বিচার বিভাগের কাঙ্খিত সংস্কার ও স্বাধীনতা বাস্তবায়নে গণমাধ্যমের কার্যকর ভূমিকার ওপর জোর দিয়েছেন বক্তারা। তারা বলেছেন, বিচারব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে সাংবাদিকদের আরও দক্ষ ও তথ্যনির্ভর হতে হবে। বিশেষ করে প্রযুক্তি ব্যবহারে সক্ষম আইন বিষয়ক সাংবাদিকদের জন্য মোবাইল সাংবাদিকতার দক্ষতা বৃদ্ধি এই প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিচার সংস্কারে প্রযুক্তিনির্ভর সাংবাদিকতা অপরিহার্য।

বৃহস্পতিবার জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘মোবাইল জার্নালিজম বুটক্যাম্প’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে উচ্চ আদালতে কর্মরত ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের (এলআরএফ) সদস্যদের জন্য এ কর্মশালা আয়োজন করা হয়। এতে সার্বিক সহায়তা দেয় সুইডেন দূতাবাস, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট এবং ইউএনডিপি-বাংলাদেশ। 

দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধন করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল (সিনিয়র জেলা জজ) আজিজ আহমেদ ভূইয়া। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগের জন্য একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছেন, যার কিছু ধাপ ইতোমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়েছে। পৃথক সচিবালয়সহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) আইন ও বিচার বিষয়ক উপদেষ্টা রোমানা শোয়েগার বলেন, আদালত ব্যবস্থাপনার ডিজিটাল রূপান্তর এবং স্বাধীন প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার প্রয়োজনীয়তা এখন সময়ের দাবি। তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে গণমাধ্যমের যুক্তিসঙ্গত ও তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

ইউএনডিপি-বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক বলেন, বিচার বিভাগ সংস্কার রোডম্যাপ বিষয়ে দেশের সাতটি অঞ্চলে ইতোমধ্যে মতবিনিময় সভা হয়েছে। এতে জনগণের অংশগ্রহণ ও সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো.

কাউসার আহাম্মদের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মো. মারুফ নাওয়াজ। মোবাইল সাংবাদিকতা বিষয়ে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ দেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ড. কাবিল খান জামিল এবং সাংবাদিক সাব্বির আহমেদ। 

জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের সহকারী পরিচালক তানজিম তামান্নার সঞ্চালনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৪০ জন আইন বিষয়ক সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব দ কত

এছাড়াও পড়ুন:

জাতিসংঘে আওয়ামী লীগের চিঠিতে কাজ হবে না: তৌহিদ হোসেন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারিগরি সহযোগিতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ জাতিসংঘে যে চিঠি দিয়েছে, তাতে কোনো কাজ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) ঢাকা দপ্তরে পাঠানো চিঠির বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি এ কথা বলেন।

তৌহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জাতিসংঘকে দেওয়া আওয়ামী লীগের এ ধরনের চিঠিতে কোনো কাজ হবে না।

প্রসঙ্গত বাংলাদেশে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নয়’ এমন নির্বাচনে সহযোগিতা থেকে সরে আসার অনুরোধ জানিয়ে ১ নভেম্বর বাংলাদেশে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধিকে চিঠি পাঠান আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি ওই চিঠির অনুলিপি জাতিসংঘের মহাসচিব, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি, জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদসহ জাতিসংঘের কাজে যুক্ত ব্যক্তিবর্গ এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থায় দিয়েছেন।

কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকায় ফেব্রুয়ারিতে ঘোষিত নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকছে না আওয়ামী লীগের। জাতিসংঘে পাঠানো দলটির ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত হওয়ার আগপর্যন্ত আমরা জাতিসংঘ এবং ইউএনডিপির প্রতি নির্বাচনী সহযোগিতা স্থগিতের আহ্বান জানাই। আমরা বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক পক্ষের মধ্যে জাতীয় সংলাপ ও সমঝোতাকে উৎসাহিত করার এবং যেকোনো নির্বাচনী সম্পৃক্ততার মূল ভিত্তি হিসেবে মানবাধিকার ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’

‘বাংলাদেশে ইউএনডিপির নির্বাচনী সহযোগিতা এবং জাতিসংঘ সনদের নিরপেক্ষতা, রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তি ও মৌলিক অধিকারের মূলনীতি লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ’ শিরোনামে ইউএনডিপিকে চিঠি পাঠায় আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশে ইউএনডিপির নির্বাচনী সহযোগিতা, ব্যালট প্রজেক্ট এবং আসন্ন নির্বাচনের বিষয়ে সংস্থার প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার বিষয়ে আমরা গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছি যে নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলকও নয়, বিশ্বাসযোগ্যও নয়। এ ধরনের সম্পৃক্ততা আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘের মূলনীতি এবং অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রসারের ক্ষেত্রে ইউএনডিপির ম্যান্ডেট লঙ্ঘনের ঝুঁকি তৈরি করে।’

প্রসঙ্গত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য হবে কি না, এ প্রশ্ন তোলা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার অভিযোগ রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈষম্যবিরোধী আইনের অধ্যাদেশ জারির দাবি দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের
  • জাতিসংঘে আওয়ামী লীগের চিঠিতে কাজ হবে না: তৌহিদ হোসেন