জি এম কাদেরসহ জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার দাবি নুরুল হকের
Published: 11th, May 2025 GMT
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ তোষণের অভিযোগ তুলেছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। তিনি বলেন, এইচ এম এরশাদ (প্রয়াত) এবং জি এম কাদের গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগকে হৃষ্টপুষ্ট করেছেন। এর দায়ে জি এম কাদেরসহ জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতাদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।
রোববার দুপুরে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন নুরুল হক। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো.
আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলীয় জোটভুক্ত সব দলের নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে আগামীকাল নির্বাচন কমিশনে (ইসি) লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে বলে জানান নুরুল হক। আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিবাদী ও সীমান্তপারের ষড়যন্ত্রকারী’ আখ্যা দিয়ে দলটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা ও দলের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানান তিনি।
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ পালিয়ে যাওয়ার দায় শুধু কিশোরগঞ্জের এসপির নয়, এর পেছনে ইমিগ্রেশন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ভূমিকা থাকতে পারে। অথচ সরকার দায় চাপিয়েছে শুধু এক জেলা পুলিশ কর্মকর্তার ঘাড়ে।
কিছু উপদেষ্টা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছেন উল্লেখ করে তাঁদের সরিয়ে দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানান নুরুল হক। তিনি বলেন, বিতর্কিত কাজ করা উপদেষ্টাদের সরিয়ে দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে এই সরকারকে জাতীয় সরকারে রূপ দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়েছে। গণহত্যার বিচারপূর্বক নিবন্ধনও স্থগিত বা বাতিল করতে হবে। দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি করে আওয়ামী লীগকে চূড়ান্তভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। এর আগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, মাহফুজুর রহমান খান, হাবিবুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিলু খান প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র ল হক এম ক দ র আওয় ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারের অপরিণামদর্শিতা ও অবহেলার কারণে সমস্যাগুলো ঘনীভূত হচ্ছে
অন্তর্বর্তী সরকারের অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত, অবহেলা, ব্যর্থতা ও স্বজনপ্রীতির কারণে দেশের সমস্যাগুলো আরও ঘনীভূত হচ্ছে। ফলে বছর পার হলেও দেশের নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনও হুমকির মুখে পড়বে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীতে আয়োজিত ‘অভ্যুত্থান–উত্তর বাংলাদেশ: সংস্কার প্রস্তাবনার এক বছর’ শীর্ষক পর্যালোচনা সভায় এ কথা উঠে আসে। দলীয় কার্যালয়ে এই পর্যালোচনা সভার আয়োজন করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
সমস্যা সমাধানে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের পক্ষ থেকে চার দফা প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে সংবিধান সংস্কারে রাজনৈতিক দল ও নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ, সরকারের উপদেষ্টা ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সম্পদের হিসাব প্রকাশ, উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন ও ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ তদন্ত করা এবং সংবিধান সংস্কারের প্রয়োজন নেই এমন গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন শুরু করা।
বিভক্তি তৈরি করে অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধান সংস্কারের সুযোগ নষ্ট করছে বলে অভিযোগ করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, অন্তর্বর্তী সরকার অতীতের সরকারগুলোর স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচারের পথ বন্ধ করে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সংবিধান সংস্কারের পথে এগিয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে সরকার এই সুযোগ ব্যর্থ করার পথে হাঁটছে।’
সব সম্ভাবনা এখনো শেষ হয়নি উল্লেখ করে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, এখনই উদ্যোগ নিলে অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা অনেকাংশ পূরণ করা সম্ভব। দেশের বর্তমান সমস্যাগুলোকে ভবিষ্যতে ভয়াবহ সংকটে পরিণত হওয়া থেকে ঠেকানো সম্ভব। সরকার এই উদ্যোগ নিলে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন সহায়তা করবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন হাসনাত কাইয়ূম।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোরও উচিত ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে নিজেদের এক বছরের দলীয় কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করা।
বড় রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনা সত্ত্বেও জনসমর্থন কেন বেশি এবং সংস্কার নীতিতে চলা অপেক্ষাকৃত ছোট দলগুলোর জনসমর্থন কেন কম, সেটিও পর্যালোচনার আহ্বান জানান মজিবুর রহমান।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক (ভারপ্রাপ্ত) সোহেল শিকদারের সঞ্চালনায় সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া।
সভায় আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সমন্বয়ক সাকিব আনোয়ার, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইদুল খন্দকার, জাতীয় সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান, শেখ নাসিরউদ্দীন, ফরিদুল ইসলাম এবং রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক লামিয়া ইসলাম।