জাতীয় পর্যায়ে আবারো সাফল্যের গল্প লিখলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দুই শিক্ষার্থী। সম্প্রতি মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ২৯তম জাতীয় কারাতে প্রতিযোগিতা–২০২৫ স্বর্ণপদক জিতেছেন তারা।

তারা হলেন, নাট্যকলা বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী জর্জিস আনোয়ার নাইম ও ২০১৮-১৯ সেশনের চারুকলা বিভাগের মারজান আক্তার প্রিয়া।

প্রতিযোগিতাটি ৯ থেকে ১১ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশের ৮৭টি দলের মোট ৭৪০ জন খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেন। পুরুষ ও নারী মিলিয়ে ২১টি ওজন শ্রেণিতে চলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা।

পুরুষদের ৬৭ কেজি ওজন শ্রেণিতে চ্যাম্পিয়ন হন নাইম। আগের আসরে রৌপ্য জয়ের পর জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার হতাশা জয় করে এবার স্বর্ণপদক জিতে নিজের সাফল্য পুনরুদ্ধার করেন তিনি।

নাইম বলেন, “২৮তম আসরে রৌপ্য পদক পেয়ে হতাশ হয়েছিলাম, জাতীয় দলে জায়গা হারিয়েছিলাম। এবার কঠোর অনুশীলনের পর আল্লাহ আমাকে ফের সম্মান ফিরিয়ে দিয়েছেন।”

নারীদের ৬৮ কেজি বিভাগে স্বর্ণ জয় করেন মারজান আক্তার। অসুস্থতা সত্ত্বেও সর্বোচ্চটা দিয়ে লড়াই করে চূড়ান্ত সাফল্য পান তিনি।

তার ভাষায়, “আমি শারীরিকভাবে খুব অসুস্থ। হয়তো এটাই আমার শেষ টুর্নামেন্ট ছিল। তবু শেষ পর্যন্ত লড়ে স্বর্ণ জিতেছি, এটাই আমার প্রাপ্তি।”

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো.

রেজাউল করিম বিজয়ী শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “এটা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনন্য অর্জন। আশা করি, এই ধারা অব্যাহত থাকবে। আয়োজকদেরও ধন্যবাদ জানাই।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বর ণ

এছাড়াও পড়ুন:

ওপেন ওয়ার্ল্ডে পদক জয়ের অভিজ্ঞতার কথা জানাল বাংলাদেশের পদকজয়ীরা

রাশিয়ার সোচি শহরে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে চতুর্থ ওপেন ওয়ার্ল্ড অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াড। এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের ৬ প্রতিযোগী অর্জন করেছে একটি স্বর্ণপদক, দুটি রৌপ্যপদক, একটি ব্রোঞ্জ ও সম্মানসূচক স্বীকৃতি।

চতুর্থ ওপেন ওয়ার্ল্ড অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াডে বিশ্বের ২০টি দেশের ৯০ জন প্রতিযোগী অংশ নেয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে পদকজয়ীরা তাঁদের অনুভূতির কথা জানিয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এই সংগঠনের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

বাংলাদেশ দলের হয়ে স্বর্ণপদক অর্জন করেন যশোরের পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. মখদুম আমিন ফাহিম। অনুভূতি প্রকাশ করে এই শিক্ষার্থী বলেছে, ‘এমন কিছু যেটা কখনো কেউ অর্জন করতে পারেনি। দেশের জন্য সেটা বয়ে নিয়ে আসা সত্যিই অসাধারণ অনুভূতির।’ এই অর্জনের কৃতিত্ব ফাহিম নিজের বিদ্যালয়, পরিবার এবং বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনকে দিয়েছে।

প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে নতুনদের উদ্বুদ্ধ করে মখদুম আমিন ফাহিম বলে, অ্যাস্ট্রোনমিতে ভালো করতে গেলে পদার্থবিজ্ঞান ও গণিতে ভালো জ্ঞান থাকা বাধ্যতামূলক। থাকতে হবে লেগে থাকার মানসিকতা।

রৌপ্যপদক জেতা ঢাকার হিড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের এ লেভেল শিক্ষার্থী সপ্তর্ষি রহমান ও আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. রাদিত রাইয়ানের কণ্ঠেও ছিল আনন্দের সুর।

এর আগে অনেক পুরস্কার পেলেও এবারের রৌপ্যপদক অর্জনকে বিশেষ বলে মন্তব্য করেছে সপ্তর্ষি রহমান। সে জানিয়েছে, ‘ওপেন ওয়ার্ল্ডের পুরস্কারটা একটু স্পেশাল। কারণ এই অর্জন শুধুই নিজের নয়, বরং এতে নিজ দেশকেও তুলে ধরা হয়েছে।’ এই অর্জন পুরো বাংলাদেশের বলে মনে করে সপ্তর্ষি।

মো. রাদিত রাইয়ান বলেছে, ‘প্রতিটি পরীক্ষার আগে এই অনুভূতি ছিল, দেশের জন্য কিছু করতে হবে। এমন একটা স্থানে নিজ দেশকে উপস্থাপন করতে পারাটা আনন্দদায়ক।’ অন্য প্রতিযোগীদের সঙ্গে নিজ দেশের সংস্কৃতি বিনিময় করার অভিজ্ঞাতাও সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেছে এই শিক্ষার্থী।

সংবাদ সম্মেলনে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছে ব্রোঞ্জ পদকজয়ী রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. জুবায়ের হোসেন জিসান এবং সম্মানসূচক স্বীকৃতি পাওয়া খুলনার সাউথ হেরাল্ড ইংলিশ স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সায়ন্তন রায়।

চতুর্থ ওপেন ওয়ার্ল্ড অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণের বাছাইপ্রক্রিয়া

রাশিয়ায় অংশগ্রহণের আগে বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশে অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াডের ২০তম আসর আয়োজন করে। প্রাথমিকভাবে দেশের জেলা ও বিভাগীয় স্তরে দিনব্যাপী প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়। প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। এই রাউন্ড থেকে বাছাইকৃত ৩০০ শিক্ষার্থীকে নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডের আয়োজন করে। সর্বশেষ পর্যায়ে ৩০ জনকে নিয়ে ক্লোজড ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। ক্লোজড ক্যাম্প শেষে চূড়ান্ত পরীক্ষায় ৬ জনকে রাশিয়ার প্রতিযোগিতার জন্য বাছাই করা হয়।

বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মশহুরুল আমিন বলেন, এবারের প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ করানোটা কঠিন ছিল। তবে শিক্ষার্থীদের সাফল্যে তাঁরা নতুন করে কাজের উদ্যম খুঁজে পেয়েছেন।

চতুর্থ ওপেন ওয়ার্ল্ড অ্যাস্ট্রোনমি অলিম্পিয়াড ২০২৫–এ অংশ নেওয়া ছয় শিক্ষার্থীর সঙ্গে দলনেতা বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াড জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান মশহুরুল আমিন (মাঝে)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওপেন ওয়ার্ল্ডে পদক জয়ের অভিজ্ঞতার কথা জানাল বাংলাদেশের পদকজয়ীরা