বাইডেনের ক্যানসার নিয়ে বিতর্কের আগুনে ঘি ঢাললেন ট্রাম্প
Published: 20th, May 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ করা নিয়ে যে বিতর্ক শুরু হয়েছে, সে আগুনে ঘি ঢেলেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গতকাল সোমবার ট্রাম্প বলেন, জো বাইডেনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়া–সংক্রান্ত তথ্য গোপন রাখা হয়েছিল। পূর্বসূরি এই প্রেসিডেন্টের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জনগণকে অন্ধকারে রাখায় আশ্চর্যান্বিত হয়েছেন তিনি।
ট্রাম্পের এ মন্তব্যের এক দিন আগে ৮২ বছর বয়সী বাইডেনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে। রোববার তাঁর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রোস্টেট ক্যানসার ধরা পড়েছে, যা ইতিমধ্যে তাঁর হাড়ে ছড়িয়েছে। তিনি প্রোস্টেট ক্যানসারের একটি আক্রমণাত্মক ধরনে আক্রান্ত।
বাইডেনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টিকে আরও বড় রাজনৈতিক বিতর্কের সঙ্গে যুক্ত করারও চেষ্টা করেছেন ট্রাম্প, যা শুরু হয়েছে চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত একটি নতুন বইকে কেন্দ্র করে। বইটিতে দাবি করা হয়, প্রেসিডেন্ট থাকার সময় বাইডেনের মানসিক সক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছিল, কিন্তু হোয়াইট হাউস তা গোপন রাখে।
গতকাল ওভাল অফিসে সাংবাদিকেরা ট্রাম্পকে বাইডেনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়া নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘জনগণকে আরও অনেক আগেই কেন এ বিষয়ে জানানো হয়নি, তা ভেবে আমি অবাক হচ্ছি। এ পর্যায়ে পৌঁছাতে, স্টেজ নাইনে যেতে অনেক সময় লাগে।’
নিজ কার্যালয় থেকে রোববার এক বিবৃতিতে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রোস্টেট ক্যানসার ধরা পড়েছে, যা ইতিমধ্যে তাঁর হাড়ে ছড়িয়েছে। প্রোস্টেট ক্যানসারের একটি আক্রমণাত্মক ধরনে আক্রান্ত তিনি।সম্ভবত এখানে ট্রাম্প এ মন্তব্যের মাধ্যমে বাইডেনের কার্যালয় থেকে দেওয়া ঘোষণার দিকে ইঙ্গিত করেছেন। বাইডেনের কার্যালয় থেকে বলা হয়েছিল, বাইডেনের ক্যানসার ‘গ্লিসন স্কোর ৯ (গ্রেড গ্রুপ ৫)’ পর্যায়ের।
আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির তথ্যানুযায়ী, প্রোস্টেট ক্যানসার যখন খুব অস্বাভাবিক আচরণ করে, তখন তাকে সর্বোচ্চ গ্রেড ৫ দেওয়া হয়। গ্লিসন স্কোর সর্বোচ্চ ১০ পর্যন্ত যায়, বাইডেনের স্কোর ৯; যা তাঁর রোগ কতটা গুরুতর তা নির্দেশ করে।
বাইডেনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশের পর এএফপি কয়েকজন ক্যানসার–বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছে। তাঁরা বলেছেন, স্ক্রিনিংয়ের সীমাবদ্ধতার কারণেই হয়তো বাইডেনের অবস্থা এত দিন অজানা থেকে গেছে। উন্নত চিকিৎসাসুবিধা পাওয়া একজন সাবেক প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রেও এমন একটি অগ্রসর পর্যায়ের ক্যানসার দেরিতে শনাক্ত হওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন নয়।
জনগণকে আরও অনেক আগেই কেন এ বিষয়ে জানানো হয়নি, তা ভেবে আমি অবাক হচ্ছি। এ পর্যায়ে পৌঁছাতে, স্টেজ নাইনে যেতে অনেক সময় লাগে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টতবে ক্যানসার–বিশেষজ্ঞরা যত ব্যাখ্যাই দেন, ট্রাম্প তা মানছেন না। তিনি মনে করেন, বাইডেনের প্রেসিডেন্ট থাকাকালে যে পরীক্ষাগুলো করা হয়েছিল, সেগুলোতেই রোগটি সম্পর্কে কোনো না কোনো ইঙ্গিত ধরা পড়া উচিত ছিল।
