শওকত ওসমান ছিলেন একজন সংস্কারক। তাঁর সাহিত্যের রাজনৈতিক গভীরতা ও নৈতিক প্রতিবাদ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিক্ষা হয়ে থাকবে। এ সাহিত্য কেবল শৈল্পিক রচনাই নয়, মানবিক বিবৃতিও।

গতকাল বুধবার অমর কথাশিল্পী শওকত ওসমানের ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড.

সুকোমল বড়ুয়া। প্রধান আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও আমার দেশ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ এবং প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান সময় প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদ। সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন রয়েল ইউনিভার্সিটির ডিন অধ্যাপক ড. দীপু সিদ্দিকী।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া বলেন, শওকত ওসমান শুধু কথাশিল্পী নন, তিনি ছিলেন একজন সংস্কারক, আধুনিকতা-সচেতন অন্তর্দর্শী। আমাদের দরকার তাঁকে চেতনার আলোয় নতুনভাবে পড়া, গবেষণার মাধ্যমে তাঁর হারিয়ে যাওয়া রচনাবলি উদ্ধার করা। তিনি বাংলা একাডেমিকে শওকত ওসমানের রচনাসমগ্র পুনঃপ্রকাশ, তাঁর নামে একটি সড়কের নামকরণ ও ‘শওকত ওসমান ইনস্টিটিউট’ গঠনের আহ্বান জানান।

প্রধান আলোচক সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, শওকত ওসমানের সাহিত্য মানুষের মুক্তি ও মানবিক বোধের মুক্তচিন্তা নিয়ে। তার লেখা আজকের সমাজ-রাষ্ট্রের সংকটে আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। 

প্রকাশক ফরিদ আহমেদ বলেন, শওকত ওসমানকে বোঝার জন্য আমাদের কেবল পাঠক নয়, চিন্তক হয়ে উঠতে হবে। তাঁর ভাষা ও বক্তব্যে যে রাজনৈতিক গভীরতা ও নৈতিক প্রতিবাদ, তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিক্ষা হয়ে থাকবে। অনুষ্ঠানে শওকত ওসমানের ছেলে লেখক জাঁ-নেসার ওসমান আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেন।

অধ্যাপক ড. দীপু সিদ্দিকী বলেন, শওকত ওসমানের সাহিত্য কেবল শৈল্পিক রচনাই নয়, বরং এক মানবিক বিবৃতিও। সেখানে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন, রাজনৈতিক বন্দিত্ব, চিন্তার সংকট ও মানবিক প্রতিরোধ– সবই উঠে এসেছে সাহসের সঙ্গে। যখন লেখালেখি হয়ে ওঠে ক্ষমতার মুখোশ, তখন শওকত ওসমানের লেখনী হয়ে ওঠে বিবেকের ভাষা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে শওকত ওসমানের জীবন ও সাহিত্যকর্ম নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরপর কবিতা আবৃত্তি করেন কবি রিমা চিশতী, আনিসুর রহমান, রফিক চৌধুরী ও অধ্যাপক দীপু সিদ্দিকী। সমাপনী পর্বে শওকত ওসমানের কালজয়ী উপন্যাস ‘ক্রীতদাসের হাসি’ থেকে নির্বাচিত অংশ পাঠ করেন বাচিক শিল্পী আনিসুর রহমান, রিমা চিশতীসহ অনেকে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শওকত ওসম ন র অন ষ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

গণ–অভ্যুত্থানের সময় চানখাঁরপুলে পুলিশের পোশাকে লোকেরা হিন্দি ভাষায় কথা বলছিল

গত বছরের ৫ আগস্ট জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় পুলিশের পোশাক পরিহিত লোকদের হিন্দি ভাষায় কথা বলতে শুনেছেন বলে জবানবন্দি দিয়েছেন সাক্ষী শহীদ আহম্মেদ।

গণ–অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১–এ শহীদ আহম্মেদ এই জবানবন্দি দেন। গত বছরের ৫ আগস্ট চানখাঁরপুলে গুলিতে শহীদ ছয়জনের একজন মো. ইয়াকুবের চাচা হলেন শহীদ আহম্মেদ।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল–১–এ আজ এই জবানবন্দি দেন শহীদ আহম্মেদ। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এই মামলায় আজ তিন সাক্ষী জবানবন্দি দেন। এ নিয়ে এই মামলায় মোট ছয় সাক্ষী জবানবন্দি দিলেন।

আজ জবানবন্দিতে সাক্ষী শহীদ আহম্মেদ বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট তিনি, তাঁর ছেলে সালমান, তাঁর ভাতিজা মো. ইয়াকুব ও তাঁর এলাকার রাসেল, সুমন, সোহেলসহ আরও অনেকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চাঁনখারপুল এলাকায় পৌঁছান। সেখানে হাজার হাজার লোক চারদিক থেকে জড়ো হচ্ছিলেন। তখন তিনি দেখেন, চানখাঁরপুল মোড়ের উল্টো পাশে অনেক পুলিশ, ছাপা পোশাকধারী পুলিশ ছিল। পুলিশের পোশাক পরিহিত লোকদেরকে হিন্দি ভাষায় কথা বলতে শোনেন তিনি। পুলিশ তাঁদের বাধা দিচ্ছিল। তাঁদের লক্ষ্য করে ফাঁকা গুলি করে পুলিশ। তাঁরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।

জবানবন্দিতে শহীদ আহম্মেদ বলেন, আবার তাঁরা সামনে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি করে। তাঁর পাশের একজনের পায়ে গুলি লাগে। তাঁকে তিনি সরাচ্ছিলেন। তখন তাঁকে একজন বলেন, তাঁর ভাতিজা ইয়াকুবের গায়ে গুলি লেগেছে। তিনি ওই ছেলেকে আরেকজনের কাছে রেখে ভাতিজার কাছে যান। আরও দুজনসহ ভাতিজাকে অটোরিকশায় করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার বলেন যে ইয়াকুব মারা গেছে।

এ মামলায় আট আসামি। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ্ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল পলাতক। আর অপর আসামি শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক আরশাদ হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও মো. নাসিরুল ইসলাম গ্রেপ্তার আছেন। আজ তাঁদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পৃথক হলো ঢাবি ও সাত কলেজ
  • ২০ মিনিটেই মিলল টিসিবির পণ্য, খুশি ক্রেতা
  • ডাকসু নির্বাচন: তৃতীয় দিনে মনোনয়ন নিলেন ২২ প্রার্থী
  • টের স্টেগেনের ‘দীর্ঘমেয়াদি চোট’, গার্সিয়াকে নিবন্ধন করাতে পারবে বার্সা
  • ধূমকেতুর জন্য রাজের প্রতীক্ষা শেষ
  • ইমাম বুখারির নিঃসঙ্গ মৃত্যু
  • কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ৪ অভিযোগ
  • গণ–অভ্যুত্থানের সময় চানখাঁরপুলে পুলিশের পোশাকে লোকেরা হিন্দি ভাষায় কথা বলছিল
  • সিলেটে ছুকিরাঘাতে মাদরাসা শিক্ষক নিহত
  • আগামী নির্বাচন হবে মাইনাস আওয়ামী লীগ: অলি আহমদ