বাড়িঘর নির্মাণ করায় ইতোমধ্যে তিনটি সেতু-কালভার্ট বন্ধ হয়ে গেছে। আরও একটি কালভার্ট বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে। এটি বন্ধ হলে দুই বিলের ৭ হাজার একর জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে চাষাবাদ বন্ধের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। 
এই চিত্র গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের গোপীনাথপুর উত্তরপাড়া গ্রামের দুটি বিলের।
সেতু-কালভার্ট রক্ষায় গোপীনাথপুর উত্তরপাড়া গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে।      
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে গোপীনাথপুর উত্তরপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক থেকে একটি সড়ক এ গ্রামের দিকে চলে গেছে। এ সড়কের প্রথম মোড়ে একটি বক্স কালভার্ট রয়েছে। এ কালভার্ট দিয়ে বিলে পানি প্রবাহিত হয়। কালভার্টের দক্ষিণ পাশে মাটি ফেলে একটি অংশ ভরাট করা হয়েছে। তারও দক্ষিণে জমির মালিক শহিদ মিয়া বালু দিয়ে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়েছেন। এতে কালভার্ট দিয়ে পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এখন কালভার্ট ঘেঁষে বালু ফেলে ভরাট করবেন শহিদ। নির্মাণ করবেন বাড়ি। তাঁর পাশের জমির মালিক লিয়াকত খাঁ বাঁশ দিয়ে জমি ঘিরেছেন। এখন বালু ফেলে জমি ভরাট করবেন। তিনিও সেখানে বাড়িঘর নির্মাণ করবেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া ওই সড়কের রাজ্জাক শরীফ, লায়েক আলী মিয়া ও তারেক মিয়ার বাড়ির সামনের সেতু-কালভার্ট বাড়িঘর নির্মাণ করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গোপীনাথপুর উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মশিউর রহমান বলেন, এটি নিম্ন জলাভূমি বা বিলবেষ্টিত গ্রাম। ১৯৮৪ সালে এ গ্রামের মধ্য দিয়ে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণ করে সরকার। সড়কের উত্তর পাশে গোপীনাথপুর উত্তরপাড়া ও ধলগ্রাম বিল। এ বিলে সাড়ে ৩ হাজার একর ফসলি জমি। সড়কের দক্ষিণ পাশে গোপীনাথপুর উত্তরপাড়া ও কাজীপাড়া বিল। এ বিলেও সাড়ে ৩ হাজার একর ফসলি জমি রয়েছে। বিল দুটিতে চাষাবাদের পানিপ্রবাহ ঠিক রাখতে সড়কে সেতু-কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। বিলের জমিতে সারা বছর ধান, পাট, সরিষা, তিল, মসুর, খেসারিসহ বিভিন্ন ফসল ফলে। এ ফসল দিয়ে গ্রামের ৮০ ভাগ পরিবার জীবিকা নির্বাহ করে।
ওই গ্রামের কৃষক শাহ আলম মোল্লা বলেন, সড়ক নির্মাণের আগে গ্রামের বাড়িগুলো বিলের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। তখন বর্ষায় নৌকায় ও শুকনা মৌসুমে হেঁটে বাড়ি যেতে হতো। প্রতিটি পরিবারে লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন খালবিলে নৌকা চলে না। তাই সড়কের পাশে অনেকে সেতু-কালভার্ট বন্ধ করে বাড়িঘর নির্মাণ করছেন। এতে পানির অভাবে তারা চাষাবাদ বন্ধের আশঙ্কা করছেন। বিলে ফসল না হলে তাদের জীবিকা বন্ধ হয়ে যাবে।
গোপীনাথপুর উত্তরপাড়া গ্রামের কৃষক কেরামত আলী সরদার বলেন, বাড়িঘর করে আগে তিনটি সেতু-কালভার্ট বন্ধ করা হয়েছে। এখন আরও একটি কালভার্ট বন্ধ করা হচ্ছে। এতে দুটি বিলে জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে। এমন অবস্থার সৃষ্টি হলে চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যাবে। এতে এ গ্রামের ৮০ ভাগ মানুষ জীবন-জীবিকা হারাবে। সুতরাং কৃষির স্বার্থে সেতু-কালভার্ট রক্ষা করতে হবে।
কালভার্টে মাটি ফেলার কথা স্বীকার করে শহিদ মিয়া বলেন, এ রাস্তার রাজ্জাক শরীফ, লায়েক আলী মিয়া ও তারেক মিয়ার বাড়ির সামনের সেতু-কালভার্ট বাড়িঘর নির্মাণ করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন তিনি তাঁর পৈতৃক সম্পত্তিতে 
বাড়িঘর নির্মাণ করবেন। কালভার্ট তাদের জমির পাশে পড়েছে।
পাশের জমির মালিক লিয়াকত খাঁ জানান, তিনি গরিব মানুষ। তাঁর ভাগে সামান্য পৈতৃক জায়গা পড়েছে। তাঁর আর কোনো জমি নেই। তাই এ জমিতেই তিনি বালু ভরাট করে বাড়িঘর করবেন।
গোপালগঞ্জ সদর ইউএনও এম রকিবুল হাসান বলেন, গত শুক্রবার অভিযোগ পেয়েছি।
ঘটনাস্থলে পরিদর্শন টিম যাবে। পরিদর্শন টিমের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: করব ন সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

