চারদিন বন্ধ থাকার পর রাঙামাটি জেলা সদর থেকে কাপ্তাই হ্রদ হয়ে বিভিন্ন উপজেলায় স্পিডবোট চলাচল শুরু হয়েছে। 

শনিবার (১০ মে) সকালে শহরের ফিসারী ঘাট থেকে আবারও আগের মত স্পিডবোট চলাচল শুরু হয়। 

এর আগে গত ২৮ এপ্রিল বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন (নৌরুট, পারমিট, সময়সূচি ও ভাড়া নির্ধারণ) বিধিমালা, ২০১৯ এর বিধি ২৭ মোতাবেক স্পিডবোটে যাত্রী পরিবহনের জন্য কিলোমিটার প্রতি এবং নৌরুট ভিত্তিক যাত্রীভাড়া নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। যেখানে রাঙামাটি-মারিশ্যা রুটে জনপ্রতি ৮০০ টাকা, রাঙামাটি-মাইনি রুটে জনপ্রতি ৪৫০ টাকা, রাঙামাটি জুরাছড়ি রুটে জনপ্রতি ৩২০ টাকা এবং রাঙামাটি বরকল রুটে জনপ্রতি ৩৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। 

স্পিডবোট মালিকপক্ষ জানায়, নতুন ভাড়ার হার নির্ধারণে রাঙামাটি থেকে মাইনির দূরত্ব সঠিকভাবে বিবেচনা করা হয়নি। তাদের দাবি রাঙামাটি থেকে মাইনির নৌপথে দূরত্ব কমপক্ষে ৭০ কিলোমিটার। যেখানে নতুন ভাড়া নির্ধারণে দূরত্ব বিবেচনা করা হয়েছে ৪৬.

২৫ কিলোমিটার। নতুন ভাড়ায় স্পিডবোট চালালে তারা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন এবং পুরনো ভাড়ায় চালিয়ে যাত্রীদের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হচ্ছে বিধায় তারা মঙ্গলবার (৬ মে) থেকে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখেন। 

শুক্রবার (৯ মে) রাতে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এ নিয়ে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পাঠান মো. সাইফুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিআইডব্লিউটিএ-এর টিআই মো. জাহিদুল ইসলাম, বিআইডব্লিউটিএ-এর ট্রাফিক সুপার ভাইজার মো. আকবর হোসেন, স্পিডবোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল কুদ্দুছসহ সমিতির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

সভায় ভাড়ার হার নতুনভাবে বিবেচনার আশ্বাসে আজ (শনিবার) থেকে স্পিডবোট চলাচলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

পার্বত্য স্পিডবোট মালিক সমিতির লাইনম্যান মো. মহিউদ্দিন জানান, আজ (শনিবার) সকালে আমাদের কাউন্টার থেকে মাইনির উদ্দেশ্যে স্পিডবোট ছেড়ে যাচ্ছে। সকাল থেকে ৭-৮টি বোট ছেড়ে গেছে। জনপ্রতি ভাড়া আগের মত ৬৫০ টাকা রাখা হচ্ছে।

চারদিন পর স্পিডবোট চলাচল শুরু হওয়াতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। মাইনিগামী যাত্রী সুশোভন চাকমা বলেন, “গ্রীষ্মকালে হ্রদের পানি শুকিয়ে গেছে। ফলে বড় লঞ্চগুলো চলাচল করতে খুব অসুবিধা হচ্ছে। স্পিডবোটগুলো ভালোভাবে চলাচল করতে পারে, পাশাপাশি সময়ও বাঁচে। আবার যে স্পিডবোট চলাচল শুরু হয়েছে এতে আমরা খুশি। তবে ভাড়া পুর্নবিবেচনা করা যেতে পারে।”

পার্বত্য স্পিডবোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, “গতরাতে জেলা প্রশাসনের সভায় ভাড়া নিয়ে আবারও আলোচনা হয়েছে। আমরা আমাদের অসুবিধার কথা জানিয়েছি। প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ আমাদের আশ্বস্ত করেছেন তারা ভাড়ার বিষয়টা পুনঃবিবেচনা করবেন। তাই আজ সকাল থেকে পূর্বের ভাড়ায় স্পিডবোট চলাচল শুরু করেছি আমরা।”

ঢাকা/শংকর/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাবির হলে প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে, প্রক্টরের আশ্বাসে বিক্ষোভ থামালেন শিক্ষার্থীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলে প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ। গত বছরের ১৭ জুলাইয়ের পরিপত্র অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। শুক্রবার মধ্যরাতে ঢাবির হলগুলোতে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের তিনি এ কথা জানান। 

শুক্রবার সকালে ঢাবির ১৮টি হলে ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপরই ওই কমিটি নিয়ে নানা সমালোচনা ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়। এর প্রতিবাদে এবং হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ছাত্রদের বিভিন্ন হল থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। একপর্যায়ে রোকেয়া হল ও শামসুন্নাহার হলের ছাত্রীরা গেটের তালা ভেঙে বের হয়ে এসে তাদের সঙ্গে যোগ দেন। রাত ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। 

রাত ২টার দিকে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান ও প্রক্টর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বাসভবনের সামনে আসেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের প্রায় এক ঘণ্টা আলাপ-আলোচনা হয়। পরে উপাচার্য বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হল প্রভোস্টের নেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতি নিয়ন্ত্রিত থাকবে।’

উপাচার্যের ওই বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা ‘না, না’ বলে আপত্তি জানান এবং হলগুলোতে সম্পূর্ণভাবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি করেন। তারা হলে হলে শিবিরের গুপ্ত কমিটি প্রকাশ ও ছাত্রদল কমিটির সদস্যদের শাস্তির দাবিও জানান।

শেষ পর্যন্ত প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ স্পষ্টভাবে ঘোষণা দেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে। এই ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা হাততালি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এবং স্লোগান দেন—   ‘এই মুহূর্তে খবর এল, হল পলিটিকস নিষিদ্ধ হলো।’

পরে রাত ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হলে ফিরে যান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