ইন্টার পরীক্ষায় যেভাবে ফেল করল বার্সা
Published: 7th, May 2025 GMT
ইউরোপিয়ান ফুটবলে ধ্রুপদি এক রাত। বিশেষজ্ঞদের চোখে, ‘ওয়ান অব দ্য অলটাইম ক্ল্যাসিক’—বিবিসির ভাষায়, কেউ–ই চায়নি ম্যাচটা শেষ হোক। কিন্তু শেষ বাঁশি তো বাজবেই আর হার–জিতও ঠিক হবে, যেখানে জয়ী দলটির নাম ইন্টার মিলান। সান সিরোয় কাল সেমিফাইনাল ফিরতি লেগ ৪–৩ গোলে জিতেছে ইন্টার। দুই লেগ মিলিয়ে বার্সেলোনাকে ৭–৬ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে ইতালিয়ান ক্লাবটি।
প্রথম লেগের মতো ফিরতি লেগেও ২–০ গোলে পিছিয়ে পড়া থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বার্সা। এরপর ৮৭ মিনিটে রাফিনিয়ার গোলে বার্সা ভেবেছিল দারুণ এক ‘কামব্যাক’–ই হচ্ছে। কিন্তু যোগ করা সময়ে ফ্রান্সেসকো আকার্বির গোলে সমতায় ফেরার পর অতিরিক্ত সময়ে (৯৯ মিনিট) ডেভিড ফ্রাত্তেসির গোলে অবিশ্বাস্য এক জয় তুলে নেয় ইন্টার।
বার্সা ম্যাচটি কোথায় হারল আর ইন্টার কোথায় জিতল—তার বিশ্লেষণ করেছে দ্য অ্যাথলেটিক।
ইন্টার যেভাবে জিতলসিমোন ইনজাগির দল ভেবেছিল বিদায় নিশ্চিত। ৫৪ থেকে ৮৭ মিনিটের মধ্যে তারা তিনটি গোল হজম করেছে, প্রতিউত্তরে এ সময় কিছুই করতে পারেনি। আবারও ২–০ গোলে এগিয়ে গিয়েও লিড ধরে রাখতে পারেনি। চ্যাম্পিয়নস লিগে টিকে থাকা দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক এই স্কোয়াডকে ঘুরে দাঁড়াতে অলৌকিক, অবিশ্বাস্য কিছুই করতে হতো।
সেই অলৌকিকত্বের শুরু একটা দূরপাল্লার পাসে। তখন বিপদ আঁচ করা যায়নি। কিন্তু ডেনজেল ডামফ্রিজের হার না মানা মানসিকতায় বার্সার বিপদের দ্বার খুলে যায়। ইন্টার উইং–ব্যাকের ক্রস থেকে গোল করেন সেন্টার ফরোয়ার্ডের ভূমিকা নেওয়া ফ্রান্সেসকো আকার্বি। স্কোরলাইন ৩–৩, দুই লেগ মিলিয়ে যেটা ৬–৬ এবং নিরপেক্ষ দর্শকদের মনের ইচ্ছা পূরণ করে ম্যাচটি গড়ায় অতিরিক্ত আরও আধা ঘণ্টায়। দ্বিতীয়ার্ধে ইন্টারের খেলোয়াড়দের খেলা দেখে মনে হয়েছে, বার্সাকে বিদায় করা, সম্ভব এটা তারা ভাবতে পারেনি—শেষ মুহূর্তে ঘুরে দাঁড়ানোয় খেলোয়াড়দের এ জায়গাটায় মাফ করে দিতে পারেন ‘নেরাজ্জুরি’ সমর্থকেরা।
জয়ের পর আনন্দে আত্মহারা ইন্টার কোচ সিমোন ইনজাগি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইন ট র
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে জনগণ, অংশ নিলেন প্রেসিডেন্টও
ইরানের তেহরানে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলার প্রতিবাদে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছেন। দেশটির রাজধানীজুড়ে রোববার সকাল থেকেই বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়। পরে সেখানে যোগ দেন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।
বিক্ষোভ ‘আমেরিকার আগ্রাসনের জবাব চাই’, ‘আমেরিকা নিপাত যাক’, ‘ইসরায়েল ধ্বংস হোক’- ইত্যাদি নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়।
প্রতিবাদকারীদের হাতে ছিল ইরানি পতাকা, নিহতদের ছবি এবং ট্রাম্প ও ইসরায়েলি নেতাদের কুশপুতুল। অনেকে হাতে ধরে রেখেছিলেন ব্যানার যাতে লেখা ছিল:
‘আমরা প্রতিরোধ করবো, আত্মসমর্পণ নয়’, ‘হামলা হলে জবাব আসবেই’, ‘পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের রক্ত বৃথা যাবে না’
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘এই হামলা কেবল ইরানের নয়, সমস্ত মুসলিম বিশ্বের ওপর আঘাত। আমেরিকা জানে না, ইরান কখনও মাথানত করে না।’
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বিক্ষোভের লাইভ সম্প্রচার করে। অনেক জায়গায় ধর্মীয় নেতারা উপস্থিত থেকে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেন প্রতিরোধে সক্রিয় থাকতে।
তেহরানের আজাদি স্কয়ার, ফার্দৌসি স্কয়ার, ইমাম হোমেইনি মসজিদের সামনে এবং পার্লামেন্ট ভবনের সামনে ছিল প্রধান বিক্ষোভস্থল। তবে দেশটির বিভিন্ন স্থানেও ছোটখাটো করে বিক্ষোভ হয়। তেহরানের আজাদি স্কয়ারে আসেন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। পরে তিনি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে অংশ নেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বিক্ষোভগুলো শুধু সরকার সমর্থিত নয়—বিশেষ করে ইরানে পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের ওপর হামলার পর সাধারণ জনগণের মধ্যেও জাতীয় ঐক্য ও ক্ষোভ উভয়ই দৃশ্যমান।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ নামে সামরিক অভিযানে ইরানের ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। এর পরই দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।