ছেলেবেলা কেটেছে বই, সিনেমা আর কল্পনায়। আর এখন-ডেটা, অ্যালগরিদম আর গবেষণার জগতে। বাংলাদেশের ছেলে মো. রায়হান হাসান মাহিন নিজের ভেতর গড়ে তুলেছেন এক অনন্য যাত্রা, যেখানে গল্পকার থেকে হয়ে উঠেছেন সম্ভাবনাময় গবেষক। 

মাহিনের শৈশবের মোড় ঘোরে সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ দেখে। সেই সিনেমা তার মনে কল্পনা ও মানবিকতার যে বীজ বপন করে, তা সময়ের সঙ্গে বিকশিত হয় সাহিত্য, গবেষণা ও প্রযুক্তির পরতে পরতে।

২০০৬ সালের দিকে বাংলা ও বিশ্বসাহিত্যের বইয়ের প্রতি তার আগ্রহ বাড়ে। দার্শনিক চিন্তা, মনোবিজ্ঞান, রাজনীতি-সবকিছুতেই আগ্রহী হয়ে ওঠেন। দস্তয়েভস্কি, কাফকা, রবীন্দ্রনাথ, কামুর চিন্তা তাকে ভাবনায় গভীর করে তোলে। সে সময় থেকেই লেখালেখির শুরু। অস্তিত্ব সংকট, মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব ও সমাজ বাস্তবতা উঠে আসে তার ছোটগল্পে। ২০১৬ সালে ‘মাঝের পাতা’ নামে তার একটি গল্প স্থান পায় বইমেলার সংকলনে।

একই বছরে মাহিন পেশাজীবনে প্রবেশ করেন। একটি বহুজাতিক সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেন জুনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে। পাশাপাশি ভর্তি হন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে। এখানেই প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জগতে তার নতুন আগ্রহ তৈরি হয়।

মেশিন লার্নিং, ডেটা অ্যানালাইসিস, অ্যালগরিদম—এসব বিষয় তার কাছে হয়ে ওঠে নতুন ধরনের গল্প বলার মাধ্যম। গবেষণার প্রতি আগ্রহ বাড়তে থাকে। শুরু করেন স্বাধীন গবেষণা। কাজ করেন স্বাস্থ্য বিশ্লেষণ, রোগ শনাক্তকরণ ও আর্থিক পূর্বাভাস প্রকল্পে। সাহিত্যিক মননের কারণেই ডেটার মধ্যেও তিনি খুঁজে পান গল্প, যেখানে অন্যরা দেখে শুধু সংখ্যা।

এসময় মাহিন যুক্ত হন ‘সূর্য শিশির’ নামের একটি সংগঠনের সঙ্গে। অংশ নেন বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ এবং শহর পরিচ্ছন্নতা অভিযানে। ২০২৪ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় নিউ ইয়র্কে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আন্দোলনেও অংশ নেন।

২০২০ সালে স্নাতক ডিগ্রি শেষ করার পর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ রোচেলের মনরো বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হন। শুরুতে প্রবাসজীবন কঠিন ছিল। রান্না শেখা থেকে নিজের সব দায়িত্ব নিজেই নিতে হয়েছে। ধীরে ধীরে একা জীবনকেই মানিয়ে নেন। পড়ালেখার পাশাপাশি চালিয়ে যান গবেষণা।

মাহিনের গবেষণার বড় সাফল্য আসে ওরাল ক্যানসার শনাক্তকরণে মেশিন লার্নিং ব্যবহারের একটি গবেষণায়। ‘A Machine Learning Ensemble Approach for Early Detection of Oral Cancer’ শীর্ষক প্রবন্ধটি আন্তর্জাতিক গবেষণা জার্নালে প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি ক্লিনিক্যাল ডেটা ও ইমেজ অ্যানালাইসিস একত্র করে একটি কার্যকর ও স্কেলযোগ্য মডেল প্রস্তাব করেন।

এছাড়া আর্থিক বিশ্লেষণ ও বিগ ডেটা নিয়ে আরো কয়েকটি গবেষণায় কাজ করেছেন তিনি। বর্তমানে মাহিন কোনো প্রতিষ্ঠানে যুক্ত না থাকলেও গবেষণা, দক্ষতা উন্নয়ন এবং সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে নিয়মিত ব্যস্ত। ভবিষ্যতে পিএইচডি, বৈশ্বিক গবেষণা এবং জনস্বাস্থ্য ও নৈতিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা তার।

