পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি চায়। এখানে কোনো সংঘাত হোক, তা চায় না। তবে ভারত কিছু না বললে আগবাড়িয়ে কিছু বলার প্রয়োজন দেখছে না বাংলাদেশ। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার গতকাল সোমবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.

তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। টেলিফোন আলাপে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের অপ্রমাণিত অভিযোগ এবং সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতসহ একতরফাভাবে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষের কারণে সৃষ্ট আঞ্চলিক উত্তেজনার বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।

ইসহাক দারের সঙ্গে ফোনালাপ নিয়ে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় কোনো ধরনের সংঘাত চায় না ঢাকা। বাংলাদেশ চায়, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান হোক। ঘটনা যা ঘটেছে আর পাকিস্তান কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, সেটি অবহিত করার জন্য পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফোন করেছিলেন।

পাকিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের কাছ থেকে সহযোগিতা চেয়েছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার কাছে তিনি কোনো সহযোগিতা চাননি। বাংলাদেশ চায় যে শান্তি বজায় থাকুক। উত্তেজনা প্রশমনে যাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। উত্তেজনা বাড়তে পারে, এমন কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে, এটাই বাংলাদেশের প্রত্যাশা। আমরা চাই যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান হোক।’

এই অঞ্চলে শান্তির বিষয়ে পাকিস্তানকে যে বার্তা দেওয়া হয়েছে, সেটা ভারতকে দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা আমি জানি না। যদি দিল্লি আমার কাছে জানতে চায়, তাহলে আমি একই কথা বলব। তবে তারা না চাইলে আমার তো আগবাড়িয়ে কিছু বলার প্রয়োজন নেই। ইসলামাবাদ থেকে যেহেতু ফোন এসেছে, তাই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে বাংলাদেশ শান্তি চায়, আমরা চাই না এখানে কোনো সংঘাত হোক।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানে ভারতের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প বললেন, এটা দুঃখজনক

পাকিস্তানে ভারতের হামলা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “এটা দুঃখজনক।”

ওয়াশিংটন ডিসির হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, “আমরা ঠিক ওভাল অফিসে প্রবেশ করার সময় এই খবর পেলাম।”

ট্রাম্প বলেন, “আমি শুধু আশা করি, এটা খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাক।”

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানের ৯টি স্থানে হামলা চালানো হয়েছে: ভারত

ভারতের দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের

৭ মে রাতে বিবিসির খবরে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যকার উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করছিল ট্রাম্প প্রশাসন। পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করে হামলায় হতাহতের জন্য সহমর্মিতা প্রকাশ করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে দুই দেশ যুদ্ধে জড়াক, তা তিনি চাননি। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, সেজন্য দুই দেশের শীর্ষ কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্পের প্রতিনিধি। অবশেষে পাকিস্তানে হামলা চালাল ভারত।

বিবিসি লিখেছে, ভারত সরকার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তাতে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ৯টি স্থানে হামলা চালানো হয়েছে।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে অবশ্য বলা হয়েছে, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানের ৫টি স্থানে আঘাত করেছে।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন লিখেছে, ৭ মে গভীর রাতে ভারতের এই হামলায় পাকিস্তানের অন্তত তিনজন নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। 

বিবিসি লিখেছে, ভারত সরকার বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে একটি সামরিক অভিযান চালিয়েছে, যার লক্ষ্য পাকিস্তান ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে অবস্থিত ‘সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামো’, যেখান থেকে ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা ও হামলা পরিচালিত হচ্ছে।

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে ২২ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ২৬ জন, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক। এই হামলায় পাকিস্তানের দায় দেখছে ভারত। নয়াদিল্লির অভিযোগ, সন্ত্রাসীদের মদদ দেয় ইসলামাবাদ। এর প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। 

সেই থেকে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। সেই উত্তেজনার মধ্যেই ৭ মে গভীর রাতে পাকিস্তানের ৯টি স্থানে হামলা করল ভারত। এখন পাকিস্তান কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায় বা জবাব দেয়, তারপর ওপর নির্ভর করছে বাকিটা।

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