প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের অভিযোগ, বিয়ের দাবি তরুণীর
Published: 8th, July 2025 GMT
প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন- এমন অভিযোগ করে এক তরুণী বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে গত রবিবার (৬ জুলাই) রাত থেকে অবস্থান নেন তিনি। অভিযুক্ত ফরিদ পালোয়ান (২৫) ধর্ষণের মামলা দায়েরের পরই পালিয়ে গেছেন ইতালিতে।
ভুক্তভোগী তরুণী কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাসিন্দা। অভিযুক্ত ফরিদ পালোয়ান কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের হরিদেবপুর গ্রামের মৃত মিয়ার উদ্দিন পালোয়ানের ছেলে।
ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, “আমি ন্যায়বিচার চাই। বিয়ে করতে চাইলে কাবিনসহ বৈধভাবে বিয়ে করতে হবে। আমি কোনো অন্যায় করিনি। আমি আইনের মাধ্যমে সুবিচার চাই। ফরিদের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে আশ্রয় নিলেও জীবনের শঙ্কায় রয়েছি।”
ভুক্তভোগী তরুণী জানান, প্রায় দেড় বছর ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো দেখা হয় তাদের। ফরিদের ডাকে সাড়া দিয়ে বিকেলে তিনি ঘোড়াশালে গেলে ফরিদ তাকে মোটরসাইকেলে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে অবশেষে রাতের বেলায় হরিদেবপুর গ্রামের একটি নির্জন বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ফরিদ। এরপর ৯ মার্চ ঢাকার মালিবাগের একটি বাসায় নিয়ে গিয়েও একইভাবে ধর্ষণের ঘটনা ঘটায় সে।
তরুণী অভিযোগ করেন, ধর্ষণের পর বিয়ের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি ফরিদ। শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে ফরিদ ওষুধ আনার কথা বলে তাকে যাত্রাবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে ফেলে উধাও হয়ে যায়।
পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তিনি ফরিদের গ্রামের বাড়ি হরিদেবপুরে গিয়ে আশ্রয় নেন। সেখানে ফরিদের মা-বোন ও আত্মীয়-স্বজনেরা তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে ওই গ্রামের একজনের সহযোগিতায় ওই রাতেই তিনি নিরাপদ আশ্রয় পান।
এ ঘটনার পর পরিবারের পরামর্শে গত ১২ মার্চ কালীগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (নং ৯) দায়ের করেন ভুক্তভোগী। মামলার প্রধান আসামি ফরিদ পালোয়ান ঘটনার পরপরই ইতালিতে পালিয়ে যায়।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.
ঢাকা/রফিক/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জিএম কাদেরের সিদ্ধান্ত মানেন না আনিসুল-রুহুল-মুজিবুল
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মো. মুজিবুল হক (চুন্নু) বলেছেন, জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে দলের নেতাদের সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। তাঁরা জিএম কাদেরের সিদ্ধান্ত মানেন না। তাঁরা দলের কাউন্সিলে অংশ নেবেন।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জাপার সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি পাওয়া এই তিন জ্যেষ্ঠ নেতা।
সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মহাসচিব মুজিবুল হককে গতকাল সোমবার দলীয় সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেন জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের। গতকাল বিকেলে জাপার কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। অন্যদিকে শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে দলের মহাসচিব করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে মোট ১১ জন নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। এ নিয়ে জাপায় অস্থিরতা চলছে। এসব বিষয় নিয়ে আগামীকাল বুধবার জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন বলে দলের একটি সূত্রে জানা গেছে।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, জিএম কাদের যে সভা ডেকে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন, এই সভা তিনি ডাকতে পারেন না। দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভা ডাকতে পারেন দলের মহাসচিব। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা তাঁরা মানেন না। তাঁরা তাঁদের পদে বহাল আছেন। কেউ বলতে পারবেন না, তাঁরা দলের কোনো বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা সব সময় সংঘবদ্ধ থাকার কথা বলেছেন।
জাপার গঠনতন্ত্রের যে ধারাবলে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তা বাতিলের দাবি জানান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, কোনো গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলে এমন স্বৈরাচারী ধারা থাকতে পারে না। এর মাধ্যমে চেয়ারম্যান একাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, দলে যে কাউকে যুক্ত করা ও বহিষ্কার করার ক্ষেত্রে। এটি বাতিল করতে হবে।
জাপার তৎকালীন চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ অসুস্থ থাকা অবস্থায় তাঁর কাছ থেকে জোর করে দলের কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব জিএম কাদের নেন বলে অভিযোগ করেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘জিএম কাদেরের প্রত্যেকটি বিষয়ের স্বৈরাচারী মনোভাব।’
মুজিবুল হক বলেন, দলীয় চেয়ারম্যান জিএম কাদের দলের ২৮ জনকে পদোন্নতি দিয়েছেন। অথচ তিনি মহাসচিব হিসেবে তা জানেন না। জিএম কাদেরের চেয়ে কোনো অংশে তাঁর যোগ্যতা কম নয়। তিনি যখন সংসদ সদস্য, তখন জিএম কাদের একটি বেসরকারি কোম্পানির ম্যানেজার। একমাত্র এইচ এম এরশাদের ভাই বলে তাঁকে দলের চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁরা মেনে আসছেন।
মুজিবুল হক বলেন, ‘আমরা জাতীয় পার্টি ছাড়ব না। আমরা জাতীয় পার্টি ভাঙতে দেব না। আমাদের অবদান দলের জন্য সবচেয়ে বেশি। আমরা কাউন্সিলে যাব, সেখানে আমাদের কথা গ্রহণ না করলে এরপর আর কথা থাকবে না।’
আরও পড়ুনজাপায় এবার ‘ছাঁটাই রাজনীতি’, মহাসচিব বদলসহ ৭ দিনে ১১ নেতাকে অব্যাহতি১৬ ঘণ্টা আগেরুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, তিনি ১৭ বছর জাপার মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন একটি শক্তিশালী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রে তাঁদের দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। জিএম কাদের দলের ক্ষতি করছেন। তিনি যা করছেন, তা কোনো সুস্থ রাজনীতিবিদ করতে পারেন না।
এই তিন নেতা ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাইদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, মোস্তফা আল মাহমুদ, নাজমা আকতার, জসিমউদ্দিন ভূঁইয়া, আরিফুর রহমান খান, জহিরুল ইসলাম জহির, সোলায়মান আলম শেঠ প্রমুখ।
আরও পড়ুনএবার আনিসুল ইসলাম, রুহুল আমিন হাওলাদার ও মুজিবুল হককে অব্যাহতি দিলেন জি এম কাদের২১ ঘণ্টা আগে