওয়া হবে।’

এর আগে গত ৩০ নভেম্বর মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় এক্সপ্রেসওয়েতে ২২ বছর বয়সী এক তরুণীর গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে ছিল। এ ঘটনা তদন্তের চার দিনের মাথায় জানা যায়, ওই তরুণীকে তাঁর প্রেমিক তৌহিদ শেখ ওরফে তন্ময় (২৩) থানা থেকে লুট করা অস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করেছেন।

আরও পড়ুনমুন্সিগঞ্জে এক্সপ্রেসওয়ের পাশে পড়ে আছে নারীর গুলিবিদ্ধ লাশ৩০ নভেম্বর ২০২৪

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আশ্বাসেও ভরসা নেই ক্রিকেটারদের!

‘‘ক্রিকেটাররা অনেকটা... (আশ্বস্ত হয়েছেন টাকা পাওয়ার ব্যাপারে)। কালকে তারা অনুশীলনেও যাবেন। এর চেয়ে ইতিবাচক আর কী হতে পারে। হোপফুলি কালকে পাবেন টাকা। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা হয়েছে। এজন্যই ইতিবাচক ভাইব আছে বলেই আমি আপনাদের সামনে কথা বলতে এসেছি।’’

দুর্বার রাজশাহীর খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক জটিলতা নিয়ে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে কথাগুলো বলছিলেন বিসিবির পরিচালক মনজুর আলম। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের মুখপাত্র হিসেবে তিনি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন। 

মনজুর আলম যখন কথাগুলো বলছিলেন, তখন হোটেলে থাকা ক্রিকেটাররা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না বৃহস্পতিবারও তারা বিপিএলের পারিশ্রমিক পাবেন কি না। একাধিক ক্রিকেটারের সঙ্গে কথা বলে রাইজিংবিডি নিশ্চিত হয়েছে, পারিশ্রমিক দেওয়ার যে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তাতেও বিশ্বাস হচ্ছে না তাদের।  

আরো পড়ুন:

তীরে এসে ডুবলো খুলনা, রংপুরের রোমাঞ্চকর জয়

খুশদীল ঝড়ে রংপুরের স্কোরবোর্ডে ‘হাসি’

দুর্বার রাজশাহীর ক্রিকেটাররা পারিশ্রমিক না পাওয়ায় বুধবারের অনুশীলন বাতিল করে সারাদিন হোটেলে কাটিয়েছেন। তাদের অনেককেই চেক দেওয়া হলে, তা বাউন্স হয়ে ফেরত আসায় ‘প্রতারিত’ অনুভব করছেন ক্রিকেটাররা। শুধু পারিশ্রমিকই নয়, খেলোয়াড়রা দৈনিক ভাতাও পাচ্ছেন না ১০ দিন। 

পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছে, খেলোয়াড়রা শুক্রবারের ম্যাচ বয়কটেরও হুমকি দিয়েছে। এমন উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে উড়ে আসেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। সন্ধ্যায় দুর্বার রাজশাহীর মালিক, অফিসিয়ালদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। যেখানে উপস্থিত ছিলেন একাধিক ক্রিকেটার। 

ক্রিকেটাররা সভাপতিকে সাফ জানান, পারিশ্রমিক ছাড়া তারা মাঠে নামবেন না। সভাপতি এরপর মালিকের সঙ্গে একান্তে কথা বলে ক্রিকেটারদের আশ্বস্ত করেন, বৃহস্পতিবারই পারিশ্রমিক পেয়ে যাবেন। কিন্তু তাতেও মন গলেনি ক্রিকেটারদের। অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় দলের সঙ্গে নেই। কাল যোগ দেবেন। সেখানে এক সিনিয়র ক্রিকেটার পরিস্থিতি সামলে আগামীকাল সকাল ১০টায় অনুশীলনে ফিরতে সম্মতি দিয়েছেন। কিন্তু আগামীকালও টাকা না পেলে শুক্রবার ম্যাচ খেলবেন কি না, সেই নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি। 

বিসিবি পরিচালক মনজুর আলমের কথায় সেই ইঙ্গিত পাওয়া গেল, ‘‘আশা করছি কালকের মধ্যে আমরা একটা সুন্দর সমাধানে আসতে পারব। এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট মহোদয় চেষ্টা করছেন টিম অফিসিয়াল, টিম মালিক ও ক্রিকেটারদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে একটা সমঝোতার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে আসতে। সমঝোতা এখনও প্রক্রিয়াধীন। আশা করি কালকের মধ্যে একটা ভালো ফল আসবে। অধিনায়ক ও আরো কয়েকজনের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট মহোদয় কথা বলেছেন। আমার মনে হয়, সেটিও ভালো সমাধানের পথে।’’

ফারুক আহমেদ সশরীরে চট্টগ্রামে হাজির হলেও দুর্বার রাজশাহীর মালিক শফিক রহমান ছিলেন না। তিনি দেশের বাইরে আছে। কাল ফিরবেন বলে খবর। রাজশাহীর খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিকের ইস্যুটি সভাপতি নিজ থেকে তদারকি করবেন, বলেছেন মনজুর আলম। 

‘‘প্রায় সমাধান হয়ে গেছে বলা যায়। কালকে মালিক এলে প্রেসিডেন্ট কথা বলে বাকিটা সমাধান হয়ে যাবে। প্রেসিডেন্ট মহোদয় নিজের এখতিয়ারে রেখেছেন। কালকে সমাধানের পর সেটি আরও বিস্তারিত ব্রিফ করবেন তিনি।’’

খেলোয়াড়দের ম্যাচ বয়কটের বিষয়ে বিসিবির পরিচালকের দাবি, ‘‘কারও পক্ষ থেকে নেতিবাচক কোনো (ম্যাচ বয়কট) এটিটিউড আমরা দেখতে পাইনি।’’ 

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ৩ কোটি টাকা ব্যাংক গ্যারান্টি নেওয়ার কথা ছিল বিসিবির। শুরুতে যা ছিল সাড়ে ৮ কোটি টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও তা কমিয়ে দেওয়া হয়। তাতেও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। অনেকগুলো দল ব্যাংক গ্যারান্টি ছাড়াই মাঠে নেমেছে। যাদের মধ্যে রয়েছে দুর্বার রাজশাহী।   

বোর্ড ছাড় দেওয়া এমনটা হয়েছে। বোর্ড বর্তমান পরিস্থিতিতে বিব্রত তা বলতে দ্বিধা করলেন না মনজুর আলম, ‘‘আসলে একটু বিব্রতকর।’’

অনিয়ম, অগোছালো আয়োজন মিলিয়ে বিপিএল। সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ দায়িত্ব পাওয়ার পর সেই আয়োজন পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো আশ্বাসেই কাজ হচ্ছে না। বিপিএল এখনও অপরিবর্তিত। 

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