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘যদি আপনি একটু খেয়াল করেন, তিনি সেই চিকিৎসক যিনি বলেছিলেন, জো বাইডেনের মানসিক সক্ষমতায় কোনো সমস্যা নেই। এমন অনেক কিছু ঘটেছে, যেগুলোর বিষয়ে জনগণকে কিছুই জানানো হয়নি।’
বাইডেনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশের পর এএফপি কয়েকজন ক্যানসার–বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছে। তাঁরা বলেছেন, স্ক্রিনিংয়ের সীমাবদ্ধতার কারণেই হয়তো বাইডেনের অবস্থা এত দিন অজানা থেকে গেছে। উন্নত চিকিৎসাসুবিধা পাওয়া একজন সাবেক প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রেও এমন একটি অগ্রসর পর্যায়ের ক্যানসার দেরিতে শনাক্ত হওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন নয়।২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারকালে প্রতিদ্বন্দ্বী বাইডেনের মানসিক সক্ষমতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছিলেন ট্রাম্প। রোববার বাইডেনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশের পর ট্রাম্প সেদিন এ খবরে বেদনাহত হয়েছেন বলে জানান।
কিন্তু ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই ট্রাম্প নিজেই তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলকে বাইডেনের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত তথ্য গোপন করা নিয়ে অভিযোগ করতে উসকে দেন। নিজেও এ নিয়ে কথা বলছেন।
আরও পড়ুনজো বাইডেন ক্যানসারে আক্রান্ত১৯ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর য য়
এছাড়াও পড়ুন:
কৃষকের গোলা খালি হওয়ার পর চড়ছে চালের বাজার
ভরা মৌসুমে যখন দাম কমে যাওয়ার কথা, তখনই চালের বাজার উল্টো পথে। রাজধানীসহ সারাদেশের বাজারে হঠাৎ কেজিপ্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বিভিন্ন জাতের চালের দাম। এতে সাধারণ ভোক্তা যেমন চাপের মুখে পড়েছেন, তেমনি হতাশ কৃষকরাও। এখন চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী দেখে অনেক কৃষক মনে করছেন, তারা ঠকেছেন। এ পরিস্থিতিতে আবারও সামনে এসেছে ‘সিন্ডিকেট’ ও ‘করপোরেট দখল’।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, রেকর্ড চাল উৎপাদন হলেও কৃষক ও ভোক্তা এর সুফল পাচ্ছেন না। কারণ, ধান যখন কৃষকের হাতে থাকে, তখন দাম কম থাকে। ব্যবসায়ীদের হাতে যাওয়ার পর চালের দাম বাড়িয়ে তোলা হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট চালের প্রায় ৫৫ শতাংশ বোরো মৌসুমে উৎপাদন হয়। ফলন ভালো হলে সরবরাহ বাড়ে, আর বাজারে দাম কমে। এ বছর বোরোতে রেকর্ড ২ কোটি ১৪ লাখ টন চাল উৎপাদন হয়েছে।
কৃষি উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় এবার বোরো উৎপাদন ১৫ লাখ টন বেশি হয়েছে। তবু বাজারে চালের দাম বেড়েছে। গতকাল রাজধানীর কয়েকটি খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরু বা মিনিকেট চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা দরে। এ ছাড়া মাঝারি (বিআর-২৮) মানের চালের কেজি ৫৮ থেকে ৬৩ টাকা, মোটা চালের কেজি ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, গত এক সপ্তাহে সরু ও মোটা চালের কেজিতে ৫ টাকা পর্যন্ত দর বেড়েছে। এ ছাড়া মাঝারি (বিআর-২৮) মানের চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪ টাকা।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদনও বলছে, চালের দাম বাড়ছে। সংস্থাটির তথ্য বলছে, গত এক মাসে সরু চালের দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ। এ ছাড়া মাঝারি ও মোটা চালের দর বেড়েছে ৯ শতাংশের বেশি।
