হেড অ্যান্ড নেক ক্যানসারে আক্রান্তদের মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পুরুষ, বাকি ২০ থেকে ৩০ শতাংশ নারী। ধূমপানের কারণে পুরুষদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। তবে এই ক্যানসার হলে স্টেজ ফোরের প্রাথমিক পর্যায় থেকেও রোগীকে সুস্থ করা সম্ভব।

কথাগুলো বলছিলেন টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যানসার মেডিসিন ও রেডিওথেরাপি–বিশেষজ্ঞ ডা.

এস এম নাজমুল আলম। ক্যানসার নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে এসকেএফ অনকোলজির নিয়মিত আয়োজন ‘বিশ্বমানের ক্যানসার-চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় অতিথি ছিলেন তিনি। এবারের পর্বে আলোচনা করা হয় হেড অ্যান্ড নেক ক্যানসারের ঝুঁকি, চিকিৎসা, স্ক্রিনিং ও প্রতিরোধ নিয়ে। অনলাইন আলোচনার উপস্থাপনা করেন নাসিহা তাহসিন।

অনুষ্ঠানটি গত বুধবার সরাসরি সম্প্রচারিত হয় প্রথম আলো ডটকম এবং প্রথম আলো, এসকেএফ অনকোলজি ও এসকেএফের ফেসবুক পেজে।

আলোচনার শুরুতেই উপস্থাপক জানতে চান, কারা হেড অ্যান্ড নেক ক্যানসারের ঝুঁকিতে রয়েছেন? উত্তরে ডা. এস এম নাজমুল আলম বলেন, সাধারণত হেড অ্যান্ড নেক ক্যানসার বলতে মানুষের মাথা থেকে ঘাড় পর্যন্ত নাক, নাকের গহ্বর, সাইনাস, ঠোঁট, জিহ্বা, মাড়ি, গালের ভেতরের অংশ, মুখের তালু, গলা, কণ্ঠনালি, শ্বাসনালির ওপরে, খাদ্যনালি, টনসিল, লালাগ্রন্থি ইত্যাদি অংশের ক্যানসারকে বোঝানো হয়। তিনি বলেন, এবার আসি কারা ঝুঁকিতে সে বিষয়ে। মূলত যাঁরা ধূমপান, মদ্যপান, পান-জর্দা, তামাক-গুল সেবন করেন, অনিয়ন্ত্রিত জীবনাচরণ রয়েছে, কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য ও রেডিয়েশনের সংস্পর্শে থাকেন এবং পরিবারের কারও আগে এ ধরনের ক্যানসার হয়েছে তাঁরা এর ঝুঁকিতে আছেন। এ ছাড়া ‘হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসে’ আক্রান্ত হলেও এই ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি থাকে।

নাজমুল আলম বলেন, হেড অ্যান্ড নেক ক্যানসারে আক্রান্তদের মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পুরুষ, বাকি ২০ থেকে ৩০ শতাংশ নারী। যাঁদের বয়স ৫০ বছরের বেশি।

সম্পূরক প্রশ্ন হিসেবে উপস্থাপক জানতে চান, নারীরাই পান বেশি খান আর ধূমপান পুরুষেরাই বেশি করেন। তাহলে ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যায় এত পার্থক্য কেন?

উত্তরে নাজমুল আলম বলেন, নারীরা গুল বা পান বেশিক্ষণ মুখে রাখার কারণে তাঁদের জিহ্বা ও মুখগহ্বরের ক্যানসার হচ্ছে। কিন্তু পুরুষেরা ধূমপানের কারণে হেড অ্যান্ড নেকের বাকি অংশগুলোতে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই এ ধরনের ক্যানসারে নারীদের তুলনায় পুরুষদের আক্রান্তের হার বেশি।

পারিবারিক ইতিহাসের সঙ্গে এ ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার প্রভাব সম্পর্কে ডা. নাজমুল আলম বলেন, অন্যান্য ক্যানসারের মতো এ ক্ষেত্রেও এটি গুরুত্বপূর্ণ। তবে এর প্রভাবটা অতটা মারাত্মক নয়।

