পাবনায় অবৈধভাবে ফসলি জমির মাটি কাটার অভিযোগে আটক ১৪
Published: 12th, May 2025 GMT
পাবনার সদর উপজেলার পদ্মা নদীর তীরবর্তী ফসলি জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কাটার অভিযোগে ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের তিন মাসের জেল দেওয়া হয়। এ সময় আটটি ট্রাক ও চারটি স্কেভেটর মেশিন জব্দ করা হয়।
রোববার রাতে উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চরঘোষপুরে অঞ্চলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুরাদ হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
আটককৃতরা হলো- পাবনা সদরের কৃষ্টপু্র গ্রামের কালু প্রামাণিকের ছেলে জুয়েল, হেরাজ প্রামাণিকের ছেলে হৃদয়, চর চরভাঙ্গা বাড়িয়ার রাসেল বিশ্বাসের ছেলে মারুফ, বধেরহাটের সাদেক মন্ডলের ছেলে বাবু মন্ডল, লাইব্রেরি বাজারের আব্বাস উদ্দিনের ছেলে বাপ্পি, চরঘোষপুরের মুক্তার মন্ডলের ছেলে হযরত আলী, বাংলাবাজারের মৃত আকবর আলী ছেলে মক্কার প্রামাণিক, মৃত রোস্তম আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম, গাছপাড়ার জাহের আলী জমির হোসেন, চক ছাতিয়ানির মৃত নূর হোসেনের ছেলে সাহাবুল ইসলাম, চাটমোহরের মৃত নুরুজ্জামানের ছেলে নাহিদ পারভেজ, পাবনা শহরের আটুয়া গ্রামের মৃত মানিক হোসেনের ছেলে সাব্বির হোসেন, কাচারীপাড়ার সিদ্দিক মন্ডলের ছেলে পান্না, বাংলাবাজারের সোহরাব প্রামাণিকের ছেলে সাইফুল।
জানা গেছে, জেলার পদ্মার নদীর তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ফসলি জমির আবাদ হয়। কৃষকরা সারাদেশে সবজির চাহিদা মিটিয়ে থাকে। সেখানে কৃষকের ফসলি জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কেটে নেওয়ার শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এর তথ্যের ভিত্তিতে রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে পাবনা সদর উপজেলাধীন চরঘোষপুরে অবৈধভাবে মাটি কাটার অভিযোগে আটটি ট্রাক, চারটি স্কেভেটর মেশিন জব্দ এবং জড়িত ১৪ জনকে আটক করে তিন মাসের জেল দেওয়া হয়। এ সময় সেনাবাহিনী, এনএসআই সহকারী পরিচালক, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এই অঞ্চলে আজ প্রায় পাঁচ মাস ধরে ফসলি জমি থেকে মাটি ও বালু কাটা হচ্ছে। সব প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা অভিযোগ দিলেও কোনো কাজ হয় না। এলাকায় এসে এসব অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চলে যায়। আবার প্রশাসন মাঝেমধ্যে এসে এদের আটকও করে। কিন্তু দুয়েকদিনের মধ্যে জেল থেকে বের হয়ে এসে আবারও মাটি কাটা শুরু করে। এসব বালু ও মাটি কাটার সঙ্গে প্রশাসনও জড়িত। মাঝেমধ্যে দায়সারা অভিযান চালানো হয়। স্থায়ীভাবে ফসলি জমি থেকে বালু ও মাটি কাটা বন্ধের দাবি করেন তারা।
পাবনা সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুরাদ হোসেন বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতিকারী চরঘোষপুরে পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে উত্তোলন করে আসছিল। যার ফলে উক্ত এলাকায় পরিবেশ নষ্ট হওয়াসহ রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং আশেপাশের আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
