শওকত ওসমানের সাহিত্য শিল্পই নয়, মানবিক বিবৃতি
Published: 15th, May 2025 GMT
শওকত ওসমান ছিলেন একজন সংস্কারক। তাঁর সাহিত্যের রাজনৈতিক গভীরতা ও নৈতিক প্রতিবাদ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিক্ষা হয়ে থাকবে। এ সাহিত্য কেবল শৈল্পিক রচনাই নয়, মানবিক বিবৃতিও।
গতকাল বুধবার অমর কথাশিল্পী শওকত ওসমানের ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড.
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া বলেন, শওকত ওসমান শুধু কথাশিল্পী নন, তিনি ছিলেন একজন সংস্কারক, আধুনিকতা-সচেতন অন্তর্দর্শী। আমাদের দরকার তাঁকে চেতনার আলোয় নতুনভাবে পড়া, গবেষণার মাধ্যমে তাঁর হারিয়ে যাওয়া রচনাবলি উদ্ধার করা। তিনি বাংলা একাডেমিকে শওকত ওসমানের রচনাসমগ্র পুনঃপ্রকাশ, তাঁর নামে একটি সড়কের নামকরণ ও ‘শওকত ওসমান ইনস্টিটিউট’ গঠনের আহ্বান জানান।
প্রধান আলোচক সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, শওকত ওসমানের সাহিত্য মানুষের মুক্তি ও মানবিক বোধের মুক্তচিন্তা নিয়ে। তার লেখা আজকের সমাজ-রাষ্ট্রের সংকটে আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
প্রকাশক ফরিদ আহমেদ বলেন, শওকত ওসমানকে বোঝার জন্য আমাদের কেবল পাঠক নয়, চিন্তক হয়ে উঠতে হবে। তাঁর ভাষা ও বক্তব্যে যে রাজনৈতিক গভীরতা ও নৈতিক প্রতিবাদ, তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিক্ষা হয়ে থাকবে। অনুষ্ঠানে শওকত ওসমানের ছেলে লেখক জাঁ-নেসার ওসমান আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেন।
অধ্যাপক ড. দীপু সিদ্দিকী বলেন, শওকত ওসমানের সাহিত্য কেবল শৈল্পিক রচনাই নয়, বরং এক মানবিক বিবৃতিও। সেখানে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন, রাজনৈতিক বন্দিত্ব, চিন্তার সংকট ও মানবিক প্রতিরোধ– সবই উঠে এসেছে সাহসের সঙ্গে। যখন লেখালেখি হয়ে ওঠে ক্ষমতার মুখোশ, তখন শওকত ওসমানের লেখনী হয়ে ওঠে বিবেকের ভাষা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শওকত ওসমানের জীবন ও সাহিত্যকর্ম নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরপর কবিতা আবৃত্তি করেন কবি রিমা চিশতী, আনিসুর রহমান, রফিক চৌধুরী ও অধ্যাপক দীপু সিদ্দিকী। সমাপনী পর্বে শওকত ওসমানের কালজয়ী উপন্যাস ‘ক্রীতদাসের হাসি’ থেকে নির্বাচিত অংশ পাঠ করেন বাচিক শিল্পী আনিসুর রহমান, রিমা চিশতীসহ অনেকে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শওকত ওসম ন র অন ষ ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইট বন্ধ, কাল শোক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের মেধাবী শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্যর মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক দিবস ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিন দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসগুলো যথারীতি চলবে।
একইসঙ্গে, ঢাবির টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইট স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন:
সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর জানাজা বৃহস্পতিবার, দাফন বনানী কবরস্থানে
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক উপদেষ্টা শিল্পপতি সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী আর নেই
বুধবার (১৪ মে) ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইট স্থায়ীভাবে বন্ধ করার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বুধবার দুপুরে জরুরি বৈঠক করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, ঢাবির টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইট স্থায়ীভাবে বন্ধ থাকবে; বৃহস্পতিবার (১৫ মে) থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তল্লাশি অভিযান চলবে; সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে রমনা পার্কের মতো স্থায়ী উন্নয়নের জন্য গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে শিগগিরই একটি তদারকি কমিটি গঠন করা হবে, কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, কালী মন্দির কর্তৃপক্ষ ও বাংলা একাডেমির প্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
অন্য সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ও লাইটের ব্যবস্থা করা হবে এবং অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিতে ডিএমপির পক্ষ থেকে একটি পুলিশ বক্সও স্থাপন করা হবে; সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে একটি নিরাপদ পার্ক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শাহরিয়ার আলম সাম্যকে ছুরিকাঘাত করে একদল দুর্বৃত্ত। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় রাত ১২টার দিকে সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাম্যকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ও এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হলের ২২২ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী