মহাসমাবেশে দুই বক্তার ‘আপত্তিকর’ শব্দচয়নের জন্য দুঃখ প্রকাশ হেফাজতের
Published: 6th, May 2025 GMT
ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৩ মের মহাসমাবেশে দুই বক্তার ‘আপত্তিকর’ শব্দচয়নের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
আজ মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দুঃখ প্রকাশ করেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। বিবৃতিতে তিনি বলেন, কোনো আপত্তিকর শব্দ হেফাজতে ইসলাম সমর্থন করে না।
বিবৃতিতে আজিজুল হক বলেন, ‘আমাদের মহাসমাবেশে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে দুজন বক্তা আপত্তিকর শব্দচয়ন করেছেন, যা আমরা সমর্থন করি না। কেউ এতে আহত হলে তাদের প্রতিও আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’
আলেম-ওলামাদের নিয়ে আপত্তিকর শব্দচয়ন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান আজিজুল হক। তিনি বিবৃতিতে বলেন, একই সঙ্গে সেক্যুলার প্রগতিশীল ঘরানার যাঁরা এতকাল আলেম-ওলামাকে বিদ্বেষমূলকভাবে ‘জঙ্গি’, ‘মৌলবাদী’, ‘ধর্ম ব্যবসায়ী’ ও ‘সাম্প্রদায়িক’ বলে কটাক্ষ করে এসেছেন, তাঁদেরও তাঁরা এ ধরনের আপত্তিকর শব্দচয়ন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। আর শাপলা চত্বরের গণহত্যায় আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শক্তিকে কারা উৎসাহ দিয়েছিল, তা তাঁরা ভুলে যাননি।
আরও পড়ুনহেফাজতে ইসলামকে আইনি নোটিশ দিলেন এনসিপির তিন নেত্রীসহ ৬ নারী১৭ ঘণ্টা আগেআজিজুল হক তাঁর বিবৃতিতে বলেন, ‘নারীর প্রতি আমাদের ঘৃণার প্রশ্নই আসে না। মতাদর্শিক লড়াইকে “নারীর প্রতি ঘৃণা” আকারে দেখাটা স্রেফ মূর্খতা। আমরা আবারও বলছি, যার যার ধর্মীয় বিধান অনুসারে নারীর ন্যায্য অধিকার রক্ষায় আমরাও সংস্কারকাজে সম্পৃক্ত হতে আগ্রহী। কিন্তু শুরুতেই আলেম-ওলামা ও অন্যান্য ধর্মীয় বিশেষজ্ঞকে বাদ দিয়ে একদল এনজিওবাজ নারীবাদীকে নিয়ে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করা হলো। যার ফলে এমন একচেটিয়া প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে, যেখানে সেক্যুলার প্রগতিশীল নারীসমাজের স্বার্থ ও মতাদর্শ রক্ষিত হলেও ধর্মপ্রাণ বৃহত্তর নারীসমাজের ধর্মীয় চিন্তা ও বিবেচনা উপেক্ষিত হয়েছে। এই বৈষম্য মেনে নেওয়ার সুযোগ নেই।’
ধর্মীয় ইস্যুতে বাড়াবাড়ি করলে ছাড় দেওয়া হবে না বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন আজিজুল হক। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘উগ্র ইসলামবিদ্বেষী গোষ্ঠী কর্তৃক আমাদের “নারীবিদ্বেষী” অপবাদ দেওয়ার অপরাজনীতি বহু পুরোনো। অথচ দেশজুড়ে আমাদের নারী কওমি মাদ্রাসাগুলোয় প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য হারে ছাত্রীসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি বরাদ্দমুক্ত এসব মাদ্রাসায় সমাজের হাজার হাজার প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত মেয়ের জন্যও বিনা মূল্যে থাকা-খাওয়া, নিরাপত্তা ও ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ফলে এ দেশের নারীদের স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধিতে আমাদেরও উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। কিন্তু কখনো আলেম-ওলামার সামাজিক অবদানের স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। আর আমাদের এই সামাজিক ভূমিকা ও ধর্মীয় অবস্থান আধুনিক ব্যবস্থায় এ দেশের নারীকে “পণ্য” বানানোর পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়নের অন্তরায় বলেই সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী আমাদের বিরুদ্ধে একদল উগ্র নারীবাদীকে লেলিয়ে দিয়েছে বলে আমরা মনে করি। কিন্তু ধর্মীয় ইস্যুতে বাড়াবাড়ি করলে আমরা ছাড় দেব না।’