তবে এক বছরের ব্যবধানে এসব চালের দাম গড়ে বেড়েছে ১৫ শতাংশ।
অথচ খাদ্যের মজুত গত বছরের এই সময়ের চেয়ে এখনও বেশি। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, এখন দেশের বিভিন্ন গুদামে খাদ্য মজুত আছে ১৭ লাখ ৬৮ হাজার ২৭৬ টন, যার মধ্যে চাল ১৩ লাখ ৮২ হাজার ৭৭৫ টন ও গম ২ লাখ ৩৯ হাজার ৪১৬ টন। এ ছাড়া ধানের মজুত রয়েছে ২ লাখ ২৪ হাজার ৭৪৫ টন। বর্তমানে খাদ্যের এই মজুত গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৩ লাখ টন বেশি।
নোয়াখালীর সুবর্ণচরের মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের কৃষক আব্দুর রব বলেন, ‘ধান বিক্রি করে এখন আফসোস করছি। এক মাস আগে ১০০০-১১০০ টাকায় ধানের মণ বিক্রি করলাম। এখন শুনি, চালের দাম কেজিতে ৮ টাকার মতো বেড়েছে। আমরা ধান থেকে কেজিপ্রতি এক-দেড় টাকা বেশি পেলেও মিলাররা চালে ৮ টাকা লাভ করল।’
ময়মনসিংহের ফুলপুরের কৃষক জহর আলী বলেন, ‘যে ভাত আমরা ফলাই, সেই ধান সস্তায় বেইচা এখন আবার চড়া দামে কিনি খাই। আমাদের দেখার কেউ নাই?’
রংপুর কৃষক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক পলাশ কান্তি নাগ বলেন, মাঠে যখন ফসল থাকে, তখন দাম কম। কৃষক বিক্রি করার পরই মূল্যবৃদ্ধির খেলা শুরু হয়।
নওগাঁ চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন বলছেন, বৃষ্টির কারণে ধানের গুণগত মান কিছুটা নষ্ট হয়েছে, এতে দাম বেড়েছে। গত ১৫ থেকে ২০ দিনে মণপ্রতি ধানের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে। এর ফলে মিল পর্যায়ে চালের দাম ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে।
তবে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, দাম বাড়ানোর জন্য দায়ী করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা ঈদের আগেই কৃষকের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে মজুত করেছে এবং এখন কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বাড়াচ্ছে।
বাংলাদেশ চালকল মালিক সমিতির প্রচার সম্পাদক জয়নাল আবেদিন বলেন, ৮৫ শতাংশ মিলারের সংরক্ষণ ক্ষমতা নেই। তবে বড় করপোরেট চালকলগুলো তিন থেকে চার মাসের ধান মজুত করে। পরে তারাই বাজারে সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ায়।
চালের বাজারে অস্থিরতা নিয়ে সরকার কিছু উদ্যোগ নিলেও ফল এখনও দৃশ্যমান নয়। গত সপ্তাহে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও জেলা খাদ্য বিভাগ চালের বাজারে অভিযান চালায়। তবে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই অভিযান শুধু খুচরা পর্যায়ে। মিলগেট আর গুদামে নজরদারি দুর্বল।
চট্টগ্রামে কিছু ধান উৎপাদন হলেও এটি ধানের আবাদ এলাকা নয়। দেশের উত্তরাঞ্চল ও এর আশপাশের জেলা থেকে ধান আসে চট্টগ্রামে। বর্তমানে বোরো মৌসুমেও বাজারে ধান আসতে শুরু করেছে। এর মধ্যে বোরো ধান, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ ধানের দাম মণপ্রতি ১০০ থেকে ২৫০ টাকা বেড়েছে। গত বছর এই সময়ে প্রতি মণ ধানের দাম ছিল ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকা। বর্তমানে প্রতি মণ ধানের দাম ১ হাজার ২৫০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা পর্যন্ত।
ব্যবসায়ীদের দাবি, মূলত পরিবহনের ভাড়া ও ধানের দাম বেড়ে যাওয়া এবং চালকলে খরচ বেশি পড়ায় দামে প্রভাব পড়েছে। এর বাইরে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর মজুতের কারণেও প্রভাব পড়েছে বাজারে। এ ছাড়া কৃষকরাও ধানের দাম বাড়িয়েছেন।
