জৈন্তাপুর উপজেলায় সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের সিবিএ অফিসে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত নেতারা। রোববার বিকেলে জৈন্তাপুরের চিকনাগুল পানিছড়ার গ্যাস ফিল্ডটির প্রধান কার্যালয়ে অবস্থিত সিবিএ অফিসে তারা তালা লাগিয়ে দেন। 

গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের আগে এই অফিসটি গ্যাস ফিল্ডস কর্মচারী লীগের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হতো। তবে একই দিনে বিএনপি সমর্থিত নন-সিবিএ কর্মচারী ইউনিয়নের অফিস উদ্বোধন করেন বিএনপি-জামায়াত নেতারা।  

সিলেট জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন ও জৈন্তাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুর রশিদের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন গত রোববার গ্যাস ফিল্ডে প্রবেশ করেন। তারা প্রথমে বৈঠক করেন গ্যাস ফিল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজাউল ইসলামের সঙ্গে। বৈঠক শেষে তারা সিবিএ অফিসে অবস্থানরত দুই কর্মচারীকে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দেন। পরে শ্রমিক ইউনিয়নের অফিস উদ্বোধন করেন নেতারা। ওই সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, ফতেহপুর ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আব্দুল হক, ফতেহপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি রফিক আহমেদ, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সুহেব আহমেদ প্রমুখ।

এদিকে সিবিএ সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোবহান অফিসে তালা লাগানোর ঘটনায় ওই দিন সন্ধ্যায় গ্যাস ফিল্ডের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, বহিরাগত ৩৫-৪৫ জন অফিসটিতে তালা লাগিয়ে দেয়। অফিসের ভেতরে ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। তা চালু থাকলে আগুনের সূত্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

সিবিএ অফিস তালা লাগানোর বিষয়টি স্বীকার করে জৈন্তাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুর রশিদ জানান, ওই অফিসের লোকজন আওয়ামী লীগের অনুসারী। সে জন্য তালা লাগিয়ে দিয়েছেন।

এর আগে সরকার পতনের পর সিবিএ অফিস থেকে কর্মচারী লীগের সাইনবোর্ড ও ভেতরে রাখা বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন নেতার ছবি সরিয়ে ফেলা হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের

গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।

মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।

সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।

এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।

মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।

এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