খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে ২ দালালকে কারাদণ্ড
Published: 3rd, May 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ শহরের অন্যতম প্রধান সরকারি ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট খানপুর হাসপাতালে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে দুই দালালকে ১৫ দিন করে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, শহরের খানপুর এলাকার মোকসেদ আলীর ছেলে মোঃ মঞ্জু (৫৫) এবং গলাচিপা কলেজ রোড এলাকার মোতালেব হাওলাদারের ছেলে মো. মাসুদ হাওলাদার (৪২)।
শনিবার (৩ মে) দুপুরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোনাববর হোসেন বলেন, সরকারি আদেশ অনুযায়ী হাসপাতাল এলাকায় দালাল বা প্রতারক চক্রের কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু এই আদেশ অমান্য করে দুই ব্যক্তি সেখানে সক্রিয় ছিলেন। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় দুইজনকে তাৎক্ষণিক আটক করা হয়।
সেই সাথে তাদের ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় অবৈধ প্রতারক চক্র এবং দালালদের বিরুদ্ধে আমাদের জেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
সুরে, শ্রুতিতে, শ্রদ্ধায় সুফিয়া কামালকে নিবেদন
আষাঢ়ের অন্ধকার নেমে এসেছিল শহরের গায়ে। বৃষ্টির নরম পর্দা যেন ঢেকে দিচ্ছিল জীবনের কোলাহল। এমনই এক বর্ষণমুখর সন্ধ্যায় ছায়ানট মিলনায়তনে জমে উঠেছিল এক অনুপম গীতিসন্ধ্যা—সুর, রাগ, এবং অনুভবে মগ্ন একটি অনুষ্ঠান, যেটি নিবেদিত ছিল ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মহীয়সী নারী সুফিয়া কামালের প্রতি।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা। ছায়ানট মিলনায়তনের অন্দরমহলে শুরু হয় ‘বর্ষা উৎসব’। বাইরে বৃষ্টির ছন্দ, আর ভেতরে সংগীতের অনুরণন—এই সন্ধ্যা যেন পরিণত হয়েছিল ঋতুর প্রতি এক নান্দনিক শ্রদ্ধা নিবেদনে।
অনুষ্ঠানের সূচনা করেন ইফফাত আরা দেওয়ান, তাঁর কণ্ঠে ভেসে আসে ‘আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার’। এই গান দিয়ে শুধু একটি পরিবেশনার সূচনা নয়, বরং বর্ষার আবহ, প্রেমের প্রতীক্ষা আর প্রকৃতির রহস্যময়তার দরজাটি খুলে যায়।
এরপর একে একে মঞ্চে আসেন সংগীতশিল্পীরা। উষসী নাগ পরিবেশন করেন রাগ শুদ্ধসারং, যার প্রতিটি স্বরে মিশে থাকে মনভোলানো বারিধারার মায়া। শ্রাবন্তী ধর গাইলেন ‘ঝরো ঝরো বারি ঝরে অম্বর ব্যাপিয়া’—সেই চিরচেনা ঋতুভার অনুভব, যা শ্রোতার মনেও এনে দেয় অনাবিল স্নিগ্ধতা।
সুদীপ্ত শেখর দে রাগ ‘দেশ’ পরিবেশন করেন। সত্যম কুমার দেবনাথের কণ্ঠে ধ্বনিত হয় ‘এসো শ্যামলসুন্দর’—আধ্যাত্মিক আবাহন আর রাগ-ভিত্তিক গানের সংমিশ্রণে সৃষ্টি হয় এক ধ্যানমগ্ন মুহূর্ত।
পরিবেশনায় ছিলেন স্বপ্না সাহা (রাগ ছায়ানট), সেজুঁতি বড়ুয়া (গোধূলী গগনে মেঘে), সিরাজুম মুনীরা (রাগ কেদার), নুসরাত জাহান রুনা (বহু যুগের ওপার হতে)—যাঁদের সুরে বর্ষা শুধু আবহ নয়, হয়ে ওঠে এক অন্তর্লীন মানসপট।
প্রিয়ন্তু দেব গেয়ে শোনান ‘মেঘমেদুর বরষায়’, সমুদ্র শুভম পরিবেশন করেন রাগ জয়জয়ন্তী—সন্ধ্যা তখন পূর্ণতায়। তাহমিদ ওয়াসিফ ঋভুর ‘আমার দিন ফুরালো’, রিফাত আহমেদ ইমনের ‘দেশমল্লার’ এবং মিনহাজুল হাসান ইমনের ‘রামদাসীমল্লার’—এই ধারাবাহিকতায় শ্রোতারা যেন হারিয়ে যান ঋতুর সুরলোকে।
দ্বিতীয় অংশে মানীষ সরকার গেয়ে শোনান ‘ঝর ঝর ঝরে শাওন ধারা’, ফারজানা আক্তার পপির কণ্ঠে বাজে ‘ঝড়ো ঝড়ো বরিষে বারিধারা’, আর আফরোজা রুপা পরিবেশন করেন ‘মেঘমল্লার’—বর্ষার সংগীতযাত্রা সেখানে এক ধ্বনিময় সংলাপে রূপ নেয়।
শেষ মুহূর্তগুলোতে সুশ্মিতা দেবনাথ সুচির ‘বরষা ওই এলো বরষা’, অনন্যা আচার্যের ‘মিয়াকিমল্লার’ এবং শারমিন শাথী ইসলাম ময়নার ‘চঞ্চল শ্যামলে এলো গগনে’—এই ত্রয়ী পরিবেশনায় শ্রোতা যেন দাঁড়িয়ে থাকে গানের শেষ বৃষ্টিবিন্দু গায়ে মেখে।
সন্ধ্যার উপসংহার হিসেবে পরিবেশিত হয় সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত— তাতে উদ্ভাসিত হয় গভীর ও গর্বিত এক মুহূর্ত।
যন্ত্রানুসঙ্গে ছিলেন গৌতম সরকার, ইফতেখার আলম ডলার, মো. আশিকুল ইসলাম আবীর, শৌনক দেবনাথ ঋক এবং প্রদীপ কুমার রায়। তাঁদের যন্ত্রশিল্প সংগীত যোগ করে ছন্দ ও প্রাণ।