Risingbd:
2025-09-20@21:30:26 GMT

ধীর চলো নীতিতে তামিম

Published: 3rd, May 2025 GMT

ধীর চলো নীতিতে তামিম

‘‘এত বছর ক্রিকেট খেলেও যদি ক্রিকেটের জন্য কিছু বলতে না পারি, তাহলে এতদিন কি ক্রিকেট খেললাম! সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে আমার মর্যাদাই-বা থাকল কোথায়?’’ - কথাগুলো তামিম ইকবালের। 

গত ২৫ এপ্রিল মিরপুর হোব অব ক্রিকেটে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন গণমাধ্যমে। যে দিন ক্রিকেট বোর্ডে ক্রিকেটারদের নিয়ে ‘শো-ডাউন’ করেছিলেন বলেও বলছেন কেউ কেউ! তবে তামিম তা উড়িয়ে দিয়েছেন এভাবে, ‘‘অবশ্যই না। অনেকদিন খেলেছি। এক্সপোজারও পেয়েছি যথেষ্ট। আর সেসবের দরকার নাই।’’ 

তবে ‘এক্সপোজার’ কী তামিমের পিছু ছাড়ছে? কিংবা ভিন্নভাবে ভাবলে, তামিম কী নিজেকে আড়াল রাখতে পারছেন? ক্রিকেটকে তামিম গুডবাই বলেননি। খেলার ইচ্ছা আছে ঘরোয়া ক্রিকেটে। খেলতে পারবেন কি না তা সময় বলে দেবে। তবে বিশ্বস্ত সূত্রের দাবি, প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট ক‌্যারিয়ার তার শেষ। 

তাহলে, তার সামনে পথ খোলা কেবল ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি পদ। তামিম কী পরবর্তী ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি নির্বাচিত হবেন? তিনি কী অক্টোবরে নির্বাচন করবেন? এই প্রশ্নগুলো গত আট মাস ধরেই ঘুরপাক খাচ্ছে ক্রীড়াঙ্গনে। কিন্তু তামিম নিজ থেকে আজ পর্যন্ত একবারও নির্বাচন করবেন কী না তা নিশ্চিত করেননি। তবে সেই পথে রয়েছেন তা বোঝা যাচ্ছে তার ধীর গতির ক্রিকেট সংগঠক হয়ে উঠার রূপরেখায়। 

শনিবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে পথ চলা শুরু হয়েছে বাংলাদেশে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশন। জেলা-বিভাগী ক্রীড়া সংগঠক পরিষদ নামে একটি সংগঠন থাকলেও আরেকটি সংগঠকদের সংগঠনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ধারনা করা হচ্ছে, জাতীয়তাবাদী আদর্শের সংগঠক ও খেলোয়াড় এবং বঞ্চিতরা এক হয়ে এমন সংগঠনের জন্ম দিয়েছেন। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম নতুন এই সংগঠকনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানেক চমক হিসেবে হাজির হয়েছিলেন। মঞ্চে থেকে রেখেছেন সাড়ে তিন মিনিটের বক্তব্য। 

বড় মঞ্চে সংগঠক তামিমের আত্মপ্রকাশের দিনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দলের (বিএনপি) ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হক, সাবেক সেনা কর্মকর্তা, খেলোয়াড় ও বাফুফে সভাপতি মেজর হাফিজ উদ্দিন,সাবেক বিসিবি পরিচালক ও সার্চ কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন বুলবুল, আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সাবেক তারকা ফুটবলার সৈয়দ রুম্মন বিন ওয়ালী সাব্বির, বাফুফে সহ-সভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরি হ্যাপী, ক্রীড়া সংগঠক আব্দুস সালাম, জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, সাবেক ক্রিকেটার নিয়ামুর রশীদ রাহুল, সাবেক তারকা ফুটবলার ও কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক, সাবেক হকি খেলোয়াড় আরিফুল হক প্রিন্স, শুটার শারমিন আক্তার রত্নাসহ আরও অনেকে।

নানা সময়ে বাকিদের ক্রীড়া সংগঠক এবং ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে ভাবনার প্রকাশ পেয়েছে। তামিমের কথা শুনতেই আগ্রহ ছিল সবার। ক্রিকেটার থেকে সংগঠক হয়ে উঠা তামিম নিজের বক্তব্যে ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে ভাবনা, ক্রিকেট নিয়ে অভিলাষ এবং সামনের বিসিবির নির্বাচন নিয়ে পরিস্কার বার্তা দিয়েছেন, 

‘‘আমি ছোট হয়ে আপনাদের একটা জিনিস অনুরোধ করব—যারা যোগ্য ক্রিকেট বোর্ডকে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য, জেলা থেকে হোক বা বিভাগ থেকে হোক.