হেড অ্যান্ড নেক ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণগুলো সম্পর্কে ডা. নাজমুল আলম বলেন, এ ধরনের ক্যানসার বিস্তৃত জায়গাজুড়ে হয়ে থাকে। তাই স্থানভেদে এর লক্ষণ একেক জায়গায় একেক রকম হয়ে থাকে। যদি মোটাদাগে বলা যায়, গলায় দীর্ঘ সময় ধরে ব্যথা, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, শ্বাস নিতে গেলে শব্দ হওয়া, গন্ধের অনুভূতি কমে যাওয়া, অতিমাত্রায় কাশি, গালে, জিহ্বায় বা মুখগহ্বরে কোথাও কোনো সাদা বা লাল ক্ষত হওয়া, দীর্ঘদিন সর্দি, নাক থেকে রক্তক্ষরণ, গলার স্বর পরিবর্তন হয়ে যাওয়া, কথা বলতে কষ্ট হওয়ার মতো লক্ষণ থাকতে পারে। এ ছাড়া মুখের কোনো অংশ যেমন চোখের ওপরে, ঘাড়ে, গলায়, নাকের চারপাশ, কানের আশপাশ বা চোয়াল ফুলে যাওয়া বা মুখের এক পাশ ফুলে যাওয়া, মুখে ব্যথা, মুখ খুলতে সমস্যা, কানে ব্যথা, এক কানে শুনতে সমস্যা, দাঁতে ব্যথার মতো লক্ষণও প্রকাশ পেতে পারে। যদি দেখা যায় এ ধরনের লক্ষণ দুই সপ্তাহেও সারছে না, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

প্রসঙ্গক্রমে উপস্থাপক জানান, এসকেএফ অনকোলজি বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র ইউজিএমপি ও অ্যানভিজা ব্রাজিল অনুমোদিত প্ল্যান্ট। ফলে এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রায় ২৭টি দেশে এবং দক্ষিণ আমেরিকায় রপ্তানি হচ্ছে। এ ছাড়া এসকেএফ অনকোলজির সারা দেশে রয়েছে ৩৩টি সেবাকেন্দ্র, যার মাধ্যমে ক্যানসারের ওষুধ পাওয়া যায়। শুধু তা-ই নয়, ঘরে বসে অর্ডার করলেই বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্তে সহজেই ওষুধ পৌঁছে দেওয়া হয়।

আলোচনার এ পর্যায়ে হেড অ্যান্ড নেক ক্যানসারের স্ক্রিনিংয়ের ধরন সম্পর্কে জানতে চান উপস্থাপক। উত্তরে ডা. নাজমুল আলম বলেন, এ ধরনের ক্যানসারের স্ক্রিনিং প্রতিবছর করতে হয়। এ সময়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের কাছে গিয়ে দাঁতের পাশে অস্বাভাবিক কিছু আছে কি না, মুখের পাশে কোনো আলসার আছে কি না, এমন ক্ষত যা সহজে শুকাচ্ছে না অর্থাৎ সিম্পল ফিজিক্যাল এক্সামিনেশনের মধ্য দিয়ে স্ক্রিনিংটা করতে হয়। তিনি বলেন, ‘সাধারণত জিহ্বা বা মুখগহ্বরে ক্যানসারের আশঙ্কা মনে হলে “পাঞ্চ বায়োপসি” নামে একটা পরীক্ষা করা হয়। নাকে হলে যেটা “বায়োপসি” এবং স্বরযন্ত্রে হলে সেটা “ডিএল বায়োপসি”র মাধ্যমে নির্ণয় করি। যদি কোনো টিউমার বা অতিরিক্ত মাংসপিণ্ড পাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে আরও কিছু পরীক্ষা হয়। সিটি স্ক্যান ফেসের নেক, এমআরআই অব দ্য ফেসের মাধ্যমে নির্ণয় করা হয় ক্যানসার ওই জায়গাতেই আছে নাকি ছড়িয়ে পড়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যদি ছড়িয়ে পড়ে সে ক্ষেত্রে বর্তমান অবস্থার জন্য বুকের সিটি স্ক্যান, এন্ডোস্কপি, ফাইবার অব টিকলারিঙ্গস্কপি এবং পেট সিটি স্ক্যান ইত্যাদির মতো আধুনিক পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যানসারটি সম্পর্কে জানতে পারি।’

বাংলাদেশে হেড অ্যান্ড নেক ক্যানসারের বর্তমান পরিস্থিতি, স্ক্রিনিং, সচেতনতা ও চিকিৎসাপদ্ধতি ইত্যাদি বিষয়ে পরামর্শ দেন ডা. এস এম নাজমুল আলম

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দারিদ্র্য থাকলে গণতন্ত্র আসবে না

