গাজীপুরে সাবেক তিন মন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের তিন শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
Published: 4th, May 2025 GMT
গত বছরের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় গাজীপুর নগরের কোনাবাড়ী থানায় নতুন করে একটি মামলা হয়েছে। এতে আসামি হিসেবে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ ২২৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ১৫০ জনকে।
গতকাল শনিবার রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার শিয়ালকোলা গ্রামের বাবুল হোসেনের ছেলে নুর মোহাম্মদ বাদী হয়ে মামলাটি করেন। আজ রোববার বিকেলে মামলার তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বাদী নূর মোহাম্মদ গত ৮ এপ্রিল গাজীপুর আদালতে হাজির হয়ে মামলাটির আবেদন করেন। পরে আদালতের বিচারক মামলার বিষয়ে শুনানি করে অভিযোগটিকে মামলা হিসেবে রেকর্ডের জন্য কোনাবাড়ী থানার পুলিশকে নির্দেশ দেন।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ছাড়াও সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমানের নির্দেশে বাসন থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল বারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রকিব সরকার, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শান্ত বাবু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. হীরা সরকারসহ সাড়ে তিন শতাধিক নেতা-কর্মী কোনাবাড়ী এলাকায় হামলা–ভাঙচুর করেন। এ সময় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। তাঁদের মধ্যে বাদী নিজেও ছিলেন।
কোনাবাড়ী থানার ওসি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় আর কোনো মামলা না নেওয়ার নির্দেশ থাকায় বাদী আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি করা হয়েছে। তবে ওই মামলায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আসামিরা সবাই পলাতক আছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
‘প্রশ্ন করতেই হবে’
সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের কারণে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা আরও দায়িত্বশীল আচরণ করতে বাধ্য হন বলে উল্লেখ করেছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেছেন, সংবাদমাধ্যমকে প্রশ্ন করতেই হবে, প্রশ্ন তুলতে হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সংবাদমাধ্যমের প্রশ্ন নিতে রাজি আছে।
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে রোববার ঢাকায় ‘ব্রেভ নিউ বাংলাদেশ: রিফর্ম রোডম্যাপ ফর প্রেস ফ্রিডম’ (সাহসী নতুন বাংলাদেশ: মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য সংস্কারের পথনকশা) শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে ইউনেসকো ঢাকা অফিস, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও সুইডেন দূতাবাস। রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমরা ন্যূনতম কিছুই করতে চাই না সংবাদমাধ্যমকে। সংবাদমাধ্যম যতটুকু যা ইচ্ছা লেখার অধিকার রাখে। সংবাদমাধ্যমকে অবশ্যই প্রশ্ন করতে হবে।’
তবে প্রশ্নের ক্ষেত্রে জবাবদিহি করাটাই মুখ্য নাকি আরও দশটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সেখানে থাকতে পারে, তা নিয়ে ভাবা দরকার বলে মনে করেন তথ্য উপদেষ্টা।
এরপরও প্রশ্ন করার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার প্রশ্ন নিতে রাজি আছে।’
সংবাদমাধ্যমের যাঁরা নীতিনির্ধারক আছেন, যেখান থেকে সংবাদ বা মতামত তৈরি হয়, সেটাকে অবশ্যই প্রশ্ন করার সুযোগ থাকা উচিত বলেও মনে করেন মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, সংসদ সদস্যদের প্রশ্ন করা যাবে, বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রশ্ন করা যাবে, গোয়েন্দা সংস্থাকে প্রশ্ন করা যাবে কিন্তু সাংবাদিকদের প্রশ্ন করা যাবে না—এই জিনিসটা থাকুক, তা তিনি চান না। বিগত সরকারের সময় গণমাধ্যমগুলোর কার্যকলাপ নিয়ে ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং’ দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুনগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা কার্যকরে দরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা১৬ মিনিট আগেসাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা নিয়ে সরকার বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছে বলেও সেমিনারে উল্লেখ করেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, যে অভিযোগটি সত্য, সে মামলা হচ্ছে না, দেওয়া হচ্ছে হত্যা মামলা। এটা নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সাংবাদিকতা সুরক্ষা আইন, বাসস, বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারকে একটি সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা, বিজ্ঞাপন হার মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য করা এবং মিডিয়া তালিকা ও লাইসেন্স পুনর্মূল্যায়ন নিয়ে সরকার কাজ করছে বলে জানান তথ্য উপদেষ্টা। পাশাপাশি মিথ্যা প্রচারসংখ্যা দেখিয়ে রাষ্ট্রের টাকা লুটপাটকারীদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, যার (সংবাদপত্র) প্রচারসংখ্যা দুই হাজারও না, তাদের এক–দুই লাখ দেখিয়ে যাঁরা রাষ্ট্রের টাকা লুটপাট করেছেন, তাঁদের তথ্য উন্মোচন করা হবে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ।