জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়ার সাড়ে পাঁচ বছর পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী—নুর মোহাম্মদ অনিক ও মোজাহিদুল ইসলাম। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় খুলনা জেলা কারাগার থেকে তাঁরা মুক্তি পান। এর আগে গত সপ্তাহে উচ্চ আদালতে তাঁদের জামিন মঞ্জুর করা হয়।

সহপাঠীদের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ওই দুই শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যান। ১৭ দিন ধরে অজ্ঞাত স্থানে রেখে তাঁদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। পরে ২৫ জানুয়ারি পুলিশ জানায়, বিস্ফোরক দ্রব্যসহ তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই দিন খুলনার কৃষক লীগ কার্যালয় ও আড়ংঘাটা থানার গাড়ির গ্যারেজে বোমা হামলার মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর পুলিশ আরও চারটি মামলা করে তাঁদের বিরুদ্ধে।

নুর মোহাম্মদ অনিক মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা ডিসিপ্লিনের এবং মোজাহিদুল ইসলাম পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিনের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। গত বছর আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তনের পর সহপাঠী, রুমমেট, শিক্ষক ও স্বজনেরা তাঁদের মুক্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেন।

গতকাল মুক্তির পর কারাগারের সামনে দুই শিক্ষার্থীকে ফুল দিয়ে বরণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠজনেরা।

ওই দুই ছাত্রের আইনজীবী আকতার জাহান বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে দুটি মামলায় তাঁরা খালাস পেয়েছেন। দুটি মামলায় জামিন হয় এবং সোনাডাঙ্গা থানার অপর দুটি মামলায় দণ্ড দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত মামলাগুলোর জামিন চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত জামিন মঞ্জুর করেছেন। ছুটি থাকায় আদালতের আদেশ কারাগারে পৌঁছাতে তিন দিন সময় লেগেছে। এরপর গতকাল সন্ধ্যায় তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রেজাউল করিম বলেন, ‘জঙ্গি নাটকে যাঁরা জড়িত, তাঁদের বিচার হওয়া উচিত। দীর্ঘদিন পর কারামুক্ত হওয়া দুই শিক্ষার্থী নতুন জীবন ফিরে পেয়েছেন। তাঁদের পাশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থাকবে। তাঁদের বরণ করে নিতে আমাদের একটি প্রতিনিধিদল খুলনা কারাগারে গিয়েছিল।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমিকার দেখা পেতে বোমা ছুঁড়ে গ্রেপ্তার প্রেমিক

রাগ করে কথা বন্ধ করেছিল প্রেমিকা। রাগ ভাঙিয়ে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে, একটু কথা বলতে ইউটিউব থেকে বোমা তৈরিত কৌশল শিখেছিল প্রেমিক। বোম ফাটার শব্দে যদি প্রেমিকা বেরিয়ে আসে... এই আশায়। এক্সপার্টের মতো বানিয়েও ফেলে বোমা। কিন্তু বোমা ফাটার তীব্র সেই শব্দে আতঙ্কিত হয়ে প্রেমিক ও তার বন্ধুরা পালিয়ে যায় নিজেরাই। 

গত ২৮ অক্টোবর, ছট পূজার রাতে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার বৈদ্যবাটি এক আবাসিক এলাকা গভীর রাতে বোমা বিস্ফোরণের তীব্র আওয়াজে কেঁপে উঠে। বোমা মারার সেই ঘটনা দুষ্কৃতী আক্রমণ ভেবে লেগেছিল রাজনৈতিক রং, তৈরি হয়েছিল আতঙ্ক। হয়েছিল সংবাদমাধ্যমে খবরের শিরোনাম। স্বাভাবিকভাবেই দুষ্কৃতীদের ধরতে চাপে পড়ে পুলিশ প্রশাসন। কিন্তু তদন্তে প্রেমিক প্রেমিকার রাগ ভাঙানোর তথ্যে তদন্ত যেন মোড় নিয়েছে আশ্চর্যের এক প্রেমের গল্পে। 

আরো পড়ুন:

বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে ভারতীয় পাসপোর্টের অবনতি কেন?

