বাংলাদেশের ওপর নতুন করে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে এই শুল্ক। তার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাতে চায় বাংলাদেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা চালিয়ে যেতে ওয়াশিংটন ডিসিতে এখন অবস্থান করছেন বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। প্রতিনিধিদলে রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড.

খলিলুর রহমানও। আগামীকাল ৯ জুলাই এ বিষয়ে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠক হবে। 

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে বৈঠকের বিষয়টি জানান। 

এর আগে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো চিঠিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ২০২৫ সালের ১ অগাস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো বাংলাদেশি সব পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এই শুল্ক বর্তমানে খাতভিত্তিক যে শুল্ক দেওয়া হয়, তার অতিরিক্ত হিসাবে প্রযোজ্য হবে। ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে পণ্য পাঠানো হলেও সেখানেও এই শুল্ক প্রযোজ্য হবে।

প্রেস সচিব লেখেন, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন এখন ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থান করছেন এবং বাংলাদেশের বাণিজ্য আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানও এই প্রতিনিধিদলে রয়েছেন।

“গতকাল (৭ জুলাই) বাংলাদেশ একটি চিঠি পেয়েছে, যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন যে, ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের পণ্যের উপর ৩৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হবে।”

তিনি জানান, বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল এরইমধ্যে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক দফায় আলোচনা করেছে। আগামী ৯ জুলাই আরেক দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে, যার নেতৃত্ব দেবেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। 

“ঢাকা আশাবাদী, ওয়াশিংটন ডিসির সঙ্গে একটি যৌক্তিক ও পারস্পরিক সুবিধাজনক শুল্কচুক্তি হবে, যা উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হবে,” বলেন তিনি।

ঢাকা/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র র উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

খুবির ২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আনা ‘চাঁদাবাজি’র অভিযোগের নতুন মোড়

খুলনায় একটি মেলাকে কেন্দ্র করে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর ওপর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি অডিও রেকর্ডে এমন দাবি করা হয়, যা নিয়ে ছাত্রসমাজ ও স্থানীয় পর্যায়ে নানা গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। তবে এ বিষয়ে নতুন তথ্য সামনে এসেছে।

অডিও রেকর্ড অনুযায়ি, মেলার আয়োজক হিসেবে পরিচয় দেওয়া বগুড়ার মন্টু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর সত্ত্বাধিকারী মন্টুর কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠে খুলনা মহানগরের ছাত্র প্রতিনিধি পরিচয়ধারী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী জহুরুল ইসলাম তানভীর এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদের বিরুদ্ধে।

ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডে আংশিক কথোপকথন শোনা গেলেও পুরো বিষয়টি স্পষ্ট নয়। তবে অভিযুক্তদের দাবি, এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। এর মাধ্যমে জুলাই বিপ্লব ও জুলাই যোদ্ধাদের মধ্যে একতা নষ্ট করার ব্যর্থ প্রয়াস চালানো হচ্ছে।

আরো পড়ুন:

টিউশনির টাকায় বিসিএসের প্রস্তুতি: ৪৩-এ শিক্ষা, ৪৪-এ পররাষ্ট্র ক্যাডার

জঙ্গি সন্দেহে তুলে নেওয়ার ৫ বছর পর মুক্তি পেলেন খুবির দুই শিক্ষার্থী

জানা গেছে, খুলনায় আয়োজিত ওই মেলার প্রকৃত মালিকানা মন্টু মিয়ার নামে নয়, বরং মেলাটি এক পর্যায়ে মো. রাসেল মিয়া নামে অন্য একজনের কাছে হস্তান্তরিত হয়েছিল। ফলে পুরো ঘটনার প্রেক্ষাপট নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

প্রকৃত মালিক রাসেল মিয়া এক ভিডিও বার্তায় স্পষ্টভাবে দাবি করেন, “মন্টু নামের যে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কথিত সত্ত্বাধিকারীর কথা বলা হচ্ছে, সে একজন প্রতারক। মেলা নিয়ে নানা মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে আমাকেসহ অনেককে বিভ্রান্ত করেছে। প্রকৃত মালিকানা আমার কাছেই আছে এবং কোনো ধরনের চাঁদা লেনদেন ঘটেনি।”

তিনি আরো উল্লেখ করেন, “আমার পক্ষ থেকে কারো সঙ্গে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন হয়নি। এ মেলাকে ঘিরে যে কথিত চাঁদাবাজির গল্প ছড়ানো হচ্ছে, তা মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

আরো পড়ুন: খুবির ২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ, অডিও ফাঁস

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ বলেন, “সম্পূর্ণ পরিকল্পিত মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে আমাদের হয়রানি ও বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চলছে। কথিত যে অডিও রেকর্ড ছড়ানো হয়েছে, সেটি বিভ্রান্তমূলক। আমাদের পক্ষ থেকে কখনোই কোনো আর্থিক লেনদেনের কথা বলা হয়নি। বরং কথিত আয়োজক মন্টু নিজেই প্রথমে আর্থিক লেনদেনের প্রসঙ্গটি তোলে এবং সেটিকে ঘিরেই পুরো ষড়যন্ত্র সাজানো হয়েছে।”

তিনি বলেন, “বিভিন্ন সময়ের কথোপকথন কেটে-ছেঁটে এবং এডিটিং করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জনমত বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে। প্রযুক্তির এ যুগে যে কেউ চাইলে উন্নত সফটওয়্যার ব্যবহার করে ছবি, কণ্ঠ বা বার্তা বিকৃতভাবে তৈরি করতে পারে, যা এখানেই ঘটেছে। এটা ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বিশেষের সুবিধা হাসিলের অপকৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। এই ভিত্তিহীন প্রোপাগাণ্ডার বিরুদ্ধে আমরা কঠোর আইনি ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”

অপর অভিযুক্ত জহুরুল ইসলাম তানভীর সাংবাদিকদের বলেন,“এটি অনেক আগের বিষয়। আমাদের সম্পৃক্ততা আছে কি না, সেটা তদন্তেই প্রমাণ হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে, তদন্তের ফলাফলের পরই আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাব।”

এদিকে নেটিজেনদের একটি অংশ বলছে, পুরো রেকর্ডে কোনো আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ সরাসরি শোনা যায়নি। কথোপকথনের শব্দ চয়ন, আঞ্চলিক ভাষা এবং ব্যক্তিগত নাম ব্যবহার করে একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র সাজানো হয়েছে।

ঢাকা/হাসিবুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