বদহজম-গ্যাসের সমস্যা কিছুতেই কমছে না?
Published: 15th, January 2025 GMT
অনেকেরই গ্যাস, অ্যাসিডিটির সমস্যা রয়েছে। অনেক সময় এই সমস্যা থেকে মাথাব্যথাও হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকস্থলী ও মস্তিষ্কের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সিস্টেমের সমস্যার কারণে অনেকেই মাথা ব্যথায় ভোগেন। পেটের সমস্যা আমাদের দৈনন্দিন রুটিনে ব্যাঘাত ঘটায়। বদহজমের সমস্যা হলে যেকোনও ব্যক্তির কাজেও প্রভাব ফেলে। সঠিক খাবার না খাওয়া এবং সঠিক সময়ে খাবার না খাওয়া পেটের সমস্যার মুল কারণ। আমাদের খাবার যাতে সঠিকভাবে হজম হয়,এজন্য কিছু ব্যবস্থা অনুসরণ করা জরুরি। যেমন-
হালকা গরম পানি: হালকা গরম পানি আমাদের পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখে এবং পেটের ব্যথা দূর করতেও সাহায্য করে। এটি খেলে পেটও আরাম পায়।
আদা: আদা বহু উপকারী গুণের জন্য পরিচিত। এটি অনেক সমস্যার সমাধান করে এবং গ্যাস সম্পর্কিত সমস্যাও দূর করে। এজন্য হালকা গরম পানিতে আদা মধু মিশিয়ে পান করুন।
মৌরি: গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মৌরিও উপকারী বলে মনে করা হয়। এটি খেতেও সুস্বাদু এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।
হালকা খাবার: যদি আপনার গ্যাসের সমস্যা থাকে, তাহলে মসলাদার এবং ভাজা খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন। সম্ভব হলে হালকা খাবার খান এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অনুসরণ করুন।
পুষ্টিকর খাবার: যদি আপনার গ্যাসের সমস্যা থাকে, তবে আপনার সর্বদা পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করা উচিত।
জোয়ান: জোয়ান ব্যবহার গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। এজন্য গরম পানিতে জোয়ান মিশিয়ে পান করতে পারেন। চাইলে প্রতিদিন আধা চা চামচ জোয়ান খেতে পারেন।
কালোজিরা: এতে এমন কিছু অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে যা গ্যাস, অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী। এজন্য ১ চামচ কালোজিরা নিয়ে চিবিয়ে খান। এছাড়াও এক গ্লাস পানিতে ১ চামচ কালোজিরা মিশিয়ে খেতে পারেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ য স র সমস য ট র সমস য গরম প ন
এছাড়াও পড়ুন:
জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য মহানবী (সা.) যে দুটি দোয়া শিখিয়েছেন
জ্ঞান ইসলামে শুধু একটি বৌদ্ধিক সম্পদ নয়; জ্ঞান এটি নুর, হেদায়েত, মানবিক উন্নতি এবং আল্লাহর দিকে উত্তরণের পথ। কোরআন বহু স্থানে জ্ঞানকে মর্যাদা দিয়েছে এবং জানিয়ে দিয়েছে, জ্ঞানের অধিকারী ও অজ্ঞ ব্যক্তি কখনো সমান হতে পারে না। (সুরা যুমার, আয়াত: ৯)
জ্ঞানের প্রার্থনা শুধু দুনিয়ার কল্যাণই দেয় না, বরং বান্দার আখেরাতকেও আলোকিত করে। তাই আল্লাহর রাসুল (সা.) তাঁর উম্মতকে জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য বিশেষ দুটি দোয়া শিখিয়েছেন, যা কোরআন ও হাদিসে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত।
কোরআনে জ্ঞান বৃদ্ধির দোয়াকোরআনের একমাত্র দোয়া যেখানে আল্লাহ নিজেই তাঁর নবীকে জ্ঞান বৃদ্ধি চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, তা হল: রব্বি যিদনি ইল্মা। অর্থ: হে আমার প্রতিপালক, আমাকে আরও জ্ঞান দান করুন। (সুরা ত্বাহা, আয়াত: ১১৪)
