টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ তুলে তাঁর কার্যালয়ে ঢুকে মারধর ও লাঞ্ছিত করেন কয়েকজন অভিভাবক। গত বুধবার দুপুরের ওই ঘটনার পর আজ রোববার ছিল প্রথম কার্যদিবস। কিন্তু আতঙ্কে তিনি বিদ্যালয়ে যাননি।

জানতে চাইলে ওই প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘মিথ্যা অভিযোগে মব ভায়োলেন্সের শিকার হয়েছি। আতঙ্কে তো আছিই। শিক্ষকনেতাদের নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব। পরে এ ব্যাপারে কী করা যায়, সিদ্ধান্ত নেব।’

প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, ‘এটি আমার বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র। আমার মেয়েকে স্থানীয় এক যুবক উত্ত্যক্ত করত। তাকে বিভিন্ন সময় বোঝানো হয়েছে। কথা না শোনায় তাকে শাসন করা হয়েছিল। সেই ছেলে ষড়যন্ত্র করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তদন্ত হলে সত্য বেরিয়ে আসবে।’

বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের এপ্রিলে ওই প্রধান শিক্ষক আকাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন। বুধবার দুপুরে হঠাৎ কয়েকজন নারী অভিভাবক তাঁর কক্ষে ঢুকে তাঁকে মারধর শুরু করেন এবং টেনেহিঁচড়ে তাঁর জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলেন। অভিভাবকদের অভিযোগ, ওই শিক্ষক তাঁদের সন্তানদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন। এ সময় বিদ্যালয়ের এক নারী সহকারী শিক্ষকসহ কয়েকজন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে অভিভাবকেরা তাঁদের ওপর ক্ষিপ্ত হন। পরে বিদ্যালয়ের মাঠে জড়ো হয়ে ওই নারীরাসহ অভিভাবকেরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আনজুম। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে অভিভাবকদের শান্ত করেন।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার আগে কোনো অভিভাবক বা শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষকের ব্যাপারে কখনো কোনো অভিযোগ করেনি। ওই দিন ১০–১৫ যুবক পাঁচ থেকে ছয় নারীকে নিয়ে বিদ্যালয়ে আসেন। যুবকেরা বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। নারীরা হঠাৎ প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ঢুকে মারধর শুরু করেন। এ সময় তাঁরা শিক্ষকের পরনের কাপড়ও ছিঁড়ে ফেলেন। পরে তাঁরা গিয়ে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে অভিভাবকদের কারও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জানতে চাইলে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জোবায়ের হোসেন জানান, তাঁর কাছে কেউ এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেননি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম ও নাজমুল ইসলামকে প্রাথমিক তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তে দুই ধরনের তথ্য উঠে এসেছে। কিছু অভিভাবক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সন্তানদের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ করেছেন। আবার প্রধান শিক্ষকের মেয়েকে উত্ত্যক্তের জেরে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তের প্রতিবেদন আজ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। অধিকতর তদন্তের জন্য তিনি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত ঘটন র সহক র তদন ত উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘মিমির মানবিক আচরণে চোখে পানি চলে এসেছিল’

ছোট্ট শহরের একটি স্কুল। ক্লাসরুমে বসে আছে দু’টি শিশু—তারা জানে না ভবিষ্যতে তারাই হবে দেশের সবচেয়ে প্রশংসিত অভিনয়শিল্পীদের একজন। হ্যাঁ, কথাটা শুনতে সিনেমার গল্প মনে হলেও বাস্তবেই এমন ঘটেছে অভিনেতা জাহিদ হাসান ও অভিনেত্রী আফসানা মিমির জীবনে।

সম্প্রতি একটি পুরোনো সাক্ষাৎকার নতুন করে ছড়িয়েছে। সেখানে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে দুজনেই জানান—তারা একসময় সিরাজগঞ্জের হৈমবালা উচ্চ বিদ্যালয়ে একই ক্লাসে পড়েছেন। তবে চমকপ্রদ ব্যাপার হলো, তখন তারা একে অপরকে চিনতেন না!

জাহিদ হাসান বলেন, “আমি ওই স্কুলে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছি। স্কুলটি মূলত মেয়েদের হলেও ছেলেরা সেখানে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়তে পারত। এরপর আমাকে অন্য স্কুলে ভর্তি হতে হয়। তখনই মিমির সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যায়, যদিও আদৌ পরিচয় ছিল কি না—তা নিয়েই সন্দেহ।”

আরো পড়ুন:

দূরদেশে তারকাদের ঈদ

লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত অভিনেত্রী সানা

পরবর্তীতে ৯০-এর দশকের শুরুর দিকে ঢাকায় থিয়েটার করতে গিয়ে আবার তাদের দেখা হয়। তখনই একে অপরকে নতুন করে চেনা, জানার সুযোগ হয়।

আফসানা মিমি বলেন, “আমরা যখন থিয়েটার করতাম, তখন থেকেই পরিচয়। তবে বন্ধুত্বটা ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে। আমি মনে করি, মঞ্চে জাহিদ যে কয়টা নাটকে অভিনয় করেছে, সেগুলো দেখে আমরা পাগল হয়ে যেতাম। তার অভিনয় ছিল অনন্য।”

জাহিদ হাসান বলেন, “আমরা থিয়েটারের প্রশিক্ষণে বিভিন্ন গ্রুপে কাজ করতাম। সেখানেই এক গ্রুপে দেখা হয় মিমির সঙ্গে। পরে একদিন হঠাৎ করেই জানতে পারি—আমরা তো এক স্কুলে, এমনকি একই ক্লাসেও পড়েছি! তখন থেকে বন্ধুত্বটা গভীর হতে শুরু করে।”

এই বন্ধুত্ব এখন শুধু ব্যক্তিগত নয়, পারিবারিক সম্পর্কে পরিণত হয়েছে। এ বিষয়ে জাহিদ হাসান বলেন, “আমি একবার অসুস্থ ছিলাম, মিমি নিজে না এলেও ড্রাইভার দিয়ে আমার জন্য খাবার পাঠিয়েছিল। ওর সে মানবিক আচরণে আমার চোখে পানি এসে গিয়েছিল। বন্ধু, বোন না পরিবারের সদস্য—আমি বুঝে উঠতে পারিনি।”

মিমি হেসে যোগ করেন, “সাদিয়া ইসলাম মৌকে জাহিদ যখন বিয়ে করল, তখন আমাদের বন্ধুত্ব যেন আরো একধাপ গভীর হলো। আজও যদি কোনো বিষয়ে মতবিরোধ হয়, মৌ সবসময় আমার পক্ষে দাঁড়ায়!”

প্রসঙ্গত, বহুদিন পর ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘উৎসব’ সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান ও আফসানা মিমি। সেখানে তাদের সঙ্গে আরো রয়েছেন জয়া আহসান, অপি করিম, চঞ্চল চৌধুরী ও আয়মান সাদিকসহ একঝাঁক তারকা। সিনেমাটির মতোই তাদের বাস্তব জীবনের সম্পর্কের গল্প যেন হয়ে উঠেছে এক নিটোল মধুর আখ্যান।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নেতানিয়াহুকে অভিযান চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করছি: ট্রাম্প
  • ‘মিমির মানবিক আচরণে চোখে পানি চলে এসেছিল’
  • ১১৮ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
  • ‘হায়া’ মানে শুধু শালীনতা নয়
  • এ পর্যন্ত ১১৮ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
  • যুবকদের মসজিদমুখী করার ৫টি উপায়
  • ইশরাক হোসেনের কাছে দায়িত্বশীল ও পরিপক্ব আচরণ প্রত্যাশা করব: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