গণতন্ত্র ও দারিদ্র্য যেমন একে অপর থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র স্বভাবের, তেমনি উভয়ের মধ্যে শত্রুতা একেবারেই স্বভাবগত। গণতন্ত্রের একটি মূল বিষয় হচ্ছে অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া। কিন্তু দরিদ্র মানুষ কী ভাগ করবে, অভাব ছাড়া? অভাব তো অবিভাজ্য, যারটা তারই থাকে, ভাগ করতে গেলে নেওয়ার লোক পাওয়া যায় না খুঁজে। নাম শুনলেই দৌড়ে পালায়। গণতন্ত্র প্রকাশ্য, আবার গোপনীয়। গণতন্ত্র সবল, দারিদ্র্য দুর্বল। গণতন্ত্র মানুষকে মেলায়; দারিদ্র্য বিচ্ছিন্ন করে। গণতন্ত্র জগৎমুখী, দারিদ্র্য আত্মমুখী। গণতন্ত্র আলাপ করে; দারিদ্র্য করে কলহ। না; গণতন্ত্র ও দারিদ্র্য কিছুতেই একসঙ্গে থাকতে পারে না। তার চেয়েও বড় কথা, দারিদ্র্য থাকলে গণতন্ত্র থাকে না; থাকতে পারে না। কেবল যে ভোট কেনাবেচা কিংবা ছিনতাই হয়, তা-ই নয়। মানুষ মানুষে মিলনটাই গড়ে ওঠে না। গৃহহীনরাই সবচেয়ে বড় গৃহী, তারা কেবলই গৃহ খুঁজে বেড়ায়; উন্মুক্ত প্রান্তরে ছুটে আসে।

কিন্তু দারিদ্র্যের কারণ কী– সেটা এটা এনজিও কিংবা শাসক শ্রেণি বলেন না। বলেন যখন, তখন আসল কথা না বলে আজেবাজে কথা বলেন। মুখ্যকে গৌণ করে, গৌণকেই ধরে টানাটানি করেন। বলেন, দারিদ্র্যের কারণ আমাদের আলস্য। আমরা কাজ করি না। ফাঁকি দিই। বলেন, দারিদ্র্যের কারণ আমাদের জনসংখ্যা। এত মানুষ, এদের কে খাওয়াবে? যা আছে খাওয়াতেই শেষ; উন্নতি কী করে হবে? কী করে ঘুচবে দারিদ্র্য? কেউ বলেন, অন্য কিছু নয়, দায়ী আমাদের দুর্নীতি। চোর। চোরে ছেয়ে গেছে দেশ। চাটার দল। বেত চাই। বেতাতে হবে। এসব বলেন, কিন্তু দারিদ্র্যের আসল কারণটা দেখেন না বা দেখলেও মানতে চান না।

অন্য কারণ অবশ্যই রয়েছে, কিন্তু আসল কারণ হচ্ছে বৈষম্য। এই বৈষম্যই দারিদ্র্য সৃষ্টি করছে এবং করেছে। না; দারিদ্র্য বৈষম্য সৃষ্টি করেনি। উল্টোটাই সত্য। বলা হবে এবং হচ্ছে, প্রতিযোগিতা থাকা ভালো। হ্যাঁ, তা ভালো বৈকি। প্রতিযোগিতা ছাড়া উন্নতি নেই। কিন্তু কার সঙ্গে কার প্রতিযোগিতা, সেটা তো দেখতে হবে। হাত-পা বেঁধে পানিতে ফেলে দিয়ে যদি বলি, তুমি আমার সঙ্গে সাঁতরাও দেখি, পাল্লা দাও। তাহলে লোকটি তো পারবে না, ডুবেই মরবে। সাঁতরাতে বলার আগে তার হাত-পায়ের বন্ধনগুলো কাটতে হবে; তাকে মুক্ত করতে হবে। তবেই সাঁতারের প্রশ্নটা উঠবে, নইলে তা নিষ্ঠুর বিদ্রুপ ছাড়া আর কী! দেশের অধিকাংশ মানুষ এই হাত-পা বাঁধা অবস্থায় রয়েছে। তারা নিক্ষিপ্ত হয়েছে দারিদ্র্যের জলাশয়ে। তাদের অবস্থা সাঁতরে তীরে ওঠার নয়; ডুবে মরার।
দেশে যে বৈষম্য রয়েছে, তার দরুন অধিকাংশ মানুষ নিজেকে উৎপাদনশীল কাজে যুক্ত করতে ব্যর্থ হচ্ছে। জনসংখ্যা বোঝা হয়ে উঠছে; তাকে সম্পদে পরিণত করা যাচ্ছে না। শিক্ষা কর্মসূচি ভেঙে পড়ছে। কাজ নেই। অদক্ষ লোকে দেশ ছেয়ে যাচ্ছে।