চট্টগ্রামে রাইস মিল মালিক সমিতির আওতায় ১২৬ চালকল রয়েছে। তারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ধান সংগ্রহ করে চাল তৈরি করে। চট্টগ্রাম রাইস মিল মালিক সমিতির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, হঠাৎই বাজারে চালের দাম বেড়েছে। এর কারণ পরিবহনের ভাড়া ও ধানের দাম বেড়ে যাওয়া। তিনি বলেন, করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো চাষিদের অগ্রিম টাকা দিয়ে চাল কিনে নিচ্ছে। এ কারণে মিল মালিকরা ধান পাচ্ছেন না। এটিও চালের দামে প্রভাব ফেলছে।
কুষ্টিয়ার খাজানগর মোকামে পুরোনো ধান মজুত থাকার পরও ঈদের পর তিন সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়ানো হয়েছে। সরু চালের ২৫ কেজির বস্তা এখন বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮২০ থেকে ১ হাজার ৯২০ টাকায়, যা ঈদের আগে ছিল ১ হাজার ৬৮০ থেকে ১ হাজার ৭২০ টাকা।
মিলারদের একাংশ মনে করেন, ধানের সামান্য দাম বাড়ার কারণে চালের দর ১ থেকে ২ টাকা বাড়তেই পারে। তবে ৭ টাকা পর্যন্ত দর বেড়ে যাওয়া অযৌক্তিক। খুচরা বিক্রেতা ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা চালের দাম বাড়াকে মিলারদের কারসাজি হিসেবে দেখছেন। সরেজমিন দেখা গেছে, মোকামে অধিকাংশ মিলে পুরোনো ধান ও নতুন ধান মজুত রয়েছে। প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ ট্রাক চাল সরবরাহ হচ্ছে। মিলগেটে দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। অনেক ব্যবসায়ী অর্ডার দিয়েও সময়মতো চাল পাচ্ছেন না।
কুষ্টিয়া জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন বলেন, কেউ অবৈধভাবে ধান ও চাল মজুত করছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা দরকার। খাদ্য কর্মকর্তা আল ওয়াজিউর রহমান বলেন, বোরো মৌসুমে প্রচুর ধান উঠেছে। তবু চালের দর বাড়ার পেছনে অন্য কারণ থাকতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, সব সময় কৃষকের হাতে যখন ফসল থাকে, তখন দাম কমিয়ে রাখা হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষক। আবার যখন কৃষকের হাত থেকে পণ্য চলে যায়, তখন দাম বাড়িয়ে ভোক্তাকে ক্ষতির মুখে ফেলা হয়। সরকার এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।
খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম মাসুদ বলেন, ভরা মৌসুমেও চালের দাম এত বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক। এতে নিম্নবিত্তের খাদ্য নিরাপত্তা হুমকিতে পড়েছে। এ অবস্থায় কৃষি সংস্কার কমিশন গঠনসহ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
গত বুধবার রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প মূল্যায়ন সভা শেষে কৃষি উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সরকার দাম নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমে সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, কৃষকের ফসল মধ্যস্বত্বভোগীদের হাত থেকে রক্ষায় এবার সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ফসল কেনার নির্ধারিত সময় ১৫ দিন এগিয়ে এনেছে। তবে আমাদের সমস্যা হচ্ছে দুর্নীতি। এটা রোধ করা গেলে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব।
(প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন কুষ্টিয়া প্রতিনিধি)