টেনিসের কিংবদন্তি রজার ফেদেরারের সামনে দাঁড়িয়ে ম্যাচ জয়; সেটা যেন নোভাক জকোভিচের জন্য ছিল এক অলিখিত চ্যালেঞ্জ। বারবার চেষ্টা করেও গ্যালারিতে ফেদেরার থাকলে জয় অধরাই থেকে যেত সার্বিয়ান মহাতারকার জন্য। তবে অবশেষে সেই অভিশাপমুক্ত হলেন তিনি।

উইম্বলডনের শেষ ষোলোতে অস্ট্রেলিয়ার অ্যালেক্স ডি মিনাউরের বিপক্ষে ১-৬, ৬-৪, ৬-৪, ৬-৪ গেমে জয় তুলে নিয়ে ১৬তম বারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছেন জকোভিচ। আর এমন জয়ের পর নিজেই রসিকতা করে বললেন, “শেষমেশ রজার (ফেদেরার) গ্যালারিতে থাকলেও আমি জিতলাম। হয়তো এটাই প্রথম!”

৩৮ বছর বয়সেও অনন্য দৃঢ়তায় খেলছেন জকোভিচ। শুরুটা যদিও ছিল হতাশাজনক। প্রথম সেটে মাত্র ৩০ মিনিটেই হেরে বসেন। কিন্তু তারপরই চেনা ছন্দে ফেরেন ২৪ গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী এই কিংবদন্তি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেটে টানা জয় তুলে নেন। চতুর্থ সেটে ৪-১ গেমে পিছিয়ে পড়েও দারুণ প্রত্যাবর্তনে পরের পাঁচটি গেম দখলে নিয়ে ম্যাচ ও কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেন।

আরো পড়ুন:

উইম্বলডনে নাটকীয় প্রত্যাবর্তন: কোয়ার্টার ফাইনালে আলকারেজ

ফ্রেঞ্চ ওপেনের নতুন রাণী গফ

এই জয়ে এখন তার সামনে উন্মুক্ত হয়েছে ইতিহাস গড়ার দরজা। উইম্বলডনে আরও একটি শিরোপা জিতলেই তিনি ভাগ বসাবেন রজার ফেদেরারের সর্বোচ্চ ৮ শিরোপার রেকর্ডে। আর চূড়ান্ত সাফল্য ধরা দিলে, নারী-পুরুষ মিলিয়ে সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী (২৫টি) খেলোয়াড় হিসেবে এককভাবে শীর্ষে উঠবেন।

কোয়ার্টার ফাইনালে জকোভিচের প্রতিপক্ষ ইতালির ২২তম বাছাই ফ্লাভিও কোবোল্লি। সেই ম্যাচে জিতলে সম্ভাবনা রয়েছে শীর্ষ বাছাই ইয়ানিক সিনারের মুখোমুখি হওয়ার, সেমিফাইনালের মঞ্চে।

ফেদেরার প্রসঙ্গে জকোভিচ বলেন, “রজার একজন বিশাল চ্যাম্পিয়ন। আমরা অনেক বছর একই মঞ্চে লড়েছি। তাকে তার প্রিয় টুর্নামেন্টে গ্যালারিতে দেখা দারুণ ব্যাপার।” 

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক য় র ট র ফ ইন ল উইম বলডন

এছাড়াও পড়ুন:

ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’

ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।

আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।

আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।

রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।

রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।

কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?

কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।

রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।

রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।

এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।

রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