আরও পড়ুননারীবিষয়ক কমিশন বাতিলসহ সব দাবি না মানলে দেশ অচলের হুঁশিয়ারি হেফাজতের০২ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
উদ্ভাবিত কার নিয়ে চীনা প্রতিযোগিতায় যাচ্ছেন আইইউটি শিক্ষার্থীরা
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় অব টেকনোলজির (আইইউটি) একদল শিক্ষার্থী ৩ বছর চেষ্টার পর ফর্মুলা-স্টাইল কার তৈরি করেছেন। সফলভাবে তারা এই গাড়ি তৈরি করতে পারায় আনন্দিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আগামী মাসে শিক্ষার্থীদের নিজের ডিজাইনে তৈরি এ ফর্মুলা-স্টাইল রেস কার চীনে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে। এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে বাংলাদেশ, রাশিয়া, ইতালি, চীনসহ ১৪টি দেশ।
আরো পড়ুন:
কুড়িগ্রামে হয়ে গেল কলাগাছের ভেলার বাইচ প্রতিযোগিতা
রাবিতে প্রযুক্তি প্রেমীদের নিয়ে ‘রোবটিড ২.০’
শিক্ষার্থীরা জানান, গাড়িটিতে ব্যবহৃত হয়েছে KTM Duke 390 ইঞ্জিন (৩২ কিলোওয়াট, ৩৫ নিউটন-মিটার টর্ক), স্টেইনলেস স্টিল ওয়েল্ডেড স্পেসফ্রেম চ্যাসি, ডাবল এ-আর্ম সাসপেনশন এবং ৯১ অকটেন জ্বালানি।
গাড়িটির দৈর্ঘ্য ৩১৮১ মিমি, প্রস্থ ১৪০৯ মিমি এবং উচ্চতা ১০৩৯ মিমি। আইইউটির মেকানিকাল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীদের এ দলটি যাত্রা শুরু করেন ২০২১ সালে। ইতোমধ্যে তারা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। ফর্মুলা ভারত ২০২৩ (কনসেপ্ট ক্লাস)-এ তৃতীয় স্থান এবং ফর্মুলা ইম্পেরিয়াল ২০২৪-এ সপ্তম স্থান অর্জন করেন তারা।
শিক্ষার্থী ও টীম লিডার আনসানুল আমীন বলেন, “এবার আমরা প্রথমবারের মতো সরাসরি অংশ নিচ্ছি ফর্মুলা স্টুডেন্ট চায়নাতে (FS China), যা এশিয়ার অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ ফর্মুলা স্টুডেন্ট প্রতিযোগিতা। আমাদের লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করে অভিজ্ঞতা অর্জন, প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সেরা দলের মধ্যে অবস্থান নিশ্চিত করা। ভবিষ্যতে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিযোগিতামূলক গাড়ি তৈরি করে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করাই আমাদের লক্ষ্য।”
মেকানিকাল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আহসান হাবিব বলেন, “আমাদের শিক্ষার্থীরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে এ সফলতা অর্জন করেছে। চলতি মাসেই তারা গাড়িটির সফল হয়েছে। এখন গাড়িটি প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত। তারা দেশের বাহিরে প্রতিযোগিতায় যাচ্ছে, এটি যেমন শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা বাড়াবে, তেমনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের জন্য গৌরবের।”
আগামী অক্টোবর মাসের ৮-১২ তারিখ চীনে অনুষ্ঠিত হবে শিক্ষার্থীদের এ কার প্রতিযোগিতা। আগামী সপ্তাহে গাড়িটি বিমানে পাঠানো হবে। আইইউটি থেকে ৪০ সদস্যের একদল শিক্ষার্থী ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিবে। তাদের বানানো গাড়ি নিয়ে যেমন আশাবাদী ও আনন্দিত। বিশ্ব পরিমণ্ডলে নতুন কিছু চেখার পাশাপাশি দেশের মানচিত্র উজ্জ্বল করতে চান তারা।
ঢাকা/রেজাউল/মেহেদী