মানুষের মুখমণ্ডলের অবিচ্ছেদ্য অংশ কান। কানের নানা অংশ দিয়ে আমরা শুনে থাকি। কানের নিচের নরম মাংসের অংশটিকে কানের লতি বলা হয়। কানের লতিকে বৈজ্ঞানিক ভাষায় লোবিউল বলা হয়। এই অংশ তরুণাস্থিবিহীন। চর্বি ও কানেকটিভ টিস্যু দিয়ে তৈরি রক্তনালিসমৃদ্ধ অঙ্গ হচ্ছে কানের লতি। নানা ধরনের অলংকার পরা হলেও কানের লতির কার্যক্রম সম্পর্কে প্রশ্ন রয়েছে অনেকের মনেই।
অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন, মানুষের কানের লতির নির্দিষ্ট বা অপরিহার্য কোনো জৈবিক কাজ নেই। মানবদেহের একটি ভেস্ট্রিজিয়াল অঙ্গ হিসেবে কানের লতি বিবর্তনের ধারায় তার মূল কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলেছে। আবার কোনো কোনো বিজ্ঞানী মনে করেন, কানের লতির মধ্যে থাকা রক্তনালি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সামান্য ভূমিকা পালন করে। রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে তাপ বিনিময় করে। যদিও এসব ধারণার পক্ষে কোনো জোরালো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
মানুষের কানের লতি অকার্যকর বলা যায়। অন্যদিকে প্রাণিজগতে কানের বাইরের অংশের কার্যকারিতা বেশ ভালোভাবে দেখা যায়। অধিকাংশ স্তন্যপায়ী প্রাণীর মানুষের মতো মাংসল লতি থাকে না। বিভিন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে, যেমন হরিণ, খরগোশ ও হাতির বিশাল কানের লতি দেখা যায়। হরিণ, খরগোশ বা শিয়ালের মতো প্রাণীদের বড় আকারে ঘোরানো কান থাকে। এই সব প্রাণী তাদের কানকে বিভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে শব্দের উৎস শনাক্ত করতে পারে। হাতির বিশাল কান শ্রবণের পাশাপাশি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাদের কানের পাতলা অংশে প্রচুর রক্তনালি থাকে, যা বাতাস চলাচলের সময় শরীর থেকে অতিরিক্ত তাপ বের হতে সাহায্য করে। অন্যদিকে বাদুড়ের কানের মধ্যে অসাধারণ অভিযোজন দেখা যায়। বাদুড় উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির শব্দ উৎপন্ন করে। নিজের কানের মাধ্যমে সেসব শব্দের প্রতিধ্বনি শুনে অন্ধকারে চলাচল ও শিকার ধরে। বাদুড়ের কানের বাইরের দিকে বেশ কিছু জটিল ভাঁজ দেখা যায়। এই ভাঁজ প্রতিধ্বনি সংগ্রহ ও বিশ্লেষণে সাহায্য করে।
প্রাণিজগতে পাখিদের মধ্যে কোনো বাহ্যিক কানের লতি দেখা যায় না। পাখির শ্রবণের অঙ্গ পালকের আড়ালে লুকিয়ে থাকে। পালক পাখির কানের ছিদ্রকে রক্ষা করে এবং শব্দতরঙ্গকে সরাসরি কানের ভেতরে পৌঁছাতে সাহায্য করে। অন্যদিকে মাছের কোনো বাহ্যিক কান বা কানের লতি দেখা যায় না। শ্রবণের জন্য রয়েছে অভ্যন্তরীণ কান এবং ল্যাটারাল লাইন সিস্টেম ব্যবহার করে মাছ। ল্যাটারাল লাইন সিস্টেম পানির কম্পন শনাক্ত করে। তিমি ও ডলফিনের মতো প্রাণীর কোনো বাহ্যিক কান বা কানের লতি নেই। তাদের কানের ছিদ্র খুবই ছোট ও প্রায় অদৃশ্য।
সূত্র: সায়েন্স ফোকাস, ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্স এডুকেশন
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নিশো-চঞ্চল একসঙ্গে ‘দম’
‘দম’-এ প্রথমবার একসঙ্গে অভিনয় করছেন আফরান নিশো ও চঞ্চল চৌধুরী। রেদওয়ান রনির পরিচালনায় নির্মিতব্য এই সিনেমাটি আগামী ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাবে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
সত্য ঘটনা অবলম্বনে গড়ে উঠেছে ‘দম’-এর গল্প। রনি বলেন, ‘‘দম’ একজন সাধারণ মানুষের জ্বলে ওঠার গল্প—‘পাওয়ার অফ আ কমন ম্যান’। বহুদিন ধরে এমন একটি চরিত্র খুঁজছিলাম, যা দর্শকদের অনুপ্রাণিত করবে।”
অন্যদিকে আফরান নিশো বলেন, “এমন গল্প নিয়ে আগে সিনেমা হয়েছে বলে মনে হয় না। পারফরম্যান্সের জায়গা থেকে এটি বেশ চ্যালেঞ্জিং। আমার ‘সুড়ঙ্গ’ ও ‘দাগি’র পর ‘দম’ হতে যাচ্ছে আরও বড় ক্যানভাসের একটি গল্প।”
এ সিনেমার ঘোষণা আসে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। তখন জানানো হয়েছিল, চঞ্চল চৌধুরী অভিনয় করবেন। পরে যুক্ত হন নিশোও।
চঞ্চল বলেন, “রেদওয়ান রনি পরিচালনায় ফিরছে, এটাই আনন্দের। ‘দম’-এর গল্প অসাধারণ ও চ্যালেঞ্জিং। দর্শকরাও চমকে যাবেন।”
সিনেমাটির নারী চরিত্র, শুটিং লোকেশন ও সময় এখনও প্রকাশ করা হয়নি। প্রযোজনায় রয়েছে এসভিএফ আলফা-আই এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেড ও চরকি।
ঢাকা/রাহাত//