কমলগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ঠেলে পাঠানো ১৫ জনকে পুলিশে হস্তান্তর
Published: 9th, May 2025 GMT
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে ঠেলে পাঠানো ১৫ জন বাংলাদেশি নাগরিককে থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। তাঁদের পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দিতে ইতিমধ্যে যোগাযোগ শুরু করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার তাঁদের থানায় হস্তান্তর করে বিজিবি। তার আগে গত বুধবার কমলগঞ্জের ধলই সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে আটক করে বিজিবি।
আটক ব্যক্তিদের মধ্যে নয়জন পুরুষ, তিনজন নারী ও তিনটি শিশু। তাঁরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। পুলিশে হস্তান্তর করা ১৫ জনের মধ্যে দুজন বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার, চারজন খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার এবং অন্যরা নড়াইলের বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আটক প্রত্যেকেই বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁরা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। বিএসএফ তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে দিলে বিজিবি তাঁদের আটক করে। আজ সকালে বিজিবি তাঁদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আটক ব্যক্তিদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা তাদের নিয়ে যাবে। আমরা তাদের পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেব।’
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে জেলার বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। পরে তাঁদের আটক করে বিজিবি। তাঁদের মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে ৪৪ বাংলাদেশি নাগরিককে আজ সকালে বড়লেখা থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে বিজিবি। তাঁদের মধ্যে ৩০ জনের বাড়ি নড়াইলে। অন্যদের বাড়ি সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলায়। তাঁদেরও পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুনবড়লেখা সীমান্ত দিয়ে ঠেলে পাঠানো ৪৪ জনকে পুলিশে হস্তান্তর করল বিজিবি৪ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেট সীমান্তে জরিপ নিয়ে উত্তেজনা
সিলেটের গোয়াইনঘাটে সীমান্ত পিলার সংলগ্ন খেলার মাঠ জরিপ করতে এসে বাংলাদেশিদের বাধার মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছেন ভারতীয় জরিপকারী দল ও বিএসএফ সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুরে উপজেলার নলজুরি খাসি হাওর ১২৭৮-৭৯ পিলার এলাকায় ছিটমহল বিনিময় চুক্তির আওতাধীন খেলার মাঠে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিজিবির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিজিবি সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে ছিটমহল বিনিময় চুক্তির অংশ হিসেবে সীমান্তের বিরোধপূর্ণ এলাকা ও ছিটমহল বিনিময় হয়। তবে, কিছু ভূখণ্ডে এখনো পিলার স্থাপন করে দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। জৈন্তাপুরের নলজুরি এলাকার ওই অংশ এ রকমই একটি ভূখণ্ড। যে খেলার মাঠে আজ জরিপকারী দল জায়গা পরিমাপ করতে গিয়েছিল, এটি বাংলাদেশের দখলে রয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, এ স্থানের কিছু অংশ ভারতের অভ্যন্তরে যাওয়ার কথা। মূলত জরিপের অংশ হিসেবেই বাংলাদেশ ও ভারতের জরিপকারী একটি দল জায়গা পরিমাপ করতে সেখানে যায়। বিজিবি ও বিএসএফের সদস্যরা নিরাপত্তা দিতে গিয়েছিলেন।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশের দখলে থাকা জায়গা ভারত নিয়ে নিচ্ছে—এমন আশঙ্কায় গ্রামবাসী লাঠিসোঁটা দিয়ে জরিপ দলের সদস্যদের বাধা দেন। গ্রামবাসী এ সময় বিএসএফ সদস্যদের নিজেদের সীমানায় চলে যাওয়ার দাবি জানাতে থাকেন। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। তবে, বিজিবি জরিপের বিষয়টি বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছে। আপাতত জরিপকাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
৪৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হক বলেন, ‘‘জরিপকাজের বিষয়টি গ্রামবাসী জানতেন না। তাই ভুল–বোঝাবুঝি থেকে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।’’
এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী বলেন, ‘‘যতটা জেনেছি, সীমান্তে যৌথ সমীক্ষা চলছিল। তবে, কে বা কারা সমীক্ষা চালিয়েছেন তা জানি না। এই বিষয়ে আমাদের কেউ কিছু জানায়নি।’’
ঢাকা/নূর/রাজীব