..যাদের বেসিক ক্রিকেটিং আইডিয়া আছে, যাদের একটা স্বপ্ন আছে যে আমি বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এই জায়গায় নিয়ে যেতে চাই, আমি অনুরোধ করব তাদেরই নির্বাচিত করুন।’’

শুধু তা-ই নয় তামিম শিকড়ে কাজ করার নির্দেশনাও দিয়েছেন। যা মনে ধরেছে প্রায় সবারই, ‘‘ক্রিকেটকে আমরা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় খেলা মনে করি। অন্যান্য খেলার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই এটা বলছি। তবে সবচেয়ে বড় খেলায় যদি এমনটা হয়, কেউ যদি নিজের জেলা-বিভাগে ক্রিকেটে উন্নতি না করে তাহলে তার বোর্ডে আসা প্রয়োজন নেই।’’

ক্রিকেট সংগঠক হিসেবে তামিম এর আগে ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)-এর চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। কিছুদিন আগে শেষ হওয়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দল গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের মালিকানা কিনেছেন। তার ক্লাব এবার লিগে সুপার লিগে উঠায় বিসিবির নির্বাচনে দুটি কাউন্সিলরশিপ পাবেন। এবার জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠকের তালিকায় উঠে গেল তার নাম। একটু একটু করে তামিমের পদচারণা বাড়ছে ক্রীড়াঙ্গনে।

নিশ্চিতভাবেই গন্তব্য চূড়ান্ত গন্তব্য, দেশের ক্রিকেটের মসনদ।

ঢাকা/ইয়াসিন 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স গঠক

এছাড়াও পড়ুন:

রোহিঙ্গা সংকটকে বৈশ্বিক আলোচনার কেন্দ্রে আনতেই জাতিসংঘের বিশেষ অধিবেশন

বিশ্বব্যাপী রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মনোযোগ কমে আসছে—এমন প্রেক্ষাপটে শনিবার রাজধানী ঢাকায় এক আয়োজনে সাংবাদিক, কূটনীতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা বলেন, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আর অ্যাডভোকেসির মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটকে তুলে ধরতে হবে। শুধু মানবিক সহায়তা, প্রত্যাবাসনের অচলাবস্থা কিংবা নিরাপত্তা উদ্বেগের খবরে সীমাবদ্ধ না থেকে ‘শিরোনামের বাইরে’ গিয়ে সংবাদকর্মীদের বাস্তব চিত্র ও সম্ভাব্য সমাধান বিশ্বকে জানাতে হবে।

প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি), অক্সফাম ইন বাংলাদেশ এবং ডেভেলপমেন্ট মিডিয়া ফোরাম যৌথভাবে ‘শিরোনামের বাইরে: নতুন চোখে রোহিঙ্গা সংকট’ শীর্ষক সিম্পোজিয়াম আয়োজন করে। কূটনীতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের পাশাপাশি ঢাকা ও কক্সবাজারের ৪০ জনের বেশি সাংবাদিক এ আয়োজনে অংশ নেন।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আসন্ন উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের আগে হওয়া এ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল গণমাধ্যমের সহায়তায় রোহিঙ্গা সংকটের বৃহত্তর দিকটিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরা, যাতে তা আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ ও বৈশ্বিক আলোচনায় সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে।

এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশ তার দায়িত্বের চেয়েও বেশি করেছে। এখন অর্থায়ন, দায়বদ্ধতা ও দায়িত্ব ভাগাভাগির মাধ্যমে বিশ্বকে পদক্ষেপ নিতে হবে। সাংবাদিকদের দায়িত্ব হলো ঘটনাবলীর নিখুঁত ও বাস্তব উপস্থাপন জারি রাখা। নিশ্চিত করা যে, যেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেই জায়গায় রোহিঙ্গাদের কণ্ঠস্বর যেন পৌঁছায়।

উদ্বোধনী বক্তব্যে পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ সংবাদমাধ্যমের দায়িত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, রোহিঙ্গারা কোনো পরিসংখ্যান নয়। তারা ইতিহাস, সংস্কৃতি, টিকে থাকার সংগ্রাম আর স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকা মানুষ। সাংবাদিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো তাঁদের মর্যাদা যেন হারিয়ে না যায় এবং তাঁদের কণ্ঠস্বর যেন নীরব না হয়, তা নিশ্চিত করা। প্রতিটি মানবিক মর্যাদা এবং ন্যায়বিচারের ওপরে ভিত্তি করে যে সংবাদ শিরোনাম তৈরি হয়, তা সমস্যার স্থায়ী পরিবর্তনের পথকে সুগম করে দেয়।

