অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক হলেন জাহাঙ্গীর কবির
Published: 8th, July 2025 GMT
ঢাকা বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজনস) মো. জাহাঙ্গীর কবিরকে কারা সদর দপ্তরের অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজি প্রিজনস) হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটির সুপারিশক্রমে সোমবার (৭ জুলাই) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. হাফিজ-আল-আসাদের স্বাক্ষরে পদোন্নতির এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
২০০৮ সালে মুন্সিগঞ্জ জেলা কারাগারে জেল সুপার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন জাহাঙ্গীর কবির। এরপর ধাপে ধাপে সিনিয়র জেল সুপার, এআইজি (উন্নয়ন), ডিআইজি হিসেবে বিভিন্ন কারা অঞ্চলে দায়িত্ব পালন করেন। কাশিমপুর, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে দায়িত্ব পালনকালে তিনি প্রশাসনিক দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে প্রশংসিত হন।
২০১৯ সালে ডিআইজি পদে পদোন্নতির পর বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগে দায়িত্ব পালনের পর ২০২৪ সালের আগস্টে তাকে ঢাকা বিভাগে ডিআইজি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাজার গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর কবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ব্যক্তিজীবনে তিনি দুই সন্তানের জনক।
ঢাকা/এমআর/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীর প্রতিভা বিকশিত হতে দেয় না
সম্প্রতি ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। তরুণ সাহিত্যিক হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন উম্মে ফারহানা। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তিনি। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানিয়েছেন পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন স্বরলিপি
ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার পাওয়ায় আপনাকে অভিনন্দন।
ধন্যবাদ। লেখক হিসেবে এটি আমার প্রথম পুরস্কার। তাই অনুভূতি খুবই নতুন। অবশ্যই আমি অত্যন্ত আনন্দিত। একে নিজের লেখক পরিচয় নিয়ে আরেকটু আত্মবিশ্বাসী হওয়ার ধাপ বলে মনে করছি।
আপনি প্রথম এই পুরস্কার প্রাপ্তির সংবাদ কীভাবে জানলেন?
‘সমকাল’ থেকে আমাকে ফোন করা হয়েছিল। ৪ জুলাই সন্ধ্যায় ঘোষণা দেওয়ার আগে কাউকে বলার কথা নয়। শুধু পরিবারের লোকজন, মানে আমার বাচ্চারা আর ভাইবোনকে জানিয়েছিলাম।
এই পুরস্কার পাওয়ার বিষয়টি কেমন অর্থ বহন করে?
পুরস্কার মানে এক ধরনের স্বীকৃতি, সম্মান আর অর্থমূল্যটিও নগন্য নয়। আমি পেশায় শিক্ষক, ১৪ বছর চাকরি করার পরেও আমার বেতন এক লক্ষে পৌঁছেনি। কাজেই হঠাৎ এক লাখ টাকা পেয়ে যাওয়া অপ্রত্যাশিত আনন্দ দিয়েছে। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।
আপনি কী লক্ষ্য করেছেন এই পুরস্কারের তরুণ ক্যাটাগরীতে বেশ কয়েকবছর ধরে নারীরা বেশি পুরস্কৃত হচ্ছেন, বিষয়টা কীভাবে দেখছেন?
লক্ষ্য করলে দেখবেন ফিকশনে নারীদের সাফল্য গত কয়েক দশক ধরে ধারাবাহিক হয়ে গেছে সারা বিশ্বেই। নোবেল পেলেন হান কাং, বুকার পেলেন গীতাঞ্জলি শ্রীর পর বানু মুশতাক। এলিফ শাফাক, চিমামান্দা আদিচি ছাড়াও অনেক নারী লেখকদের নাম বলা যাবে যারা খুব ভালো আখ্যান লিখছেন। এখন আর সেই পুরুষ প্রাধান্য জগতের কোথাও নেই। হ্যাঁ, লৈঙ্গিক বৈষম্য রয়েছে, চিরকালই ছিল। কিন্তু সেজন্য সৃজনশীলতাকে তো দমিয়ে রাখা যায় না। পৃথিবীর প্রাচীনতম কবিদের একজন হলেন শ্যাফো, কেমিস্ট্রিতে দুইবার নোবেল পেয়েছেন মেরি কুরি। কোন ক্ষেত্রে আপনি নারীদের অবদান কিংবা প্রতিভার প্রকাশকে অস্বীকার করবেন? এতো দিন আমরা নারীদের দেখিনি কারণ পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীর প্রতিভা বিকশিত হতে দেয় না।
বেড়ে ওঠার সময় সাহিত্যের অনুকূল পরিবেশ কতটা পেয়েছেন?
‘সাহিত্যচর্চা’র মতো ভারী কথা আমি ব্যবহার করতে চাই না। আমি লেখালেখি করি স্কুল পাস করার পর থেকেই। মা-বোন-ভাইয়ের কাছ থেকে সবসময় উৎসাহ পেয়েছি। বন্ধু আর সহকর্মীরাও সবসময় লেখালেখির ব্যাপারে সাহস আর অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। আমার প্রয়াত স্বামীও আমার প্রথম বইয়ের প্রচ্ছদ এঁকেছিলেন। ৫টি বইয়ের চারটির অথর ফটো তাঁর তোলা। আমি খুবই প্রভাবিত আর অনুপ্রাণিত আমার প্রিয় লেখকদের দিয়ে। অনেকেই আছেন এই তালিকায়। অরুন্ধতী রয়, টনি মরিসন, অমিতাভ ঘোষ, রোহিন্তন মিস্ত্রি, এলিফ শাফাকসহ আরও অনেকের কাজ আমাকে অনুপ্রাণিত করে।
সাহিত্যের ভাষা বিনির্মাণে কোন বিষয়কে বেশি গরুত্ব দেন?
ভাষা হচ্ছে নদীর মতো, নিজের গতিতে চলে। ভাষার ব্যাপারে প্রুডারি আমার অপছন্দ। কলকাতার চাপিয়ে দেওয়া তথাকথিত শুদ্ধ ভাষায় আমি বিশ্বাসী নই। ভাষাকে হতে হবে লেখকের নিজস্ব। মনে করুন শাহীন আখতারের ‘সখী রঙ্গমালা’, নোয়াখালীর ভাষাই এই উপন্যাসের সৌন্দর্য। আমি ময়মনসিংহের কলোক্যাল প্রায়ই ব্যবহার করি যেখানে দরকার বলে মনে হয়। তাই বলে ঢাকার সেটিঙে লেখা গল্পে ময়মনসিংহের ডায়লগ জোর করে জুড়ে দিই না। এতো গেল প্রমিত আর অপ্রমিতের আলাপ। এ ছাড়াও গদ্যের ভাষায় যা জরুরি বলে মনে করি তা হলো সাবলীলতা। গদ্যের ভাষা অর্গ্যানিক না হলে পড়া মুশকিল।
তারা//