বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের উত্তরসূরি হিসেবে গ্রেগ আবেলের ওপর বড় দায়িত্বই পড়েছে। চলতি বছরের শেষভাগে তিনি ওয়ারেন বাফেটের স্থলাভিষিক্ত হবেন। এই পদে বসে বাফেটের সংস্কৃতির উত্তরাধিকার বহন করার দায়িত্ব পড়বে তাঁর ওপর, যদিও পূর্বসূরির যে তারকা খ্যাতি, তার ছিটেফোঁটা আবেলের নেই।

৬২ বছর বয়সী আবেল বর্তমানে বার্কশায়ারের ভাইস চেয়ারম্যান। বিনিয়োগকারী ও বিশ্লেষকদের আশা, এই ১ দশমিক ১৮ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ ১৮ হাজার কোটি ডলারের সাম্র্রাজ্যের ধ্বজা তিনি বহন করবেন। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা আশা করবেন, এত দিন বাফেট যে লভ্যাংশ দিয়েছেন, তিনিও সেই ধারা বহন করবেন।

বার্কশায়ারের বিশাল সাম্রাজ্য। রেল, সড়ক, বিমা কোম্পানি, আইসক্রিম কারখানা—কী নেই এই কোম্পানির। সেই ১৯৬৫ সাল থেকে বাফেট তিলে তিলে এসব গড়ে তুলেছেন। ৯৫ বছর বয়সী বাফেট যেদিন থেকে আর থাকবেন না, সেদিন থেকেই শুরু হবে আবেলের মূল দায়িত্ব। গতকাল শনিবার যখন বাফেট নিজের উত্তরসূরি হিসেবে আবেলের নাম ঘোষণা করেন, সেই বিষয়টিও অনেকের কাছে বিস্ময়কর লেগেছে। বাফেট আগে ঠিকঠাক বলেননি, কবে থেকে তিনি এই পদ ছাড়বেন।

বাফেট অবশ্য নিজের বয়সের কথা বারবার বলেছেন। শেষমেশ নিজের অবসরের কথা ঘোষণার আগে তিনি অবশ্য ইঙ্গিত দিয়েছেন, আবেল তাঁর চেয়ে পারদর্শী। বাফেট বলেছেন, আবেল তাঁর চেয়ে ভালো সামলাতে পারবেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, আবেল যত পরিশ্রম করেন, তিনি অতটা করতেন না।

বার্ষিক শেয়ারহোল্ডার বৈঠকে আবেলকে জিজ্ঞাসা করা হয়, সাবসিডিয়ারি কোম্পানিগুলোর বিষয়ে তাঁর অবস্থান কী হবে। জবাবে আবেল বলেন, ‘আরও সক্রিয় হতে হবে’।

নিজের গুরুর প্রশংসাও করেছেন আবেল। বলেন, ওয়ারেন শিক্ষক হিসেবে অসাধারণ; এত বছর তাঁর সঙ্গে থেকে আমি নিজেও শিখেছি।

কে এই আবেল

গ্রেগরি এডওয়ার্ড আবেল ১৯৬২ সালের ১ জুন অ্যালবার্টার এডমন্টনে এক শ্রমিক শ্রেণির পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। আবেল নিজেও একসময় ছোটখাটো কাজ বা এটা-সেটা করতেন। পুরোনো বোতল পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রে পুনরায় রাসায়নিক ভরা, এমন অনেক কাজই করেছেন তিনি।

একবার এক সাক্ষাৎকারে আবেল বলেছিলেন, ‘আমাদের পরিবার ছিল প্রকৃত অর্থেই শ্রমজীবী পরিবার।’ কখনো কখনো তাঁদের কাজ থাকত আবার কখনো থাকত না। অর্থাৎ তাঁরা সবাই কষ্টেসৃষ্টে পরিবারের উন্নতির চেষ্টা করতেন। ১৯৮৪ সালে ইউনিভার্সিটি অব অ্যালবার্টা থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন আবেল। এরপর তিনি প্রাইস ওয়াটার হাউসকুপার্স ও জ্বালানি কোম্পানি কল এনার্জিতে কাজ করেন।

১৯৯২ সালে আবেল বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে এনার্জিতে যোগ দেন, তখন তাঁর নাম ছিল মিড আমেরিকান এনার্জি। বার্কশায়ার একপর্যায়ে মিড আমেরিকান এনার্জি কিনে নেয়। এরপর ২০০৮ সালে তিনি মিড আমেরিকানের প্রধান নির্বাহী হন।

আবেল বর্তমানে বার্কশায়ারের বিমাবহির্ভূত ব্যবসা-বাণিজ্য যেমন বিএনএসএফ, বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে এনার্জিসহ ডজনখানেক রাসায়নিক, শিল্প ও খুচরা প্রতিষ্ঠান দেখাশোনা করেন।

আবেলের ওপর বাফেটের আস্থার বিষয়টি অতীতেও বারবার উঠে এসেছে। বার্কশায়ার যে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ করে, সেই বিনিয়োগ করা ঠিক হচ্ছে কি না, সেই বিষয়টিও তিনি শেষমেশ আবেলের ওপর ছেড়ে দেন।

এ ছাড়া কোম্পানিতে আবেলের খ্যাতি প্রশ্নকারী হিসেবে। তিনি গভীর প্রশ্ন করতে পারদর্শী। তিনি সবাইকে নিজের পরিকল্পনা সম্পর্কে আরও গভীরভাবে ভাবতে উৎসাহিত করেন। তাতে যেটা ঘটে সেটা হলো, কোম্পানির সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া আরও সুচারু হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের সাক্ষাৎ

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ।

রবিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আরো পড়ুন:

‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’

‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’সহ ৩৮ দাবি সংবাদকর্মীদের 

সাক্ষাৎকালে বিএসআরএফের সভাপতি মাসউদুল হক জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিবালয় বিটে কর্মরত অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের সচিবালয়ের ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে পত্র পাঠানো হলেও এখনো তা বাস্তবায়িত হয়নি। 

তিনি অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের জন্য সচিবালয়ের ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা চালুর বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়া সচিবালয়ের ১ নম্বর গেটের পাশাপাশি ৫ নম্বর গেট দিয়েও অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের সচিবালয়ে প্রবেশের  ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান। 

এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বিএসআরএফের সভাপতির প্রস্তাব আন্তরিকভাবে বিবেচনা করার আশ্বাস দেন। 

সাক্ষাৎকালে বিএসআরএফের সহ-সভাপতি মাইনুল হোসেন পিন্নু, সাধারণ সম্পাদক উবায়দুল্লাহ বাদলসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/এএএম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