নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলনের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বী বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বহু প্রকল্প, মেগা-প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে যা, কেবল মাত্র নিজেদের ব্যক্তি বিশেষের অর্থ লুটপাটের উদ্দেশ্যে গ্রহণ করা হয়েছে বলে পরবর্তীতে প্রমাণ হয়েছে। সে সব প্রকল্প বিভিন্ন জায়গায় উপকারের চেয়ে ক্ষতির কারণ হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, সে রকমই একটি প্রকল্প নারায়ণগঞ্জে কদম রসুল সেতুটির নকশায় দেখা যায়, পশ্চিমাংশের মুখটি শহরের অত্যন্ত ব্যস্ততম সড়ক ফলপট্টি এলাকায় নারায়ণগঞ্জ কলেজের সামনে এসে নেমেছে। যা নারায়ণগঞ্জের মানুষের জন্য একটি ভয়াবহ দুর্ভোগের কারণ হবে।

আমরা অতি দ্রুত যথাযথ সমীক্ষার মাধ্যমে এই ত্রুটি সমাধান করে গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটির পশ্চিমাংশের মুখটি পুনঃনির্ধারণের দাবি জানাচ্ছি।

শনিবার (৩ মে) বেলা সাড়ে ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলনের ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবী করা হয়।

রফিউর রাব্বী বলেন, এমনিতে একনং রেল গেট থেকে পুরো সিরাজ উদদ্দৌলা সড়কটিতে সব সময় অস্বাভাবিক ট্র্যফিক জ্যাম থাকে।

এখানে শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ বড় স্কুল নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল, পাশে নারায়ণগঞ্জ কলেজ, এর সাথে দিগুবাবু বাজারে প্রদেশের মুখ, এইটি শহরের রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল ও লঞ্চঘাটের সংযোগ সড়ক, সর্বপরি দেশের বৃহত্তর রঙ ও সুতার বাজার টানবাজারে প্রবেশের এইটি একটি প্রধানতম সড়ক হওয়ায় এখানে প্রতিনিয়ত যেমনি ভয়াবহ যানজট লেগে থাকে, আবার এর সাথেই রেল ক্রসিং থাকায় বিভিন্ন সময় এখানে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, এমনি একটি ব্যস্ততম সড়কে কদম রসুল সেতুর মুখ যদি যুক্ত হয় তা হলে এই সেতু থেকে যানবাহন সড়কে নামার ক্ষেত্রে যেমনি বড় ধরণের সংকটে পড়বে, অন্যদিকে এই পুরো এলাকাটিই সম্পূর্ণ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে উঠবে।

এত বড় সেতুর নকশা তৈরির ক্ষেত্রে নগরের এই বাস্তবতা ও সংকটটি গভীর ভাবে বিবেচনায় নেয়া উচিত ছিল বলে আমরা মনে করি। এই প্রকল্পে যথাযথ সমীক্ষারক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে বলে আমরা মনে করছি। অপরিকল্পিত উন্নয়ন জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি করা ছাড়া কোন সুফল বয়ে আনে না।

যেনতেন ভাবে প্রকল্প সম্পন্ন করে নারায়ণগঞ্জের মানুষের দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি করার কোন উদ্যোগ নারায়ণগঞ্জবাসী মেনে নেবে না। 

প্রসঙ্গত, শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়কে সংযুক্ত করার প্রয়োজনে নদীর উপর কদম রসুলসেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। সেতু নির্মাণের সংবাদটি আমাদেরকে আনন্দিত করেছে। এই প্রকল্পটি ২০১৭ সালে একনেকে অনুমোদিত হয়। এর কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৮ সালে।

এর মেয়াদ ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। এর প্রকল্প ব্যয় ৭ শ’ ৩৫ কোটি টাকা। সেতুটির মূল দৈর্ঘ ৩৮০ মিটার, প্রশস্ত ১২ দশমিক ৮০ মিটার। সংযোগ সড়ক ১৩৭৯ মিটার।

সেতুটি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) যৌথভাবে নির্মাণ করবে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ প রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশের উন্নতির পেছনে শ্রমিকদের অবদান অনস্বীকার্য : ডিসি

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যাপক উন্নতির পেছনে শ্রমিকদের অবদান অনস্বীকার্য। দেশের এই উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিতে হলে শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে মানবিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।

