ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক ও খলনায়ক অমিত হাসান। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে দুই চরিত্রেই দর্শকের ভালোবাসা পেয়েছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদেও ছিলেন। সেই সমিতির বর্তমান অবস্থা নিয়ে প্রকাশ্যেই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন অমিত হাসান। 

সোমবার (১২ মে) ফেসবুক স্ট্যাটাসে অমিত হাসান লেখেন, “শিল্পী সমিতি আছে কিন্তু শিল্পী নাই।” তার এই পোস্টে সমর্থন জানিয়েছেন চলচ্চিত্রাঙ্গনের অনেক সিনিয়র তারকা। ওমর সানী মন্তব্যের ঘরে লেখেন, “একদম সত্যি, ভালো বলছিস।”

গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অমিত হাসান বলেন, “সিনিয়র শিল্পীরা এখন অবহেলিত। আমাদের নিয়ে কেউ ভাবছে না, আমাদের জন্য গল্প লেখা হচ্ছে না। আমি, রুবেল, ওমর সানী, আমিন খান, বাপ্পারাজ— কোনো সিনেমায় নেই। এমনকি আমাদের জুনিয়ররাও বেকার হয়ে গেছে। বাপ্পি চৌধুরী, সায়মন সাদিকরাও কাজ পাচ্ছে না। তাহলে এই শিল্পী সমিতিতে যাবে কে? এফডিসিতে শুটিং থাকলে শিল্পীরা আসবেন সমিতিতে। এখন সেটাও নেই।”

আরো পড়ুন:

নায়ক থেকে খলনায়ক, জাসাস থেকে দূরে: মিশার স্বীকারোক্তি

চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুন: আদালতের রায়ে ক্ষুব্ধ তারকারা

বর্তমান নেতৃত্বের দিকে অভিযোগের তির ছুড়ে বলেন, “চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে এখন গ্রহণযোগ্য কোনো নেতৃত্ব নেই। সভাপতি মিশা সওদাগর আর সাধারণ সম্পাদক ডিপজল— দুজনই মাসের পর মাস দেশের বাইরে। এভাবে তো কোনো সংগঠন চলতে পারে না।”

পুরোনো দিনের উদাহরণ টেনে অমিতাভ হাসান বলেন, “রাজ্জাক, আলমগীর, মান্না, ইলিয়াস কাঞ্চন, মিজু আহমেদ, আহমেদ শরীফ, মাহমুদ কলির মতো গুণী শিল্পীরা যখন নেতৃত্বে ছিলেন, তখন শিল্পীরা আসতেন, দেখা করতেন, আড্ডা দিতেন। শুটিংয়ের ফাঁকে খোঁজ নিতেন, সমিতিতে কে আছে। এখন এসব কিছুই নেই। এফডিসির শিল্পী সমিতি আজ প্রাণহীন।”

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, আরেক আসামি গ্রেপ্তার

পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া এলাকায় ৯ বছরের শিশু শিক্ষার্থী হাফসা হত্যার ঘটনায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) দায়ের করা মামলায় আরো এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মামলার নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার হলো।

গ্রেপ্তাররা হলেন, পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া মহল্লার টিপু সরদারের ছেলে সাব্বির সরদার (২৬), ছবেদ আলীর ছেলে রমজান আলী (৩০) ও খালেক সরদারের ছেলে পান্না সরদার (২৮)। এদের মধ্যে সাব্বির ও রমজানকে রবিবার এবং পান্নাকে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

আরো পড়ুন:

‘আবর্জনার মতো লাগে’ বলে অর্ধশত বকুলগাছ কাটা সেই ব্যক্তি গ্রেপ্তার

বরগুনায় নাশকতার অভিযোগে ৩ আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার 

এদিকে, শিশু হাফসাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্য করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।

পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নিহত হাফসার মা রিতু খাতুন বাদী হয়ে সোমবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনজন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেককে আসামি করা হয়েছে।

তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে পাবনা টেক্সটাইল কলেজ এলাকা থেকে অভিযুক্ত পান্না সরদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে মামলার প্রধান অভিযুক্ত নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

এদিকে, শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।

সোমবার (১৬ নভেম্বর) সকালে উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে জেলা প্রশাসক কর্যালয়ের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা। সেখানে নিহত শিশু শিক্ষার্থী হাফসার স্বজন ও এলাকাবাসী বক্তব্য দেন।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে তারা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ শেষে তারা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। অন্যত্থায় আরো কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন।

এ সময় প্রায় ১ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম ঘটনাস্থলে গিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।

এর আগে, শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে শিশু হাফসাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার সন্ধান চেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে প্রায় ২ ঘণ্টা পর রাত ৮টার দিকে বাড়ির পেছনের জঙ্গলের ভেতর পাটিতে মোড়ানো কাদা মাখা অবস্থায় হাফসার মরদেহ পাওয়া যায়।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রাতেই সন্দেহভাজন হিসেবে রমজান ও সাব্বির নামের দুইজনকে আটক করা হয়।

নিহত হাফসা সদর উপজেলার মালঞ্চি ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের প্রবাসী হাফিজুর রহমানের মেয়ে এবং স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

হাফসার নানার বাড়ির পাশের বাগানটি দীর্ঘদিন ধরে বখাটে, মাদকসেবী ও জুয়ারুদের আড্ডাস্থল ছিল বলে জানায় স্থানীয়রা। তারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, “মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে শিশু হাফসাকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এছাড়া পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয়েছে।”

ঢাকা/শাহীন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