ডেসটিনির এমডিসহ ১৯ জনের ১২ বছর করে কারাদণ্ড
Published: 15th, January 2025 GMT
ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের গাছ বিক্রির টাকা আত্মসাতের মামলায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনসহ ১৯ জনকে ১২ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলমের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
বিস্তারিত আসছে…
ঢাকা/মামুন/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মহাকাশে কি প্রাণী আছে, প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তৈরি হচ্ছে বিশাল টেলিস্কোপ
জাপান ও ভারত মিলে একসঙ্গে পৃথিবীর অন্যতম বড় টেলিস্কোপ তৈরি করতে যাচ্ছে। নাম দিয়েছে থার্টি মিটার টেলিস্কোপ (টিএমটি)। এই অত্যাধুনিক টেলিস্কোপটির আয়না হবে ৩০ মিটার লম্বা। এটি মহাবিশ্বকে বোঝার ক্ষেত্রে বিপ্লব আনবে এবং মানুষের সবচেয়ে বড় প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সাহায্য করতে পারে—মহাকাশে কি আমরা একা?
টিএমটি প্রকল্পে ভারত, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বড় বিশ্ববিদ্যালয় একসঙ্গে কাজ করছে। তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো মহাকাশের অনেক গভীরে দেখা কৃষ্ণগহ্বর (ব্ল্যাকহোল) এবং দূরের ছায়াপথ (গ্যালাক্সি) নিয়ে গবেষণা করা। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে পৃথিবীর বাইরে জীবনের অস্তিত্ব খোঁজা।
জাপানের জাতীয় মহাকাশনীতি কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সাকু সুনেতা বলেন, ‘জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা চান আরও বড় আয়না, যাতে দূরের মহাবিশ্ব থেকে বেশি আলো সংগ্রহ করা যায়। আয়না যত বড় হবে, তত দূরের জিনিস আবিষ্কার করা সহজ হবে।’
কেন এত বড় টেলিস্কোপ
টিএমটির ৩০ মিটার আয়না বর্তমানে বিশ্বে বিদ্যমান সব টেলিস্কোপের চেয়ে অনেক বড় হবে, ফলে ছবি অনেক স্পষ্ট দেখা যাবে। মজার বিষয় হলো, এই টেলিস্কোপে একটি মাত্র বড় আয়না নেই। এর বিশাল প্রাথমিক আয়নাটি তৈরি হবে ৫০০টি ছোট ছোট আয়না দিয়ে, যা নিখুঁতভাবে বসানো থাকবে।
সুনেতা জানান, ‘একটি বড় আয়নার বদলে আমাদের ৫০০টি ছোট আয়না আছে, যা একসঙ্গে একটি ৩০ মিটার প্রাথমিক আয়না তৈরি করে। প্রতিটি আয়নার স্থান ও কোণ সাবধানে ঠিক করে বসাতে হয়। এই কাজটি ভারতীয় প্রযুক্তির মাধ্যমে করা হয়েছে।’
এসব আয়না যেন একেবারে ঠিকঠাকভাবে বসানো থাকে, সে জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি তৈরি করছে ভারত।
ভারত এই প্রকল্পের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ২০১৪ সালে এতে দেশটির অংশগ্রহণের অনুমোদন দেয়। দেশটির তিনটি প্রতিষ্ঠান এই কাজে যুক্ত—বেঙ্গালুরুর আইআইএ, পুনের আইইউসিএএ এবং নৈনিতালের এআরআইইএস।
টিএমটি কোথায় তৈরি হবে
টেলিস্কোপটি তৈরি হবে হাওয়াইয়ের মাউনা কেয়া পাহাড়ে, যা প্রায় ৪ হাজার মিটার (প্রায় ১৩ হাজার ফুট) উঁচুতে অবস্থিত। এখানকার আকাশ খুব পরিষ্কার, তাই পর্যবেক্ষণের জন্য এটি সেরা জায়গা।
সুনেতা বলেন, ‘আমাদের নির্মাণের প্রধান স্থান হলো হাওয়াইয়ের মাউনা কেয়া। জ্যোতির্বিজ্ঞান পর্যবেক্ষণের জন্য এটি সেরা জায়গাগুলোর মধ্যে অন্যতম।’
তবে একটি সমস্যা আছে। হাওয়াইয়ের স্থানীয় বাসিন্দারা মাউনা কেয়াকে পবিত্র মনে করেন, তাই নির্মাণের বিরুদ্ধে সেখানে প্রতিবাদ হচ্ছে। তাদের সাংস্কৃতিক বিষয়গুলো মাথায় রেখে আলোচনা চলছে।
তবে ভারতেও বিকল্প স্থান নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যেমন লাদাখের হানলে। সেখানে আগে থেকেই একটি উঁচু মানমন্দির আছে। অবশ্য বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
টিএমটি কী খুঁজবে
টেলিস্কোপটির কাজের তালিকা বেশ বড়। এটি কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে গবেষণা করবে, দূরের ছায়াপথ দেখবে এবং মহাবিশ্বের শুরুর দিককার অবস্থা জানবে। কিন্তু সবচেয়ে রোমাঞ্চকর কাজ হলো পৃথিবীর বাইরে জীবনের অস্তিত্ব খুঁজে দেখা।
সুনেতা বলেন, এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হলো, পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে জীবনের সন্ধান করা। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, পৃথিবী থেকে দূরে অন্য কোথাও জীবন আছে। এই টেলিস্কোপ আমাদের সূর্য নয়, এমন অন্যান্য নক্ষত্রের গ্রহগুলোতে জীবনের চিহ্ন খুঁজে বের করতে সহায়তা করবে।
সুনেতা আরও বলেন, ‘এর অর্থ হলো, এই টেলিস্কোপ আমাদের সৌরজগতের বাইরের গ্রহগুলো (বহির্গ্রহ বা এক্সোপ্ল্যানেট) বিশ্লেষণ করবে। সেখানে জলীয়বাষ্প বা জীবনের ইঙ্গিত দেওয়া অন্যান্য রাসায়নিক উপাদান থাকলে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে।’
কখন চালু হবে
টিএমটি ২০৩০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পৃথিবীর বাইরে যদি জীবন খুঁজে পাওয়া যায়, তবে তা হবে সর্বকালের সেরা বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার। কথোপকথনের সময় রসিকতা করে একজন সুনেতাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘যদি এটি পান, তবে আপনি নোবেল পুরস্কার পাবেন।’
ড. সুনেতা হেসে উত্তর দেন, ‘আমি এখন অনেক বয়স্ক। আমার নয়, তরুণদের নোবেল পুরস্কার পাওয়া উচিত। তবে অবশ্যই পুরো দল পুরস্কার পাবে।’
জাপান ও ভারত মহাকাশবিজ্ঞানে দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে কাজ করছে। তারা লুপেক্স মিশনের মাধ্যমে চাঁদে পানির সন্ধান করছে। আর এখন টিএমটির মাধ্যমে তারা নক্ষত্রের মধ্যে জীবন খুঁজবে।