এছাড়াও সম্প্রতি মাটিকাটা ট্রাক্টরের নিচে চাপা পড়ে বেশ কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান করে ১৪ জনকে আটক করে জেল দেওয়া হয়েছে। অবৈধ বালু ও মাটি কাটার বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পাগলা কোস্ট গার্ড স্টেশনে অবৈধ কারেন্ট জাল বিক্রি , আটক ৩
ফতুল্লায় অবৈধভাবে পাগলা কোস্ট গার্ড স্টেশন থেকে অবৈধ কারেন্ট জাল ভর্তি করে ট্রাক নিয়ে বের হতেই স্থানীয় জনতার হাতে আটক হয়েছে চালকসহ ৩জন। এসময় আটককৃতদের উত্তম মাধ্যম দিয়ে ট্রাক ভর্তি জালসহ পুলিশ দিয়েছে জনতা।
বুধবার সকালে ফতুল্লার পাগলা কোস্ট গার্ড স্টেশানের সামনে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কে এঘটনা ঘটে।
আটকৃতরা হলো- সোনারগাঁও থানার ভরমেসন্ধি গ্রামের আরব আলী ভূইয়ার ছেলে রিফাত ভূইয়া (৩৭), একই থানার আনন্দ বাজার এলাকার বলায় নাথের ছেলে লোকনাথ (২২) ও একই থানার বারদী গ্রামের শামীমের ছেলে ট্রাক চালক সোহাগ (২৫)।
আটক রিফাত ভূইয়া জানান, সোনারগাঁও আনন্দ বাজার এলাকার গুলজার হোসেন সকালে চালক সোহাগের সাথে ট্রাক দিয়ে পাগলা কোস্ট গার্ড স্টেশানে পাঠায়। বলে দেয় কোস্ট গার্ড স্টেশানের অপারেশন অফিসার রাশেদের সাথে দেখা করলে সে কারেন্ট জাল দিবে। সেই জাল নিয়ে সোনারগাঁও আনন্দবাজার যাওয়ার জন্য বলেছেন।
তার কথা মতো অপারেশন অফিসার রাশেদের সাথে দেখা করলে সে পাগলা কোস্ট গার্ড স্টেশানের ভিতরে ট্রাকসহ আমাদের ৩জনকে নিয়ে যায় এবং একটি কক্ষ থেকে কারেন্ট জাল এনে ট্রাক ভর্তি করে বলে চলে যেতে।
সকালে কোস্ট গার্ড স্টেশান থেকে বের হতেই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কে বেশ কয়জন যুবক তাদের গাড়ি আটক করেন। এরপর চালকসহ ৩জনকে মারধর করে জাল ভর্তি ট্রাকসহ ৩জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই পাগলা কোস্ট গার্ড স্টেশানের কর্মকর্তারা অবৈধ কারেন্ট জাল, ভারতীয় কাপড়, মাছ নদী থেকে আটক করে তা গোপনে বাহিরে বিক্রি করে দেয়। একাধীকবার প্রতিবাদ করা হলেও তারা উল্টো ভয়ভীতি দেখায়।
আজও তারা আটক করা কারেন্ট জাল বাহিরে বিক্রি করছে এমন খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এরপর কোস্ট গার্ড থেকে জাল ভর্তি ট্রাক বের হলে সড়কে এলাকাবাসী তা আটক করে পুলিশে দিয়েছে।
এবিষয়ে গুলজার হোসেন বলেন, পাগলা কোস্ট গার্ড স্টেশানের অপারেশন অফিসার রাশেদ ফোন করে বলেন ৩লাখ টাকা ও ট্রাক পাঠাতে কারেন্ট জাল আছে। তার কথা মত ট্রাকসহ লোক পাঠিয়েছি। সে টাকা রেখে ট্রাকে জাল ভরে দিয়েছে। সেই ট্রাক ভর্তি জাল স্টেশানের বাহিরে কে বা করা আটক করেছে জানিনা।
অপারেশন অফিসার রাশেদ বলেন, সোর্সদের তথ্য মতে অভিযান চালিয়ে অবৈধ মালামাল আটক করা হয়। আটককৃত মাল থেকে সোর্সদের কমিশন দিতে হয়। সেই কমিশনের মাল গুলজার হোসেনের কাছে বিক্রি করা হয়েছে।
এবিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, পাগলা কোস্ট গার্ড স্টেশানের সামনে ট্রাক ভর্তি অবৈধ কারেন্ট জাল আটক করে স্থানীয়রা বিক্ষোভ করতে থাকে। এসময় টহল পুলিশ এগিয়ে গিয়ে তাদের বিক্ষোভের বিষয় জানতে চাইলে স্থানীয় জনতা ট্রাক ভর্তি কারেন্ট জালসহ ৩জনকে পুলিশের হাতে সোর্পদ করেন।
এরপর ৩জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারি তারা পাগলা কোস্ট গার্ড স্টেশানের ভিতর থেকে অবৈধ কারেন্ট জাল ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এবিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।