মালিক পক্ষকে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি, কর্মপরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকদের ঠকিয়ে কখনো শিল্প এগোতে পারে না। কিন্তু অনেক মালিক পক্ষ শ্রমিকদের চরমভাবে অধিকার থেকে বঞ্চিত করে থাকে। ‎

মে দিবসে শ্রমিকদের কথা ভেবে মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে ভ্রাতিত্বের বন্ধন গড়ে তুলতে হবে। শ্রমিক ও মালিকের ইতিবাচক সম্পর্কই শিল্প উন্নয়ন সম্ভব। এই উন্নয়নই আগামীর বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করবে।

‎‎বৃহস্পতিবার (১ মে) সকালে মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়বো দেশ নতুন করে’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিভাগীয় শ্রম দপ্তর নারায়ণগঞ্জ এবং কল কারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর নারায়ণঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 

অনুষ্ঠানে বিভাগীয় শ্রম দপ্তর নারায়ণগঞ্জ এর পরিচালক আফিফা বেগমের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ এর অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদি, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা জামায়াতের আমীর মইনুদ্দিন আহমেদ, মহানগর জামায়াতের আমীর আব্দুল জব্বার, চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি সোহেল মোর্শেদ সারোয়ার সহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও শ্রমিকবৃন্দ।

এ সময় মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞা আরও বলেন. আমরা যারা শ্রমিক রয়েছি আমাদের সমস্যা থাকবে, দাবি থাকবে। কিন্তু অন্যের কথার দ্বারা আমাদের প্রভাবিত হওয়া চলবেনা। পৃথিবীর প্রতিটি দেশের মানুষের দাবি রয়েছে। যখন দাবি শেষ হয়ে যাবে তখন পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে।

তাই আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে আগামী প্রজন্মের কথা ভেবে আমাদেরকে যৌক্তিক চিন্তাভাবনা করতে হবে। আমাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে, আচরণকে পরিশুদ্ধ করতে হবে। তাহলেই আমাদের যে স্বপ্ন সুন্দর দেশ গড়ার সেটা সত্যি হবে।

তিনি আরও বলেন, ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে কেনো হাজার হাজার মানুষ তাদের ৮ ঘন্টা শ্রমের দাবীতে রাস্তায় নেমে এসেছিলো। এটা কেনো ইউরোপে হলো না ? কারন ইউরোপীয়ানরা ১৫০০ সালের পর থেকে বিভিন্ন যুদ্ধে জড়িয়ে ছিলো আর আমেরিকানরা তখন তাদের নীতি পরিবর্তন করেছিলো।

তারা নিজেদের উন্নয়ন ও শিল্পায়ন চেয়েছিলো। তখন থেকেই তারা শিল্পায়ন শুরু করে এবং শিল্প শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কথা বলার সুযোগ হয়েছে। যদি দেশের উন্নয়ন না হতো, শিল্পায়ন না হতো তাহলে শিল্প শ্রমিকদের কথা বলার কোন সুযোগ হতোনা। আজকে নারায়ণগঞ্জে এত বড় রেলী হয়েছে শ্রমিক ও মালিকদের নিয়ে। এটা কি অন্য জেলায় সম্ভব, না এটা সম্ভব নয়।

‎‎পরিশেষে তিনি দেশ ও বহির্বিশ্বে কর্মরত সকল শ্রমিক ভাইবোনদের মহান মে দিবসের শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বিগত দিনগুলিতে কর্মস্থলে দূর্ঘটনার শিকার হয়ে ও অধিকারের দাবিতে যে সকল শ্রমিক ভাই বোন মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের সকলকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি এবং সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জে ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত, দুই কিশোর আটক
  • চালের দাম একেবারে পড়ে যাওয়া ঠিক না, বললেন খাদ্য উপদেষ্টা
  • কবি নাজিম উদ্দিন সুমনের প্রতিবাদী কাব্যগ্রন্থ স্বাধীনতার স্বাধীনতা চাই’র গ্রন্থালোচনা 
  • দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর না.গঞ্জ পাসপোর্ট অফিস চালু
  • বন্দরে নিখোঁজ যুবক জনি’র লাশ উদ্ধার
  • নিজেদেরকে আল কুরআনের আদর্শিক কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে : জব্বার
  • নারায়ণগঞ্জে দুর্বৃত্তের গুলিতে ব্যবসায়ী আহত
  • নারায়ণগঞ্জে ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা
  • বাংলাদেশের উন্নতির পেছনে শ্রমিকদের অবদান অনস্বীকার্য : ডিসি