বাংলাদেশসহ ১৪ দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এসব দেশের জন্য আলোচনার দরজাও খোলা রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আগামী ১ আগস্ট থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা বলা হলেও এ নিয়ে দর কষাকষির সুযোগ রয়েছে।

স্থানীয় সময় সোমবার জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের কাছে চিঠি পাঠিয়ে এপ্রিলে স্থগিত করা শুল্ক ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। 
নিজের মালিকানাধীন ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা চিঠিতে ট্রাম্প জানান, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়ার ওপর ৩২ শতাংশ, থাইল্যান্ডের ওপর ৩৬ শতাংশ এবং বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। খবর রয়টার্সের।

ট্রাম্প গত ২ এপ্রিলকে ‘লিবারেশন ডে’ আখ্যা দিয়ে বিভিন্ন দেশের আমদানিপণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু বিশ্ববাজারে অস্থিরতা দেখা দিলে তিনি ৯০ দিনের জন্য তা স্থগিত করেন। সেই মেয়াদ বুধবার শেষ হওয়ার আগেই তিনি নতুন করে এই চিঠি পাঠালেন।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক নৈশভোজে সাংবাদিকেরা জানতে চান, ১ আগস্টের সময়সীমা চূড়ান্ত কি না? জবাবে ট্রাম্প বলেন, সময়সীমাটি চূড়ান্ত, তবে শতভাগ নয়।

চিঠিতে যে শুল্ক আরোপের কথা বলা হয়েছে সেটাই চূড়ান্ত কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বলব এটাই চূড়ান্ত। তবে তারা যদি ভিন্ন কোনো প্রস্তাব নিয়ে আসে এবং তা আমার পছন্দ হয়, তাহলে আমরা সেটাই করব।

ট্রাম্পের এমন দ্বিমুখী অবস্থানে আলোচনার সুযোগ তৈরি হলেও বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা ঘনীভূত হয়েছে। তার এই নতুন হুমকির পর যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারেও দরপতন হয়েছে। নাসডাক সূচক শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ এবং এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ পয়েন্ট হারিয়েছে।

ট্রাম্পের এই ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা এই ঘোষণাকে ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন।

এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়েন্ডি কাটলার বলেছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ অন্যদের কাছে বিপজ্জনক বার্তা হিসেবে বিবেচিত হবে।

তবে মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট অবশ্য বলছেন আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তারা বেশ কয়েকটি ঘোষণা দেবেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ল ককর য ক তর ষ ট র আমদ ন শ ল ক আর প র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

আফগানদের ইরান ছাড়ার শেষ দিন আজ, কাল থেকে গ্রেপ্তার

ইরানে বসবাসকারী লাখ লাখ আফগান অভিবাসী ও শরণার্থীকে দেশ ছাড়তে শেষবারের মতো নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। স্বেচ্ছায় ইরান ত্যাগের জন্য নির্ধারিত সময়সীমার শেষ দিন আজ রোববার। এরপর কাল থেকে ‘অবৈধভাবে অবস্থানরত’ আফগানদের গ্রেপ্তার করে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। খবর আল জাজিরার

এমন এক সময় এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো, যখন ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের সংঘাতের পর ইরানে নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। ওই সংঘাতে জড়িয়ে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্রও।

গত মার্চ মাসে ইরান সরকার একটি আদেশ জারি করে। সেখানে অবৈধভাবে বসবাসকারী আফগানদের ৬ জুলাইয়ের (আজ রোববার) মধ্যে স্বেচ্ছায় চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়, তা না হলে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে আদেশে জানানো হয়। 

মানবাধিকার সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, ইরান থেকে আফগানদের গণহারে ফেরত পাঠানো হলে আফগানিস্তান আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। যুদ্ধ, দারিদ্র্য এবং তালেবান শাসন থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসা এই মানুষদের অনেকে কয়েক দশক ধরে ইরানে বসবাস করছেন।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানায়, তেহরান ২০২৩ সালে ‘অবৈধভাবে’ দেশে বসবাসকারী বিদেশিদের বহিষ্কারের জন্য একটি অভিযান শুরু করে। পরে চলতি বছরের মার্চে ইরান সরকার একটি সময়সীমা ঘোষণা করে-যার মধ্যে যারা বৈধতা ছাড়া অবস্থান করছে, তাদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এরপর থেকে প্রায় সাত লাখ আফগান ইরান ছেড়েছে, শুধু জুন মাসেই ফিরে গেছে ২ লাখ ৩০ হাজারের বেশি।

ইরানে প্রায় ৪০ লাখ আফগান শরণার্থী ও অভিবাসী রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তাদের অনেকে সেখানেই জন্মেছে এবং বেড়ে উঠেছে।

তেহরানে বসবাসকারী আফগান রেস্তোরাঁ মালিক বতৌল আকবরি আল জাজিরাকে বলেন, ইরানে এখন ‘অ্যান্টি-আফগান’ মনোভাব দেখা যাচ্ছে, যা আমাদের ভীষণভাবে কষ্ট দিচ্ছে। আমাদের অনেকের কাছে এটাই একমাত্র চেনা ঘর।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানায়, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালীন প্রতিদিন গড়ে ৩০ হাজার আফগানকে ইরান থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যেখানে আগের গড় ছিল দিনে মাত্র দুই হাজার।

ইরান সরকারের মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি বলেন, আমরা সবসময় অতিথিপরায়ণ ছিলাম। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তা আমাদের অগ্রাধিকার। অবৈধভাবে অবস্থানকারী বিদেশিদের অবশ্যই ফিরে যেতে হবে।

তেহরান থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক রেসুল সেরদার জানান, ইরানের অর্থনৈতিক সংকট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও সামাজিক সমস্যার জন্য আফগানদের দায়ী করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই অভিযোগগুলো আরও উসকে উঠেছে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চালানো প্রচারণা ও রাজনৈতিক ভাষণের মাধ্যমে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে ইসরায়েল আফগানদের গুপ্তচর হিসেবে ব্যবহার করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামী নির্বাচনে এআইয়ের অপব্যবহার ঠেকাতে কানাডার সহায়তা চেয়েছে ইসি: সিইসি
  • শুল্ক ইস্যুতে বাংলাদেশসহ ১৪ দেশের জন্য আলোচনার দরজা খোলা রাখলেন ট্রাম্প
  • ট্রাম্পের ঘোষণায় মার্কিন শেয়ারবাজারে পতন
  • বাংলাদেশসহ ১৪ দেশে নতুন শুল্কের সময়সীমা ‘শতভাগ চূড়ান্ত নয়’, দর-কষাকষির সুযোগ রাখলেন ট্রাম্প
  • নতুন শুল্কের সময়সীমা ‘শতভাগ চূড়ান্ত নয়’, দর-কষাকষির সুযোগ রাখলেন ট্রাম্প
  • ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক কার্যকরের সময়সীমা বাড়ল
  • যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছে: ট্রাম্প
  • ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল: দেখে নিন সময়সূচি
  • আফগানদের ইরান ছাড়ার শেষ দিন আজ, কাল থেকে গ্রেপ্তার