ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে বড় হার কত রানের, দলটির সর্বনিম্ন স্কোরই বা কত—এ সব নিয়ে গবেষণা শুরু হয়ে গিয়েছিল! ২৯১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে কোনো দল ২১ রানে ৫ উইকেট হারালে সেটিই হওয়ার কথা। অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে আজ শেষ পর্যন্ত রেকর্ড হয়নি। সিরিজের শেষ ম্যাচে ১৫০ রানে অলআউট হয়ে নিউজিল্যান্ড হেরেছে ১৪০ রানে। ওয়ানডেতে এর চেয়েও বেশি রানে ১৭টি ম্যাচ হেরেছে কিউইরা। তবে শ্রীলঙ্কার কাছে এর চেয়ে বেশি ব্যবধানে মাত্র একবারই হেরেছে দলটি।

১৮৯ রানের সেই হারটি ২০০৭ সালে এই অকল্যান্ডেই। সে দিন সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে ২৬২ রান তাড়া করতে নেমে ৭৩ রানে অলআউট হয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ওয়ানডেতে যেটি তাঁদের ঘরের মাঠে সর্বনিম্ন ও সব মিলিয়ে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর।

প্রথম দুই ম্যাচ জিতেই নিউজিল্যান্ড সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ফেলেছিল। তাই আজকের ম্যাচটি ছিল দলটির জন্য নিছকই আনুষ্ঠানিকতার। সেই ম্যাচে লজ্জার হাত থেকে বাঁচায় নিউজিল্যান্ড নিশ্চিত মার্ক চ্যাপম্যানকে ধন্যবাদ দিয়েছে। নিউজিল্যান্ডের ১৫০ রানের মধ্যে ৮১-তো করেছেন ওয়ানডাউনে নামা এই ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার উইল ইয়াংয়ের বিদায়ের পর উইকেটে যাওয়া চ্যাপম্যান ফিরেছেন শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ৩০তম ওভারে। মহীশ তিকশানার তৃতীয় শিকার হওয়ার আগে ১০ চার ও ১ ছক্কায় সাজিয়েছেন ৮১ বলের ইনিংসটিকে। নিউজিল্যান্ডের জার্সিতে এটি তাঁর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস।

চ্যাপম্যান ছাড়া নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিংক্রমের প্রথম ছয়ের বাকি পাঁচজন মিলে করেছেন মোটে ৩ রান! ওপেনার ইয়াং, উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান টম ল্যাথাম ও অলরাউন্ডার গ্লেন ফিলিপস ফেরেন শূন্য রানে। আরেক ওপেনার রাচিন রবীন্দ্র ১ ও চারে নামা ড্যারিল মিচেল করেছেন ২ রান।

সাতে নামা মাইকেল ব্রেসওয়েল যখন ফিরলেন নিউজিল্যান্ডের স্কোর ৪৮/৬। চ্যাপম্যান এরপর অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনারকে নিয়ে সপ্তম উইকেটে যোগ করেন ২৯ রান। যে জুটিতে স্যান্টনারের অবদান মাত্র ২ রান। স্যান্টনারের বিদায়ের পর নাথান স্মিথকে নিয়ে ৫১ রানের জুটি গড়েন চ্যাপম্যান। ১৭ রান করা স্মিথের পর নামা ম্যাচ হেনরি ৬ বলে করেন ১২ রান।

শ্রীলঙ্কার তিন বোলার আসিতা ফার্নান্ডো, মহীশ তিকশানা ও ঈশান মালিঙ্গা ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন। তবে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ৫ উইকেটের ৩টিই তুলে নেওয়া পেসার আসিতার হাতেই উঠেছে ম্যাচসেরার পুরস্কার।

এর আগে ৮ উইকেটে ২৯০ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। ৪২ বলে সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেছেন পাতুম নিশাঙ্কা। ৫টি ছক্কা ও ৬টি চার মেরেছেন এই ওপেনার। এ ছাড়া ফিফটি পেয়েছেন কুশল মেন্ডিস (৪৮ বলে ৫৪) ও জানিত লিয়ানাগে (৫২ বলে ৫৩)। ৪ রানের জন্য ফিফটি পাননি কামিন্দু মেন্ডিস।

