জাহিদ-অপি-জয়া-চঞ্চলদের’ উৎসব’ পরিবার ছাড়া দেখা নিষেধ
Published: 14th, May 2025 GMT
নিমন্ত্রণপত্রে শুধু সিনেমার নির্মাতা তানিম নূরের নাম; কিন্তু সিনেমার নাম কী, তা ছিল গোপন! তারপর ১৩ মে সন্ধ্যা। তখনো কেউ জানত না, কী নাম হতে যাচ্ছে ঈদের সবচেয়ে আলোচিত সিনেমার। হঠাৎ একে একে ঢুকলেন তারকারা—সবাই মুখোশ পরে! একটু পরে, মঞ্চে ডাক, মুখোশ খোলেন তাঁরা—আর দর্শকের চোখে বিস্ময়, সংবাদ সম্মেলন পরিণত হলো রীতিমতো তারকাদের মিলনমেলায়। একসঙ্গে এত তারকা! মঞ্চে দাঁড়িয়ে তানিম নূর ঘোষণা করলেন তাঁর সিনেমার নাম—‘উৎসব’।
স্লোগানটা অভিনব, ‘সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ—পরিবার ছাড়া দেখা নিষেধ’। স্লোগান কেন ‘পরিবার ছাড়া দেখা নিষেধ’? খুব সরল উত্তর, এ সিনেমা পরিবারের সঙ্গে দেখার জন্যই। নির্মাতা তানিম নূরের ভাষ্যে, ‘ঈদের সময় আমাদের দরকার এমন কিছু, যা সবাই মিলে দেখতে পারি, উপভোগ করতে পারি—তেমন সিনেমা এখন কম। এ ঘাটতি পূরণ করতেই করেছি “উৎসব”। পরিবার ছাড়া দেখার কথা বলা মানে আসলে সবার সঙ্গে মিলে দেখুন, উৎসব করুন!’
সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন দেশের নামকরা শিল্পীরা। সংবাদ সম্মেলনে সিনেমার নাম ঘোষণা এবং শিল্পীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। এ তালিকায় আছেন জাহিদ হাসান, জয়া আহসান, অপি করিম, চঞ্চল চৌধুরী, আফসানা মিমি, তারিক আনাম খান, আজাদ আবুল কালাম, ইন্তেখাব দিনার, সুনেরাহ বিনতে কামাল, সৌম্য জ্যোতি, সাদিয়া আয়মানসহ অনেকে।
এক সিনেমায় এত তারকার উপস্থিতি দেশীয় চলচ্চিত্রে বিরল। এক সিনেমায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এত অভিনয়শিল্পীর কাজ করার ঘটনা নেই বললেই চলে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সিনেমাটি উৎসবের আমেজে দেশ ও দেশের বাইরে মুক্তি পাবে।
নির্মাতা তানিম নূর জানান, ঈদকে কেন্দ্র করে পরিবার মিলে দেখার মতো একটা সিনেমা বানানোর ইচ্ছা ছিল তাঁর। সেই ইচ্ছা-স্বপ্ন তাড়া করতে গিয়েই নির্মিত হয়েছে উৎসব। অভিনেতা জাহিদ হাসান জানান, দীর্ঘদিন পর ‘উৎসব’ সিনেমায় অনেক শিল্পী মিলে কাজ করেছেন, সেটাই তাঁর কাছে আনন্দের। সিনেমাটি দেখে দর্শকেরাও অনেক আনন্দ পাবেন বলে মনে করেন অভিনেতা। তাঁর সমসাময়িক অভিনেত্রী আফসানা মিমির ভাষ্যে, ‘পরিবার ছাড়া দেখা নিষেধ—কথাটা আমাকে আন্দোলিত করেছে। কারণ, অনেক দিন ধরেই আমরা পরিবার নিয়ে দেখার মতো একটা সিনেমা খুঁজছিলাম।’
সিনেমাটি প্রযোজনা করেছে ডোপ প্রোডাকশনস, সহপ্রযোজনায় আছে চরকি। সিনেমার নাম ঘোষণার অনুষ্ঠানে ডোপ প্রোডাকশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রথম সিনেমা আর সেটাই ঈদের জন্য। সবার সহযোগিতা ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। সবাইকে ধন্যবাদ। ঈদের আমেজ থাকতে থাকতে আমরা দেশের বাইরেও “উৎসব” মুক্তি দিতে চাই।’
চরকির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেদওয়ান রনি বলেন, ‘“উৎসব” এই সময়ের খুব জরুরি সিনেমা। এখন কী ধরনের সিনেমা হচ্ছে, তা আমরা সবাই দেখছি। এর ভিড়ে সবাই মিলে দেখার মতো সিনেমা খুবই প্রয়োজন, বিশেষ করে ঈদের মতো সময়ে।’
তানিম নূরের উচ্ছ্বাসের কারণেই সিনেমাটিতে কাজ করতে রাজি হয়েছেন সবাই। একটা অসাধ্য সাধন হয়েছে বলে জানান আজাদ আবুল কালাম। ‘উৎসব’ সিনেমার সহযোগী প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আছে লাফিং এলিফ্যান্ট। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার সাকিব ফাহাদ বলেন, তানিম নূরের অদম্য ইচ্ছাই তাঁকে এ সিনেমায় যুক্ত হতে আগ্রহী করেছে।
