Samakal:
2025-11-02@23:23:43 GMT

যুদ্ধবিরতি নিয়ে আশা ও সংশয়

Published: 8th, July 2025 GMT

যুদ্ধবিরতি নিয়ে আশা ও সংশয়

যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বিশ্লেষকদের আশা, এ সফরে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বঘোষিত বিজয় উদযাপন ও গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করা হবে। চলতি বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এটা নেতানিয়াহুর তৃতীয় সাক্ষাৎ।

গত সপ্তাহে ট্রাম্প জানান, ইসরায়েল গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির শর্তে সম্মত হয়েছে। ফলে অবরুদ্ধ উপত্যকায় ইসরায়েলের ২১ মাস ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সব পক্ষ কাজ করতে পারবে। গত ৪ জুলাই হামাস সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব সম্পর্কে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের কাছে ‘ইতিবাচক’ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। প্রস্তাবের প্রতি হামাসের প্রতিক্রিয়ার পর গত শুক্রবার ট্রাম্প বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে’ একটি চুক্তি হতে পারে। তিনি যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে নেতানিয়াহুর সঙ্গে ‘অত্যন্ত দৃঢ়’ থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।

তখন থেকে ইসরায়েল বলছে, হামাস প্রস্তাবে যে পরিবর্তনের অনুরোধ করেছে, তারা তা ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে মনে করেছেন। তবে ইসরায়েলের আলোচকরা রোববার কাতারে প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা করতে যাবেন। আলজাজিরার হাতে আসা চুক্তির ফাঁস হওয়া একটি অনুলিপি অনুযায়ী, চুক্তির মধ্যে রয়েছে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি এবং ৫৮ ইসরায়েলি জিম্মির মধ্যে কয়েকজনকে পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেওয়া।

অনেক বিশেষজ্ঞ আলজাজিরাকে বলেছেন, তারা আশাবাদী নন যে, একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি যুদ্ধের স্থায়ী অবসান ঘটাবে। মিডল ইস্ট কাউন্সিল ফর গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিশেষজ্ঞ ওমর রহমান বলেন, ‘যেভাবে (যুদ্ধবিরতি আলোচনা) তৈরি করা হচ্ছে, তা আমাকে সন্দেহের মধ্যে ফেলেছে।’ তিনি বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে, ট্রাম্প ইসরায়েলের বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার দিকে মনোনিবেশ করেছেন, যুদ্ধ ও গাজার জনগণের দুর্ভোগের অবসানের দিকে নয়।

জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হওয়ার কয়েকদিন আগে ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দেওয়ার পর যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে দুই মাস পর যখন ইসরায়েল একতরফাভাবে গাজায় আক্রমণ ফের শুরু করে, তখন ট্রাম্প কিছুই করেননি। ফলে আরও হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিশেষজ্ঞ মাইরাভ জোনসেইন বলেন, এটি আবার ঘটতে পারে। ট্রাম্প ও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ প্রয়োগের বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভরশীল। তবে এটা যে তারা করবেন, তা নিয়ে উচ্চ সন্দেহ রয়েছে। তিনি বলেন, একটি যুদ্ধবিরতি হওয়ার আশা আছে। তবে তা কতদিন স্থায়ী হয়, সেটাই বিষয়। এ চুক্তির কিছু শর্ত নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

গাজার বাসিন্দারাও সাময়িক যুদ্ধবিরতি চান না। তারা চরম দুর্ভোগে, অনাহারে জীবনযাপন করছেন। পরিবার নিয়ে বারবার বাস্তুচ্যুতির শিকার হচ্ছেন। উত্তর গাজা থেকে পালিয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে গাজা সিটিতে আশ্রয় নিয়েছেন নাবিল আবু দাইয়াহ। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘আমি কোনো চুক্তি চাই না। পুরো যুদ্ধের অবসান চাই। আসলে আমি শঙ্কিত, ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি শেষে আবারও যুদ্ধ শুরু হতে পারে।’ 

ট্রাম্প-নেতানিয়াহু বৈঠক 
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর মধ্যে গতকাল সোমবার ওয়াশিংটনে বৈঠক হয়। দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, ২১ মাস ধরে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ট্রাম্প ইসরায়েলকে চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে কিছু বিষয়ে অনৈক্য থেকে গেছে। হামাসের দাবি, হামলা পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে ও সব সেনা সরিয়ে নিতে হবে। ইসরায়েল বলছে, যুদ্ধ শেষ করতে হলে হামসাকে অস্ত্র রেখে আত্মসমর্পণ করতে হবে।

এ অবস্থায় গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। রাফায় ত্রাণপ্রত্যাশীদের ওপর হামলা হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর এ পর্যন্ত গাজায় ৫৭ হাজার ৫২৩ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল প রস ত ব র অবস ন ইসর য় ল ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।

আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।

আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।

ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