মাহিন বলেন, ‘‘গল্প বলা আমাকে অনুভব করতে শিখিয়েছে, গবেষণা আমাকে ব্যাখ্যা করতে শিখিয়েছে। এখন চাই এই জ্ঞান মানবকল্যাণে কাজে লাগাতে।’’

গল্প থেকে গবেষণায় এসে পৌঁছানো মাহিনের ভাষা এখন শব্দ নয়-ডেটা, অ্যালগরিদম আর কার্যকর প্রভাব।

ঢাকা/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

অতিতে চামড়া জোর করে নেওয়া হয়ছে, এবার হওয়ার কোনো সুযোগ নেই : ডিসি

‎আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহার কোরবানিকৃত পশুর চামড়া স্থানীয় পর্যায়ে সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে নিরবিচ্ছিন্নভাবে লবণ সরবারহ ও প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত। ‎বুধবার (১৪ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয় সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়

‎‎এসময় জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা, নারায়ণগঞ্জ ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্মকর্তা লবণ মালিক ও চামড়া ব্যবসায়িকগণ উপস্থিত ছিলেন।

‎এসময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন,আমাদের মুসলামান ধর্মের সবচাইতে বড় উৎসবগুলো আছে তার মধ্যে একটি অন্যতম উৎসব আমরা সেই উৎসবে। ‎আমাদের ধর্ম যে রীতি আছে সেখানে আমাদের যেত্যাগের যে ইতিহাস আছে আমরা সেই ইতিহাস 

‎সেই রীতি অনুযায়ী আমরা পশু জবাই দিয়ে থাকি আজকে আমরা সবাই মিলে সেই পশুর কিভাবে পশুর চামড়া গুলো কিভাবে আমরা সুন্দরভাবে ম্যানেজমেন্টটা আওতায় নিয়ে আসবো পশুর চামড়াগুলো আমার সংরক্ষণ করবো। আমাদের  লবণের কোনো ঘাটতি নেই।

‎ আর জায়গা বিষয়টি  হচ্ছে নিধারিত স্থান সংরক্ষণের জায়গায়  ৭ থেকে ১০ দিন সর্বোচ্চ ১০ দিন  সেখানে আপনাদের চামড়া গুলোর রাখতে পারবেন।

এসময় তিনি আরো বলেন,  যেহেতু চামড়া আমাদের একটি মূল্যবান সম্পদ আমরা বিদেশে চামড়া এক্সপোর্ট করে থাকি এবং এই চামড়া থেকে আমাদের দেশেরও অনেক শিল্প-কারখানা আছে।

আমাদের অনেকে চামড়া শিল্পের সাথে কাজ করে থাকে সুতরাং এই যে কাঁচামাল এটি যেন কোনভাবে আমাদের নষ্ট না হয় সচেতন হয়ে আমরা সুন্দরভাবে এই চামড়া ব্যবস্থাপনাটা করতে চাই।
‎ কেউ কোনরকম কোন অশুদ্ধ উপায় অবলম্বন না করে সেটিও আমরা  লক্ষ্য রাখবো।
‎  
‎ অনেক সময় চাঁদাবাজে মতন ঘটনা ঘটে জোর করে চামড়া  নিয়ে থাকে। সেগুলো যদি কারো মাথায় থেকে থাকে বলব এগুলো ভুলে যান। এই ধরনের কোন ঘটনা আমরা করতে দিব না এ ধারণার কাজ যে করবে আমরা  তার বিরুদ্ধে  আইনগত ব্যবস্থা নিবো।

অতীতে ‎চামড়া জোর করে নেওয়া হয়েছে এ ধরনের কালচার আমরা বিভিন্ন সময় দেখেছি এবং এটা আর হবে না । হওয়ার কোনো সুযোগ নাই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩৪তম নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা শুরু ২৩ মে
  • ১৩৩ সিসি ক্যামেরায় বাড়ল পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা
  • অতিতে চামড়া জোর করে নেওয়া হয়ছে, এবার হওয়ার কোনো সুযোগ নেই : ডিসি
  • ডেন্টাল অ্যানাটমিতে ডা. মুশফিক ও ডা. ইমনের অনন্য অর্জন
  • নড়াইলে হকার্স মার্কেটে অর্ধশতাধিক দোকান উচ্ছেদ
  • নড়াইলে হকার্স মার্কেটের অর্ধশতাধিক দোকান উচ্ছেদ
  • চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ শুরু
  • কোরবানি–সম্পর্কিত বিষয়ের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে ১৭ সদস্যের কমিটি