সিনেমাটি নিয়ে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘এ সিনেমায় কাজ করেছি খুব আনন্দ নিয়ে। এ আনন্দ এবার আমরা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই।’ অপি করিম বলেন, ‘সবার সঙ্গে একই সিনেমায় কাজ করার লোভ সংবরণ করতে পারিনি। এই প্রজন্ম আমাদের তো একসঙ্গে কাজ করতে দেখেইনি। তাই ভাবলাম, এই প্রজন্ম “উৎসব” সিনেমার মধ্য দিয়ে দেখুক, আমরা এখনো আছি।’
এ সিনেমার বিষয়বস্তুর কথা মনে হলে শৈশবের কথাও মনে পড়ে ইন্তেখাব দিনারের। বলেন, ‘আমি এ সিনেমায় অনেক পরে যুক্ত হয়েছি। পরে যুক্ত করা হলেও আমি নির্মাতাকে ধন্যবাদ জানাই যে এমন একটা সিনেমায় আমি এত গুণী অভিনয়শিল্পী ও মানুষের সঙ্গে কাজ করছি।’ এত গুণী অভিনয়শিল্পীর সঙ্গে কাজ করতে পারাটাকে নিজেদের বড় পাওয়া মনে করছেন সুনেরাহ বিনতে কামাল ও সাদিয়া আয়মান।
সিনেমাটির গল্প লিখেছেন তানিম নূর, আয়মান আসিব স্বাধীন, সুস্ময় সরকার ও শিমুল হক। ডিরক্টর অব ফটোগ্রাফি হিসেবে কাজ করেছেন রাশেদ জামান। সিনেমার নাম ঘোষণা ও শিল্পী পরিচিতির এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কাজী নওশাবা, এফ এস নাঈম, সৈয়দ আহমেদ শাওকী, সালেহ সোবহান অনীম, ফাতেমা তুজ জোহরা ঐশীসহ অনেকে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র ছ ড় ক জ কর আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরের লৌহিয়া খালটি দখল উৎসবে চলছে
বন্দরের ঐতিহ্যবাহী লৌহিয়া খালটি দখল উৎসবে মেতে উঠেছে চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা। যে খাল দিয়ে এক সময় শীতলক্ষা-বহ্মপুত্র নদীতে সংযোগ ছিল।
সেই ঐতিহ্যবাহী খালটি অবৈধভাবে দখল করে পাঁকা স্থাপনা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস, ব্যাটারি ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেছে ওই সকল ভূমিদস্যুরা।
খালটি দখল হয়ে যাওয়ার কারনে পয়নিষ্কাশনসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত স্থানীয়রা। বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে উল্লেখিত খাল দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা ।
এলাকাবাসী ও বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা গেছে, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এম এ রশিদ ও সানাউল্লাহ সানু এবং বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিনের মদদপুষ্ট হয়ে আদর্শ বিদ্যানিকেতন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করতে গিয়ে খাল দখল করে রাস্তা বানিয়েছে।
তেমনি ভাবে গার্মেন্টস, ব্যাটারি ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে পানি চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া খালটি ভরাট করার কারনে বন্দর ইউনিয়নের ৯ নং ওর্য়াডের কদমতলীসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকা পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ড্রেজার দিয়ে ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমি ভরাট করতে গিয়ে সরকারি খাল দখল করে নিয়েছে। দেখার যেন কেউ নেই।
বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শওকত হোসেন সৈকত জানান, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার লিখিতভাবে জানিয়েও কোন সুফল পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রভাবশালী মহল ও ভূমিদস্যুদের কর্তৃক দখলকৃত খালটি উদ্ধার করে পয়নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ভূক্তভোগী এলাকাবাসী।