কিশোরগঞ্জের ভৈরবে অফিস রুমে ঢুকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত ও মারধর করার ঘটনায় অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা মো. আজিম রানা ভুঁইয়াকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। সোমবার রাতে জেলার বাজিতপুর উপজেলার মাইজচর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব।

অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা মো.

আজিম রানা ভূঁইয়া গজারিয়া ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পূর্বকান্দা গ্রামের মো. এলাছ উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে।

জানা যায়, গত ঈদের বন্ধের পর অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা মো. আজিম রানা ভূঁইয়া কাউকে না জানিয়ে বিদ্যালয়ের পানির ট্যাংক থেকে পাইপ লাগিয়ে পুকুরে পানি দেয়। যার কারণে বিদ্যালয়ের একমাত্র পাম্পটি পুড়ে যায়। এছাড়াও আজিম রানা প্রায়ই বিদ্যালয়ে দপ্তরির রুমে ঢুকে জোর করে মাদক সেবন করতেন। বিদ্যালয়ে মাদক সেবনে বাধা দিলে সে উগ্র হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। তার অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তার মায়ের কাছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিচার দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ২৯ জুন রোববার দুপুরে বিদ্যালয়ে অফিস রুমে ঢুকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক একেএম মাসুদকে মারধর করে। এ ঘটনার বিষয়টি তাৎক্ষণিক শিক্ষা অফিসার থানা পুলিশকে অবগত করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় ২৯ জুন রাতে ভৈরব থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক একেএম মাসুদ।

এ বিষয়ে ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব জানান, প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছনা করার ঘটনাটি দুঃখজনক। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত মাসুদ রানা পলাতক ছিলেন। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা মাসুদ রানাকে বাজিতপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। আজ ৮ জুলাই অভিযুক্ত মাসুদ রানাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ ভ রব য বল গ ন ত আজ ম র ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমরা এই ভূমিতেই থাকছি’

গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে ওপর থেকে ফেলছে বোমা আর নিচ থেকে ছুঁড়ছে গুলি। এমনকি যেসব ফিলিস্তিনি ত্রাণ নিতে ত্রাণকেন্দ্রে যাচ্ছে সেখানেও গুলি চালিয়ে নির্মমভাবে তাদের হত্যা করা হচ্ছে। এরপরেও গাজাবাসীকে জোরপূর্বক স্থানান্তরের ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনিরা। মঙ্গলবার রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

গাজার বাসিন্দা আল-খাইর বলেন, “এটা আমাদের ভূমি। আমরা এটা কার কাছে রেখে যাব, কোথায় যাব?”

সোমবার হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আতিথ্য দেওয়ার সময় ট্রাম্প উপকূলীয় ছিটমহল থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের বিতর্কিত উদ্যোগের অগ্রগতির ইঙ্গিত দেন।

মার্কিন ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মধ্যে এক নৈশভোজের শুরুতে সাংবাদিকদের নেতানিয়াহু বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল অন্যান্য দেশের সাথে কাজ করছে যারা ফিলিস্তিনিদের ‘উন্নত ভবিষ্যৎ’ দেবে, যা ইঙ্গিত দেয় যে গাজার বাসিন্দারা প্রতিবেশী দেশগুলোতে যেতে পারবে।

ট্রাম্পের সাথে এক মতবিনিময় সভায় নেতানিয়াহু বলেন, “আপনি জানেন যদি মানুষ থাকতে চায়, তাহলে তারা থাকতে পারে। কিন্তু যদি তারা চলে যেতে চায় তবে তাদের চলে যেতে হবে। এটি কারাগার হওয়া উচিত নয়। এটি একটি উন্মুক্ত জায়গা হওয়া উচিত এবং মানুষকে স্বাধীনভাবে পছন্দ করার সুযোগ দেওয়া উচিত।”

ট্রাম্প চলতি বছরের শুরুতে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরিত করার এবং উপত্যকাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরিয়া’ হিসেবে গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ওই সময় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে সাময়িকভাবে নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। 

২৭ বছর বয়সী গাজার বাসিন্দা সাঈদ ২০ মাসেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ এবং বারবার অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির পরেও গাজার সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত রয়েছেন।

তিনি বলেন, “আমাদের নিজস্ব ইচ্ছায় অন্য দেশ ভ্রমণের সুযোগ ও অধিকার আছে, কিন্তু ফিলিস্তিনি হিসেবে আমরা বাস্তুচ্যুতির পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করি।”

গাজার ফিলিস্তিনি আবু সামির এল-ফাকাওয়ি বলেন, “আমি গাজা ছেড়ে যাব না। এটি আমার দেশ।”

তিনি আরো বলেন, “যুদ্ধে শহীদ হওয়া আমাদের সন্তানদের এখানে সমাহিত করা হয়েছে। আমাদের পরিবার, আমাদের বন্ধু, আমাদের চাচাতো ভাইবোন- সবাই এখানে সমাহিত। ট্রাম্প, নেতানিয়াহু বা অন্য কেউ পছন্দ করুক বা না করুক, আমরা এই ভূমিতেই থাকছি।”
 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