সৈকত নাসিরের নয়া কৌশল

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা সৈকত নাসির ‘দেশা দ্য লিডার’ এর পর ‘পাষাণ’, ‘হিরো ৪২০’, ‘তালাশ’, ‘সুলতানপুর’, ‘পাপ’, ‘ক্যাসিনো’সহ ‘ব্যাড বয়েজ’, ‘দ্য ট্রাপ’ এবং নেটওয়ার্ক’ এর মতো সফল ওয়েব সিরিজ নির্মাণ করেছেন।

‘মাসুদ রানা’সহ তার হাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি সিনেমার কাজ। সিনেমা-ওয়েব সিরিজের ফাঁকে ফাঁকে তিনি নির্মাণ করে থাকেন মিউজিক ভিডিও এবং বিজ্ঞাপন। যেসব কাজে থাকে পরিপূর্ণ সিনেমার ফিল। তার নির্মিত গানের মিউজিক ভিডিও ও বিজ্ঞাপনে থাকে অসামান্য কোরিওগ্রাফির জাদু, শিল্পীদের নাচের মুভমেন্ট। 

সৈকত নাসিরের কাজের মান নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই! ছোট হোক বা বড় বাজেট, তিনি ‘ভিন্ন স্বাদ’ দেওয়ার ম্যাজিক জানেন! আসিফ আকবরের ‘আগুন’ গান দিয়ে মিউজিক ভিডিওর চেনা স্টাইলকে বদলে দিয়েছিলেন তিনি!

আরো পড়ুন:

আমরা বহু বছর ধরে একসঙ্গে আছি, প্রেম জীবন নিয়ে জয়া

ফয়সালকে বন্দি রাখার অভিযোগে আমিরের পরিবারের বিবৃতি

সম্প্রতি সৈকত নাসির নির্মাণ করেছেন নতুন মিউজিক ভিডিও। এতে মডেল হয়েছেন জাহের আলভী ও অলংকার চৌধুরী। এটি মূলত একটি ব্যান্ডের প্রোমোশনাল ক্যাম্পেইন। ‘ঘুরাই চলো মনের হুইল’ শিরোনামের মিউজিক ভিডিওটি ভিজ্যুয়ালাইজারের ব্যানারে নির্মিত হয়েছে। গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন—কনা ও হাসান এস ইকবাল।

সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত এই প্রমোশনাল ভিডিওটি দেখে দর্শকরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। তাদের ভাষ্য— “এত সূক্ষ্ম ও সৃজনশীলভাবে করা হয়েছে, লিরিক থেকে ভিজ্যুয়াল পর্যন্ত যা প্রোডাক্ট প্লেসমেন্টের নতুন মডেল হিসেবে আদর্শ বলা যায়। এডিটিং মাস্টারি, শট ট্রানজিশন থেকে টেম্পোর ম্যানিপুলেশন, সবই নিখুঁত! শিল্পীদের পারফম্যান্স; এক কথায় ফায়ার! শুভকামনা সৈকতদা, আপনার জন্য শুভকামনা সবসময়! তাই তো আপনার নাম ম্যাজিকম্যান।”

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