জঙ্গি সন্দেহে ভারতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশি ‘মুফতি মাসুদ’

পুলিশ জানায়, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড মালিরবাগান খামারডাঙা এলাকায় একটি বাড়িতে বোমা ছোঁড়া হয়। বাড়িটির দেয়ালে লাগে বোমা, জানালার কাঁচ ভেঙে যায়।

ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ বাড়িটির বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু কোনো সূত্র পাওয়া যায় না। এরপর এলাকার লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পাশাপাশি সিসিটিভির ফুটেজে একটি বাইকের ছবি দেখে তার সন্ধান শুরু করে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মালিরবাগান এলাকায় যেখানে বোমাবাজি হয়েছিল সেখানে এক তরুণীর সঙ্গে চাঁপদানীর স্থানীয় যুবক সাগর মালিকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কে অবনতি হওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরে প্রেমিক প্রেমিকার দেখা-সাক্ষাৎ হচ্ছিল না। এর মধ্যেই প্রেমিক বন্ধুদের মারফত জানতে পারে প্রেমিকা অন্য এক যুবকের সঙ্গে মেলামেশা করছে। এদিকে সাগরের ফোন ধরা বন্ধ করে দেয় তরুণী।

কী করে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করা যায় সেটাই ভাবতে থাকে প্রেমিক। এরপরেই বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করে দেখা করার বুদ্ধি বের করে সাগর। ইউটিউব দেখে বেশ কয়েক ধরনের পটকার উপদান দিয়ে বোমা বানায়। সেটি ফাটানোর পরিকল্পনা করা হয় প্রেমিকার বাড়ির পাশে। 

বোমা ফাটার আওয়াজে তরুণী প্রেমিকা যদি বেরিয়ে আসে তাহলে তার সঙ্গে কথা বলবে- এই উদ্দেশ্য নিয়ে ছট পূজার রাতে চার বন্ধু পৌঁছে যায় মালিরবাগান এলাকায়। বোমা ছোঁড়ে একটি বাড়ির দেওয়ালে। এতটাই জোরে শব্দ হয় যে তারা নিজেরাই ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়।

এদিকে পুলিশ ওই তরুণীর সঙ্গে সাগরের সম্পর্কের কথা জানতে পেরে তার খোঁজ শুরু করে। পাশাপাশি বাইকের নম্বর দেখে খোঁজ শুরু করে। সাগর এবং তার বন্ধুদের বাড়ি গিয়ে পুলিশ জানতে পারে যে, তারা ঘটনার পর থেকে আর বাড়িতে থাকছিল না। ঘটনার পর চার বন্ধুই কল্যাণীতে পালিয়ে গিয়েছিল বলে জানতে পারে পুলিশ। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে গতকাল শুক্রবার পুলিশ তাদেরকে ব্যারাকপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, আটক সাগর মালিক, প্রিন্স যাদব, প্রণীত পাল, আয়ুস যাদব, চারজনেরই বয়স ১৮-২০ বছর।ইতিমধ্যেই তাদের শ্রীরামপুর আদালতে পেশ করা হয়েছে। আরো জিজ্ঞাসাবাদ জন্য পুলিশ তাদের রিমান্ডে নিয়েছে।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়
  • নাজমুলই থাকছেন টেস্ট অধিনায়ক
  • বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
  • সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২
  • প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
  • প্রেমিকার দেখা পেতে বোমা ছুঁড়ে গ্রেপ্তার প্রেমিক
  • যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা
  • বোনকে খুন করে লাশ বস্তায় ভরেন, পুলিশ জিজ্ঞেস করলে জানান বস্তায় গম
  • বায়ার্নের টানা ১৪ ম্যাচ জয়ের অবিশ্বাস্য রেকর্ড
  • মাহিমা চৌধুরী-সঞ্জয় মিশ্রা বিয়ে করেছেন?