নিউজিল্যান্ডের পেসার ম্যাট হেনরি ৫৫ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। তিন ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে সিরিজসেরা হেনরি।

সংক্ষিপ্ত স্কোরশ্রীলঙ্কা: ৫০ ওভারে ২৯০/৮ (নিশাঙ্কা ৬৬, কুশল মেন্ডিস ৫৪, লিয়ানাগে ৫৩, কামিন্ডু মেন্ডিস ৪৬; হেনরি ৪/৫৫, স্যান্টনার ২/৫৫)।
নিউজিল্যান্ড: ২৯.

৪ ওভারে ১৫০ (চ্যাপম্যান ৮১, স্মিথ ১৭; আসিতা ৩/২৬, তিকশানা ৩/৩৫, মালিঙ্গা ৩/৩৫)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ১৪০ রানে জয়ী।
সিরিজ: ৩-ম্যাচ সিরিজে নিউজিল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আসিতা ফার্নান্ডো
ম্যান অব দ্য সিরিজ: ম্যাট হেনরি।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

২০৭ রানে শেষ অস্ট্রেলিয়া, জয়ের জন্য প্রোটিয়াদের লক্ষ্য ২৮২

লর্ডসে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের তৃতীয় দিনেই জমে উঠেছে খেলা। দ্বিতীয় ইনিংসে অ্যালেক্স ক্যারি ও মিচেল স্টার্কের দৃঢ়তায় ২০৭ রান তুলেছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে ৭৪ রানের লিড থাকায় দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ২৮২ রান।

ম্যাচে বল হাতে ঝলক দেখিয়েছেন কাগিসো রাবাদা। প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও নেন চারটি। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৯ উইকেট তুলে নেন এই প্রোটিয়া গতিতারকা। অস্ট্রেলিয়ার শেষ ব্যাটার হিসেবে অপরাজিত ছিলেন মিচেল স্টার্ক, খেলেছেন ৫৮ রানের কার্যকরী ইনিংস।

প্রথম ইনিংসে ২১২ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। স্টিভ স্মিথ ও বেউ ওয়েবস্টার ছাড়া কেউই উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারেননি। জবাবে কামিন্সের আগুনে পেসে ১৩৮ রানেই অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

দ্বিতীয় ইনিংসে ফের ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। ৭৩ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারায় তারা। একে একে ব্যর্থ হন উসমান খাজা (৬), ক্যামেরুন গ্রিন (০), ট্র্যাভিস হেড (৯), স্টিভ স্মিথ (১৩) ও কামিন্স (৬)। সেখান থেকে দলের হাল ধরেন অ্যালেক্স ক্যারি ও মিচেল স্টার্ক। অষ্টম উইকেটে দুজন গড়েন ৬১ রানের জুটি। ক্যারি করেন ৪৩ রান, স্টার্ক তুলে নেন ফিফটি।

শেষ উইকেটে জশ হ্যাজলউডকে নিয়ে আরও একবার প্রতিরোধ গড়েন স্টার্ক। দুইজন মিলে ৫৯ রানের জুটি গড়ে দলকে নিয়ে যান ২০০ পেরিয়ে। শেষ পর্যন্ত হ্যাজলউডকে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে অলআউট করেন এইডেন মার্করাম।

এখন প্রোটিয়াদের সামনে সুযোগ ইতিহাস গড়ার। প্রথমবারের মতো টেস্ট বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে তাদের প্রয়োজন ২৮২ রান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অজিদের হারিয়ে টেস্টের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা 
  • ২৮২ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে দ. আফ্রিকা
  • ২০৭ রানে শেষ অস্ট্রেলিয়া, জয়ের জন্য প্রোটিয়াদের লক্ষ্য ২৮২