বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকারী পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। আবরার ফাহাদ কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে জিলা স্কুলের প্রধান ফটকের সামনে এই মানববন্ধন করা হয়। কর্মসূচিতে আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ ও ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজও উপস্থিত ছিলেন।

আধা ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে অংশ নেওয়া প্রায় সবার হাতে ছিল বিভিন্ন ধরনের স্লোগান লেখা ফেস্টুন। তাঁরা আবরারের হত্যাকারীদের রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান। আগে থেকেই পলাতক (জিসান, তানিম, রাফিদ) ও সদ্য পালিয়ে যাওয়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুনতাসির আল জেমিকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিও জানান তাঁরা।

মানববন্ধনে বলা হয়, এ রকম স্পর্শকাতর একটি মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমি গত বছরের ৬ আগস্ট গাজীপুরের হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে গেছেন, যা খুবই উদ্বেগজনক ঘটনা।’

মানববন্ধনে আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, ‘আমি চাই না আর কোনো মায়ের কোল খালি হোক। আর কোনো বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ উঠুক। দ্রুত সময়ের মধ্যে রায় কার্যকর করে দেশের মানুষকে বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল করে তুলতে হবে।’

জিলা স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তাঁদের বক্তব্যে বলেন, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর জেলাতে মানববন্ধন করতে দেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগের ইন্ধনে তৎকালীন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এর পেছনে ছিলেন। যাঁরা আন্দোলন করতে চেয়েছিলেন, তাঁদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এই রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশপন্থী রাজনীতিতে ফিরতে হবে এবং ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দিতে হবে।

বক্তারা আরও বলেন, মানববন্ধনে অংশ নেওয়াদের মধ্যে রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত আদর্শে ভিন্নতা থাকতে পারে। তবে আবরারের প্রশ্নে তাঁরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। আবরারের হত্যাকারী ছাত্রলীগ নামক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি যেমন নিষিদ্ধ হয়েছে, তাদের পৃষ্ঠপোষক আওয়ামী লীগকেও সেভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। তা না হলে আবরারের আত্মার শান্তি মিলবে না।

মানববন্ধনে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলোর মধ্যে আছে পলাতক সব আসামিকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; মামলার রায় দ্রুত কার্যকর করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে; সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। মানববন্ধন শেষে একটি প্রতিনিধিদল কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমানের কাছে স্মারকলিপি দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবর র ফ হ দ র য় ক র যকর আবর র র

এছাড়াও পড়ুন:

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই হামলায় মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার দাবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই আন্দোলন চলাকালে ছাত্র–জনতার ওপর হামলায় মদদ ও পরীক্ষার অনিয়মে জড়িত শিক্ষকদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জাতীয় ছাত্রশক্তির নেতা–কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।

মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন জাতীয় ছাত্রশক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক কাজী মেহরাব। এতে বক্তারা বলেন, জুলাই আন্দোলনে হামলায় মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার না করে গাদ্দারি করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একাডেমিক ক্ষেত্রে শিক্ষকদের আক্রোশের শিকার হয়ে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ‘রেজাল্ট টেম্পারিংয়ের’ শিকার হচ্ছেন। এই প্রশাসন ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের বলির পাঁঠা বানিয়ে তারা শিক্ষক সিন্ডিকেট জিইয়ে রেখেছে। অবিলম্বে এসব শিক্ষকের বিচারকাজ শেষ করার দাবি জানান তাঁরা।

ইংরেজি বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশক্তির সংগঠক খন্দকার আল ফাহাদ বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিচারের দাবি করে আসছি। কিন্তু আমাদের প্রশাসন একটা কথা বলে যে, তারা শিক্ষকদের প্রতি কোনো অবিচার করতে পারবে না। ঠিক কথা, তারা শিক্ষকদের প্রতি কোনো অবিচার করতে পারবে না। কিন্তু তারা ঠিকই প্রতিবার শিক্ষার্থীদের প্রতি অবিচার করতে পারে; এমনটি আগেও করেছে, বর্তমানেও করছে। যে প্রশাসনকে আমরা একটি গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বসিয়েছি, তারা আজ এটিকে হাস্যকর বিষয়ে পরিণত করছে।’

ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশক্তির সংগঠক নাদিয়া রহমান বলেন, হামলাকারী শিক্ষার্থীদের বিচার যদি এই দেড় বছরে করা সম্ভব হয়, তাহলে মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার কেন এই দেড় বছরে করা সম্ভব নয়? তারা জাকসুর আগে মিটিংগুলোয় বলেছিল, জাকসু হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই এসব শিক্ষকের বিচার সম্ভব। কোথায় সেই বিচার? জাকসু হওয়ার পর আজ প্রায় দুই মাস হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এ পর্যন্ত অভিযুক্ত শিক্ষকদের কোনো ধরনের বিচারের তৎপরতা প্রশাসনের ভেতরে দেখা যাচ্ছে না।

অবিলম্বে শিক্ষকদের বিচার না হলে এই প্রশাসনকে টেনেহিঁচড়ে নামানোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশক্তির সংগঠক জিয়াউদ্দিন আয়ান বলেন, এই শিক্ষকদের বিচার না হওয়ার পেছনে আওয়ামীপন্থী সিন্ডিকেট জড়িত আছে। যে শিক্ষকেরা রেজাল্ট টেম্পারিং করছেন, তাঁদের অধিকাংশই আওয়ামীপন্থী সিন্ডিকেট। যদি প্রশাসন এসব শিক্ষকের বিচার না করে, তাহলে সাবেক ভিসি নুরুল আলমের প্রশাসন যেভাবে বিদায় নিয়েছিল, এই প্রশাসনকেও সেভাবে নামানো হবে।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতি, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইমন প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিদ্ধিরগঞ্জ মসজিদ ভাঙ্গায় যুবদল নেতার শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ
  • বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে শেখ সাদীর কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভ
  • বাউলদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
  • ভোলা-বরিশাল সেতুসহ ছয় দফা দাবিতে ভোলায় মানববন্ধন
  • খুলনায় আপ বাংলাদেশের নেতা ফাইজুল্লাহ শাকিলকে দল থেকে অব্যাহতি
  • জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই হামলায় মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার দাবি
  • ভোলা পৌরসভার কর্মীদের বিক্ষোভ, ‘সন্ত্রাসীদের ধরে দে, নইলে গাড়ি কিনে দে’ স্লোগান
  • বাউল আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে খুলনায় মানববন্ধনে হামলা, মারধর
  • ঠাকুরগাঁওয়ে বাউলদের মানববন্ধনের প্রস্তুতিকালে হামলা, আহত ২