পুঁজি যা রয়েছে তা অল্প কিছু লোকের হাতে। এই লোকেরা দেখছে, দেশের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। তাই পুঁজি বিনিয়োগ না করে তারা বিদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এই ধনীরাই আবার আমদানি করছে বিদেশি জিনিসপত্র। ব্যবস্থা করছে চোরাচালানের। ফলে দেশীয় পণ্যের বাজার গড়ে উঠছে না। ধনীদের মধ্যে দেশপ্রেম ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। তারা আবার দ্রুতগতিতে ভোগবাদিতার পথে এগোচ্ছে। প্রতিযোগিতা উৎপাদনের নয়; ভোগের। পুঁজির সঞ্চয় বিঘ্নিত হচ্ছে এভাবে– পদে পদে।


বাংলাদেশের মূল সমস্যা হলো বৈষম্য। দারিদ্র্য এই বৈষম্য থেকেই সৃষ্টি। ধনী গরিবকে শোষণ করে; গরিবকে কর্মক্ষম হতে দেয় না এবং ধনী শোষণ করে, যা পায় তা ভোগ করে এবং যা বাঁচে তা বিদেশে পাঠিয়ে দেয়। গরিব মানুষ অন্য কিছু উৎপাদন করতে পারে না, হতাশা ও সন্তান ভিন্ন। ফলে সে আরও গরিব হয়। অপরাধ বাড়ে। বাড়ছে, আরও বাড়বে। বিদেশনির্ভরতা বাড়ে। বাড়ছে, আরও বাড়বে। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের ছবি। অন্য সমস্যা রয়েছে হাজারে হাজার। কিন্তু সবই বৈষম্যের সঙ্গে বাঁধা। আসল গ্রন্থিটা ওখানেই।
আর গণতন্ত্রের কথা যে বলি, তার মূল কথাই হলো অধিকার ও সুযোগের সাম্য। এ না থাকলে গণতন্ত্র থাকার প্রশ্নই ওঠে না। ওই অধিকার ও সুযোগের সাম্য বাংলাদেশে কী পরিমাণে রয়েছে তার যদি হিসাব করি তাহলেই জানতে ও বুঝতে পারব, বাংলাদেশে গণতন্ত্র কতটা আছে বা তার ভবিষ্যৎ কী?

বৈষম্য ইংরেজ আমলে ছিল। ইংরেজ ও বাঙালি এক ছিল না। বৈষম্য পাকিস্তান আমলে ছিল। পাঞ্জাবি ও বাঙালি এক ছিল না। বৈষম্য বাংলাদেশ আমলেও রয়েছে। বাঙালি ও বাঙালি এক নয়। মূল তফাৎ অর্থনৈতিক। আমরা ইংরেজ হটিয়েছি, পাকিস্তানিদের তাড়িয়েছি। তবু বৈষম্য দূর করতে পারিনি। সে জন্যই দুর্দশা ঘুচছে না। স্বস্তি নেই, অগ্রগতিও নেই। এগোতে হলে দু’পায়ে হাঁটতে হয়। একটি পা যদি খোঁড়া থাকে, তাহলে যা করা যায় তাকে হাঁটা বলা চলে না। অথচ আমরা দৌড়াচ্ছি। আশঙ্কা রয়েছে, অচিরেই ক্লান্ত হয়ে বসে পড়ব।
দারিদ্র্য ঘোচানোর চেষ্টা যে নেই, তা নয়। আছে; সরকারি উদ্যম আছে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। কারণ দারিদ্র্যের আসল কারণ যে বৈষম্য, তা কমিয়ে আনার চেষ্টা নেই। রোগের কারণ না জেনে লক্ষণ ধরে টানাটানি করলে রোগ সারবে কি? সারবে যে না– তা তো দেখতেই পাচ্ছি।

আমরা গণতন্ত্র চাই। কিন্তু গণতন্ত্র আসবে না দারিদ্র্য থাকলে। আর দারিদ্র্য যাবে না বৈষম্য থাকলে। পরস্পরটি এই রকমেরই। পাকিস্তান আমলে ২২ পরিবার শোষণ করত; এখন করে ২২শর বেশি পরিবার এবং এরা পরিচয়ে বাঙালি। এই পরিচয়ের গৌরব নিয়ে গরিব বাঙালি যে আহ্লাদে আটখানা হবে, তার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। লক্ষণ বরঞ্চ উল্টো রকম। বিস্ফোরণোন্মুখ। যাত্রা বৈষম্য নিরসনের দিকে নয়। যাত্রা উল্টোদিকে, তাই বিস্ফোরণের আশঙ্কা বাড়ছেই; কমছে না– এটা যেন না ভুলি। অনেকেই ভাবেন, পালাবেন। কিন্তু পালাবেন কোন পথে; কোন সীমান্ত পার হয়ে; কোন সমুদ্র সাঁতরে?

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী: ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