এটি এমন একটি দোয়া, যা রাসুল (সা.) নিয়মিত পড়তেন। আলেমদের মতে, দুনিয়ার যেকোনো কল্যাণ চাওয়ার দোয়াতে এই দোয়াটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ; কারণ সঠিক জ্ঞানই মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করে।
আরও পড়ুনজ্ঞান ও বিনয়: ইমান দৃঢ় করার দুই উপাদান২১ আগস্ট ২০২৫হাদিসে বর্ণিত জ্ঞান প্রার্থনার দোয়ারাসুলুল্লাহ (সা.) আরও একটি দোয়া শিখিয়েছেন, যা জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও সঠিক বোঝাপড়া অর্জনে অত্যন্ত কার্যকর। তা হল: আল্লাহুম্মা আনফাঈনি বিমা আল্লামতানি, ওয়া আল্লিমনি মা ইয়ানফাউনি, ওয়াজিদনি ইল্মা।
অর্থ: হে আল্লাহ, আপনি আমাকে যে জ্ঞান দিয়েছেন, তা আমাকে উপকারী করুন; আমাকে এমন জ্ঞান দিন যা উপকারী; এবং আমাকে আরও জ্ঞান বৃদ্ধি করে দিন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩৫৯৯; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২৫১)
এই দোয়াটিতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ আবেদন রয়েছে:
১. উপকারী জ্ঞান
২. উপকারী কাজে লাগানোর তাওফিক
৩. জ্ঞান বৃদ্ধি
ইসলামি দৃষ্টিকোণে এগুলোই প্রকৃত ইলমের ভিত্তি।
জ্ঞান অর্জনে নবীজির ৪ নির্দেশনা১. আল্লাহ-ভীরু হওয়া: আল্লাহ বলেন, “যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তাকে শিক্ষা দেন।” (সুরা বাকারাহ, আয়াত: ২৮২)
২. শেখার আগ্রহ ও পরিশ্রম: ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, “আমি দেখেছি, পরিশ্রম ছাড়া জ্ঞান অর্জন সম্ভব নয়।”
৩. জ্ঞানীর সঙ্গে বসা: রাসুল (সা.) বলেন, “জ্ঞানী ব্যক্তির সঙ্গ এমন যে, কখনো ক্ষতি হয় না; হয় তাতে শেখা হয়, না হয় পুণ্য হয়।” (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২৬৮২)
৪. পাপ থেকে দূরে থাকা: পাপ জ্ঞান থেকে বঞ্চিত করে। ইমাম শাফেয়ী (রহ.) তাঁর শিক্ষক ওয়াকির কাছে অভিযোগ করেছিলেন—মনে রাখতে পারছেন না। তিনি বলেছিলেন, “পাপ বর্জন করো; জ্ঞান আল্লাহর নুর, আর আল্লাহর নুর পাপীর কাছে থাকে না।”
আরও পড়ুনধর্মে পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুকরণের বিপদ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫দোয়া কবুলের কিছু শর্তযে দোয়া জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য, তা কবুলের ক্ষেত্রেও কিছু আধ্যাত্মিক শর্ত রয়েছে:
১. হালাল রুজির উপার্জন
২. আন্তরিক নিয়ত
৩. আমলের মাধ্যমে জ্ঞানকে ব্যবহার করা
৪. জ্ঞানের উদ্দেশ্য যেন হেদায়েত হয়, খ্যাতি নয়
কেন এই দুটি দোয়া বিশেষভাবে গ্রহণযোগ্য১. প্রথম দোয়াটি আল্লাহর শেখানো দোয়া, কারণ কোরআনে সরাসরি বর্ণিত রয়েছে।
২. রাসুল (সা.) এই দোয়াগুলো নিজে পড়েছেন, তাই এগুলোর গুরুত্ব অনেক।
৩. এই দোয়াগুলোতে কেবল জ্ঞানের প্রার্থনা নয়, বরং উপকারী জ্ঞান, অর্থাৎ বাস্তবিক ও আখেরাত-উপকারী জ্ঞান চাওয়া হয়েছে।
৪. জ্ঞানকে কাজে লাগানোর জন্য আল্লাহর সাহায্য চাওয়া হয়েছে। এই অংশটি প্রায় ভুলে যাই আমরা।
জ্ঞান মানুষের হৃদয়কে আলোকিত করে, চরিত্রকে শোধিত করে এবং জীবনকে সঠিক পথে পরিচালিত করে। তাই রাসুল (সা.) তাঁর উম্মতকে শেখালেন—যে জ্ঞান মানুষকে আল্লাহর দিকে টেনে নেয়, সেই জ্ঞানই উপকারী।
আজকের মুসলমান যদি এই দোয়াগুলোকে নিজের জীবনের অংশ বানায়, কোরআন-সুন্নাহ অধ্যয়ন করে এবং উপকারী জ্ঞান অর্জনে নিষ্ঠাবান হয়, তবে তার দুনিয়া ও আখেরাত উভয়ই আলোকিত হবে।
আরও পড়ুন‘ফজিলত’ বলতে কী বোঝায়১৩ জুলাই ২০২৫