বিশ্বম্ভরপুরে ইউএনওকে নিয়ে দুপক্ষ মারমুখী
Published: 4th, May 2025 GMT
সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মফিজুর রহমানকে নিয়ে দুপক্ষের মারমুখী অবস্থান দেখা গেছে। আজ রোববার উপজেলা সদরে মানববন্ধন, মিছিল, ধাওয়া, পাল্টা-ধাওয়া এবং পাল্টা মানববন্ধন হয়েছে।
সকাল ১১টায় প্রথমে সচেতন উপজেলাবাসীর ব্যানারে কারেন্টের বাজারের বোয়াল চত্বরে মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, স্থানীয় পর্যটন কেন্দ্রগুলো অবহেলায় নষ্ট হয়েছে। মেরামতের কথা বললে ইউএনও বাজেট স্বল্পতার কথা জানান। অথচ, তার বাসভবনে ডাইনিং কক্ষ নির্মাণ হয়েছে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে। বাসভবনে পুকুর ঘাট তৈরিতে সাত লাখ টাকা ব্যয় করেছেন। তাঁর অফিসে ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে খাস কামরা তৈরি করেছেন। এগুলোসহ নানা প্রকল্প থেকে ইউএনও টাকা আত্মসাত করেছেন। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মো.
শফিকুল ইসলাম জনি বলেন, ‘সীমান্তে চোরাচালানে ইউএনওর আস্কারা আছে। তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। তার ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব যাচাই করলে অসংলগ্ন লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া যাবে।’
কারেন্টের বাজারে মানববন্ধন শেষে মিছিল নিয়ে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে যাচ্ছিলেন নাগরিকরা। পথে মাল্টিপারপাস সেন্টারের সামনে তাদের বাধা দেয় বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া, পালটা-ধাওয়া এবং হামলা হয়। সাংবাদিকদের দিকে তেড়ে এসে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে হামলাকারীরা।
এ দিকে বিকেলে উপজেলা সদরের বিপ্লবী চত্ত্বরে বিশ্বম্ভরপুর সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে পাল্টা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা হয়। উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন- শ্রমিক দলের মো. আবুল কালাম, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী শাহ্ রাকিব প্রমুখ।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক রাজু আহমেদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দোসররা বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে উপজেলা সদরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। বিএনপি কর্মীরা তাতে বাধা দেন। এ সময় হাতাহাতি হয়েছে। উপজেলা পরিষদ, থানায় যাতে বিশৃঙ্খলা না হয়, সেজন্য বিএনপি কর্মীরা দায়িত্ব পালন করেছে।’
ইউএনও মো. মফিজুর রহমান সমকালকে বলেন, ‘পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়নি। বরং নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্র করছি আমরা। হাওর বিলাসকে নতুন করে সাজানো হচ্ছে। সম্প্রতি মাল্টিপারপাস সেন্টার ইজারা দেওয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ দরদাতা ইজারা পেয়েছেন। এ নিয়ে সংক্ষুব্ধ কিছু ব্যক্তি বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করেছে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ ব এনপ উপজ ল ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
ড্রামে ২৬ টুকরা লাশ, দ্রুত বিচারের দাবিতে বদরগঞ্জে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ
ঢাকায় আলোচিত আশরাফুল হক হত্যা মামলার দ্রুত বিচার ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রংপুরের বদরগঞ্জে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। আজ রোববার বিকেলে উপজেলার গোপালপুর হাটে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
আশরাফুল হকের বাড়ি বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের শ্যামপুর নয়াপাড়া গ্রামে। ১১ নভেম্বর মালয়েশিয়াফেরত বন্ধু জরেজুল ইসলামের সঙ্গে তিনি ঢাকায় যান। ১৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর হাইকোর্ট-সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের পাশে একটি ড্রাম থেকে তাঁর ২৬ টুকরা খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ১৪ নভেম্বর আশরাফুলের বোন আনজিরা বেগম শাহবাগ থানায় মামলা করেন। পরে মামলায় প্রধান আসামি জরেজুল ও এক নারীকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আজ আশরাফুলের বাড়ির পাশে গোপালপুর হাটে এলাকাবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে গ্রামবাসী, ব্যবসায়ী ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। মানববন্ধনে গোপালপুর নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, গ্রামের বাসিন্দা আশিকুর রহমান, আবেদ আলী, এনামুল হক, নিহত আশরাফুলের বাবা আবদুর রশিদ, মা এছরা বেগম, স্ত্রী লাকী বেগম, বোন আনজিরা বেগমসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।
শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘২৬ টুকরা করে একজন মানুষকে হত্যা করার মতো নৃশংসতা এই এলাকায় কখনো দেখা যায়নি। এমন বর্বর হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত না হলে মানুষের আইনের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে যাবে।’
আশরাফুলের বাবা আবদুর রশিদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলেটা কিছুদিন আগেও আমার হাসপাতালের বেডে দাঁড়িয়ে ছিল। সেখানে জরেজ খুব তাগাদা দিচ্ছিল ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য। সে পরিকল্পনা করে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি বেঁচে থাকতে ছেলে হত্যার বিচার দেখে যেতে চাই।’
মা এছরা বেগম বলেন, ‘আমার বেটাক ডেকে নিয়ে এমনভাবে কেন মারল? আমার বুকটা খালি হয়ে গেল। হত্যার বিচার না হলে আমরা কেউ শান্তি পাব না।’
স্ত্রী লাকি বেগম আহাজারি করে বলেন, ‘জরেজ বলেছিল, আশরাফুল ব্যস্ত, পরে কথা হবে। পরে আর কথা হয়নি, লাশ হয়েছে। জরেজ পরিকল্পনা করে আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। এখন আমার স্বামীর চরিত্র নিয়ে টানাটানি করছে, অসত্য তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। তিনি সৎ ব্যবসায়ী ছিলেন। এলাকার মানুষ সবাই জানে।’
মানববন্ধন থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।