অক্সফাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আশীষ দামলে বলেন, রোহিঙ্গা সংকট কেবল বাংলাদেশের দায়িত্ব নয়, এটি একটি বৈশ্বিক সংকট। নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের নৈতিকতা ও সমাধানমুখী সাংবাদিকতার মাধ্যমে তাদের গল্পকে জীবিত রাখতে হবে । গণমাধ্যমের ভূমিকা এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা জনমত গঠনে যেমন প্রভাব ফেলে, তেমনি আন্তর্জাতিক পদক্ষেপেও।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর নজরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা ও কক্সবাজার থেকে যা রিপোর্ট করা হয়, তা নিউইয়র্ক ও জেনেভার নীতিনির্ধারণে প্রভাব ফেলতে পারে। এমনভাবে প্রতিবেদন তৈরি হওয়া উচিৎ, যাতে তা বৈশ্বিক পদক্ষেপে প্রভাব ফেলতে পারে। সাংবাদিকরা কেবল পর্যবেক্ষক নন, তারা ন্যায়বিচার, প্রত্যাবাসন ও দায়বদ্ধতা নিয়ে আন্তর্জাতিক আলোচনার অংশগ্রহণকারীও বটে।

দিনব্যাপী আয়োজনে ছিল তিনটি টেকনিক্যাল সেশন। ‘কনটেম্পোরারি ইস্যুজ অব দ্য রোহিঙ্গা ক্রাইসিস: জাস্টিস, রেপ্যাট্রিয়েশন অ্যান্ড পলিটিক্স’ শীর্ষক সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওবায়দুল হক এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক বুলবুল সিদ্দিকী কথা বলেন। তাঁদের মতে, মিয়ানমারে নাগরিকত্ব স্বীকৃতি ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ছাড়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে অচলাবস্থায় বজায় থাকবে। প্রত্যাবর্তন যত পিছাচ্ছে, রোহিঙ্গাদের প্রতি স্থানীয় জনগোষ্ঠী ততই সহনশীলতা হারাচ্ছে্য। সহায়তার পরিমাণ কমে আসায় ওই অঞ্চলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার ঝুঁকিও বাড়ছে।

আরও পড়ুনরোহিঙ্গা তহবিলসংকট সামলাতে প্রধান লক্ষ্য আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দ্বিতীয় সেশনের শিরোনাম ছিল ‘দি ফরগটেন অ্যান্ড প্রোট্র্যাক্টেড ক্রাইসিস: রিপোর্টিং ফ্রম দ্য গ্রাউন্ড’। এতে অংশ নেন ওসমানী সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড সিকিউরিটির চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহফুজুর রহমান, সংগঠনটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) নাঈম আশফাক চৌধুরী, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক খাজা মাঈন উদ্দিন, প্রথম আলোর কূটনৈতিক প্রতিবেদক রাহীদ এজাজ।

তাঁদের মতে, রোহিঙ্গা সংকটকে আর শুধু মানবিক সংকট হিসেবে দেখা যাবে না। এটি জাতীয় নিরাপত্তা, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপরও গভীর প্রভাব ফেলছে। বক্তারা সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন, যেন তাঁরা কেবল সাহায্য বিতরণ বা ক্যাম্পের অপরাধকেন্দ্রিক পুনরাবৃত্ত সংবাদ থেকে বেরিয়ে এসে রোহিঙ্গাদের টিকে থাকার সংগ্রাম, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও সামাজিক-রাজনৈতিক বাস্তবতাকে তুলে ধরেন।

আরও পড়ুনরোহিঙ্গা সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সর্বশেষ সেশনটি ছিল ‘রোহিঙ্গা কনফারেন্স অ্যাট দ্য ইউএন: কানেক্টিং লোকাল ন্যারেটিভস উইথ গ্লোবাল অ্যাডভোকেসি থ্রু রিপোর্টিং’ শিরোনামে। এতে বক্তব্য দেন রয়টার্সের প্রতিনিধি স্যাম জাহান।

সিম্পোজিয়ামটি পরিচালনা করেন অক্সফাম ইন বাংলাদেশের হেড অব ইনফ্লুয়েন্সিং, কমিউনিকেশনস, অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড মিডিয়া শরিফুল ইসলাম এবং পিআইবির জ্যেষ্ঠ প্রশিক্ষক গোলাম মুর্শেদ।

আরও পড়ুনজটিল হয়ে গেছে রোহিঙ্গা সংকট২৫ আগস্ট ২০২৫আরও পড়ুনরোহিঙ্গা সংকটের বোঝা ভাগাভাগি শুধু বাংলাদেশের দায়িত্ব নয়: অধ্যাপক ইউনূস২৫ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