রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পৃথক ঘটনায় তিন শিক্ষার্থীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে খিলগাঁও, যাত্রাবাড়ী ও বাড্ডা থানা এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, গতকাল রাতে খিলগাঁওয়ের রসুলবাগ এলাকায় শিহাবুল ইসলাম (২৪) নামে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। রাতে দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। পরীক্ষা–নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

শিহাবুলের বড় বোন উম্মে সাইমা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। একটি সেমিস্টারে পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থেকে তিনি উদ্বেগে ছিলেন। এর জেরে আত্মহত্যা করেছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো.

ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে। থানা-পুলিশ পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এদিকে খিলগাঁওয়ের উত্তর গোড়ানের নবীনবাগ এলাকায় সামিয়া আক্তার (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রী বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশকে জানিয়েছে তার পরিবার। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইলিয়াস মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে সামিয়াকে পরিবারের সদস্যরা মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তার লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।

এর আগে গতকাল যাত্রাবাড়ীর কাজলার ভাঙা এলাকার মাদবর গলির একটি বাসা থেকে প্রিয়ন্তী সরকার (১৪) নামের দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলে পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে জানিয়েছেন।

যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, লেখাপড়া নিয়ে শাসন করায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অভিমান করে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র সদস ম ড ক ল কল জ প রথম আল ক এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁদাবাজি-লুটপাটের অভিযোগ, কলাবাগান থানার ওসি-এসআই সাময়িক বরখাস্ত

রাজধানীর কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামান ও উপপরিদর্শক (এসআই) বেলাল উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

গতকাল রোববার ওসি মোক্তারুজ্জামান ও এসআই বেলালকে সাময়িক বরখাস্ত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী। কলাবাগান থানা এলাকার বাসিন্দা আবদুল ওয়াদুদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই দুজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় বলে ডিএমপি সূত্র জানায়।

আবদুল ওয়াদুদ ২ মে ডিএমপি কমিশনার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন। ‘সন্ত্রাসীদের’ সঙ্গে নিয়ে গত ২৯ এপ্রিল রাতে তাঁর বাসায় কলাবাগান থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে অর্থ আদায় করে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি চাঁদাবাজির পাশাপাশি বাসায় ভাঙচুর-লুটপাটের অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে মোক্তারুজ্জামান ও বেলালের নাম উল্লেখ করে এ ঘটনার সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন আবদুল ওয়াদুদ। পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি ডিএমপির কমিশনারের কাছে আবেদন জানান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আজ সোমবার দুপুরের দিকে মোক্তারুজ্জামান ও বেলালের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। তাঁদের মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু তাঁরা সাড়া দেননি।

এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) এস এন মো. নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গত ২৯ এপ্রিল কলাবাগানের একটি বাসায় ‘মবের’ ঘটনা ঘটেছিল। সেটা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় দুজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

তবে ডিএমপির একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগকারী ব্যক্তির বাসায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যাতায়াত করতেন। তাই তাঁর বাসায় স্থানীয় লোকজন ও কলাবাগান থানার পুলিশ গিয়েছিল। স্থানীয় লোকজন বাসায় ভাঙচুর চালান। কলাবাগান থানার ওসি ওই বাসার মালিককে ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন।

আবদুল ওয়াদুদ তাঁর অভিযোগে বলেন, ২৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে এসআই বেলালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও অন্তত ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী তাঁর বাসায় জোর করে ঢুকে পড়েন। তাঁর ম্যানেজার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে শাহবাগ ও নিউমার্কেট থানার টহল টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে। তবে কলাবাগান থানার ওসি (মোক্তারুজ্জামান) নিজে উপস্থিত থেকে অন্য থানার পুলিশের টিমকে চলে যেতে বলেন। এ সময় লাল মিয়া নামের এক ষাটোর্ধ্ব ভাড়াটে ও নাইটগার্ড লুৎফরকে নিজেদের গাড়িতে তুলতে নির্দেশ দেন ওসি। পুরো ঘটনার ভিডিও ও সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ রয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, তৃতীয় তলার দরজা ভাঙার চেষ্টা চলাকালে তিনি ওসিকে ফোনে সহায়তা চাইলে তাঁকে (আবদুল ওয়াদুদ) থানায় যেতে বলা হয়। তিনি দরজা খুললে পুলিশসদস্যরা তাঁকে ঘরের ভেতরে টেনে নেন। তাঁর কাছে অস্ত্র ও টাকা কোথায় আছে, তা জানতে চাওয়া হয়। একপর্যায়ে পুলিশসদস্য মান্নান তাঁকে বলেন, এই মুহূর্তে এক কোটি টাকা দিলে থানায় যেতে হবে না। পরে দেনদরবার করে তিনি বাধ্য হয়ে দুই লাখ টাকা দেন। ব্যাংক খুললে বাকি টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন। রাতভর অভিযানে পুলিশসদস্যরা তাঁর বাসা থেকে ল্যাপটপ, সিসিটিভির হার্ডডিস্ক, কম্পিউটারসহ বেশ কিছু মালামাল নিয়ে যান। পরে ওসি একটি ল্যাপটপ ফেরত দেন। বাকি কোনো কিছুই তিনি ফেরত পাননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাসা থেকে পুলিশের পিস্তল-গুলি চুরি, এসআই সাসপেন্ড
  • পুলিশ কর্মকর্তার বাসা থেকে পিস্তল-গুলি চুরি
  • চৌগাছায় আসামি ধরতে গিয়ে হামলায় আহত ওসিসহ ৭ পুলিশ
  • চুয়াডাঙ্গার কোন আম কখন বাজারে আসবে
  • বায়ু দূষণ বন্ধে আড়াইহাজারে অবৈধ ইটভাটায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান 
  • যশোরে নাশকতার মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৬৭ নেতা-কর্মীর অব্যাহতি
  • চাঁদাবাজি ও মামলায় ফাঁসানোর হুমকি, কলাবাগান থানার ওসিসহ বরখাস্ত ৩
  • চাঁদাবাজি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি, কলাবাগান থানার ওসিসহ বরখাস্ত ৩
  • চাঁদাবাজি-লুটপাটের অভিযোগ, কলাবাগান থানার ওসি-এসআই সাময়িক বরখাস্ত