একরাত কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া। গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মুক্তি পান তিনি। কারাগারের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন তার মা ফেরদৌসী বেগম ও কয়েকজন ঘনিষ্ঠ স্বজন।

কারাগার থেকে বেরিয়ে সোজা মায়ের সঙ্গে গাড়িতে ওঠেন নুসরাত ফারিয়া। তার চেহারায় ছিল স্পষ্ট ক্লান্তি। বিমর্ষ ফারিয়া কালো রঙের কাচঘেরা গাড়িতে করে গাজীপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। এসময় কারো সঙ্গে কোনো কথা বলেননি এই অভিনেত্রী।

আরো পড়ুন:

জীবনের সবচেয়ে মুমূর্ষু সময় পার করেছি, কারামুক্ত হয়ে নুসরাত ফারিয়া

মুক্তির পর ফারিয়ার পোস্ট, দিলেন অসুস্থতার বার্তা

পরিবার সূত্রে জানা যায়, দুপুরে কারা কর্তৃপক্ষ ফারিয়াকে তার মায়ের জিম্মায় বুঝিয়ে দেয়। মা ফেরদৌসী বেগম সকাল থেকেই আদালত চত্বরে মেয়ের অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু তখন দেখা হয়নি। বিকেলে কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পর মা-মেয়ের দেখা হয়।

গত ১৮ মে দুপুরে চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। পরে রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তারপর আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।    

নুসরাত ফারিয়ার জামিন শুনানির জন্য ২২ মে, নতুন তারিখ ধার্য থাকলেও বিশেষ শুনানি করে একদিন আগেই অর্থাৎ মঙ্গলবার (২০ মে) নুসরাত ফারিয়ার জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। আজ বিকেলে ৩টা ২৮ মিনিটে কারাগার থেকে মুক্তি পান এই অভিনেত্রী।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর ভাটারা এলাকায় ‘জুলাই আন্দোলনে’ অংশ নেন এনামুল হক নামে এক ব্যক্তি। সেদিন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। কয়েক মাস চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে চলতি বছরের ৩ মে মামলাটি দায়ের করেন তিনি। এ মামলায় নুসরাত ফারিয়া ২০৭ নম্বর আসামি হিসেবে তালিকাভুক্ত। এজাহারে তাকে আওয়ামী লীগের অর্থের ‘জোগানদাতা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

নুয়ে পড়া ধান নিয়ে বিপদে কৃষক

জ্যৈষ্ঠ মাসে ধান পাকতে শুরু করেছে। কোথাও কোথাও পাকা ধান কাটা শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় কৃষকদের মুখে হাসি থাকার কথা। এর বদলে শ্রমে-ঘামে ফলানো সোনার ধান নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তারা। টানা বৃষ্টির কারণে সিরাজগঞ্জের তাড়াশের চলনবিল অঞ্চলের বেশির ভাগ জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। নিমজ্জিত হয়েছে বেশ কিছু ক্ষেত। তিন-চার দিনের মধ্যে না কাটলে এ ধান থেকে কিছুই পাওয়া যাবে না বলছেন কৃষকরা।
জানা গেছে, ১৫ থেকে ২০ দিন আগেও চলনবিলে প্রতি বিঘা ধান কাটতে চার থেকে পাঁচজন শ্রমিক হলেই চলত। শ্রমিকরা দূরত্বভেদে প্রতি বিঘায় (মণপ্রতি ৫ থেকে ৮ কেজি ধান) ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছেন। বৃষ্টিতে ধান নুয়ে পড়ায় ১০ জন শ্রমিক মাঠে কাজ করছেন। তাদের পারিশ্রমিকও দিতে হচ্ছে দ্বিগুণ। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
তাড়াশের কুন্দইল গ্রামের কৃষক আবু হানিফ ১৬ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে পাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন। এখন বিপত্তি বেধেছে বৃষ্টিতে। গত বুধবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত দিনে ও রাতে থেমে থেমে ঝড়, বাতাস, বৃষ্টিতে পাকা ও আধপাকা ধান নুয়ে পড়েছে। জমিতে হারভেস্টার ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে কৃষি শ্রমিকের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। সুযোগ পেয়ে শ্রমিকরাও চড়া মজুরি চাইছেন। 
আবু হানিফ বলেন, নুয়ে পড়া ধান কাটতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি শ্রমিক প্রয়োজন হয়। কষ্টও অনেক। এক বিঘা জমির ধান কাটতে শ্রমিকরা ১১-১২ কেজি ধান পারিশ্রমিক চাচ্ছেন। অনেক দরদাম করে ১১ কেজিতে রাজি করিয়েছি। ১৬ বিঘা জমির ধান কাটতে শ্রমিককে ৪ বিঘার ধান দিতে হচ্ছে। 
একই অবস্থা মাকড়শোন এলাকার কৃষক আলেপ আলীর। প্রতি মণে কৃষককে ১০ কেজি করে ধান দিতে হচ্ছে তাঁকে। শুধু আবু হানিফ বা আলেপ আলীর না, চলনবিল এলাকার বেশির ভাগ কৃষককে অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দিয়ে ধান কাটাতে হচ্ছে। 
রুহাই এলাকার কৃষক আয়নাল হোসেন জানান, সরিষা তোলার পর বোরো আবাদ করেছেন। নাবী জাতের ধান হওয়ায় ধান পাকতেও দেরি হচ্ছে। এর মধ্যে ঝড়, বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। এতে জমির ধান নুয়ে পড়ছে। জমিতে বৃষ্টির পানি জমে যাচ্ছে। আছে কাদাও। এ সুযোগে ধান কাটা শ্রমিকরা পারিশ্রমিক বাড়িয়ে দিয়েছেন। তারা দূরত্বভেদে প্রতি মণে ৭ থেকে ১১-১২ কেজির কমে ধান কাটতে চাচ্ছেন না।
বিপদ দেখে শ্রমিকরা মোট উৎপাদনের কমপক্ষে চার ভাগের এক ভাগ ধান নিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান ধাপতেঁতুলিয়া এলাকার কৃষক ফরহাদ আলী। আক্ষেপ করে বলেন, ১২ বিঘা জমির আংশিক ধান নুয়ে পড়েছে। এসব ধান কাটতে ৬০ থেকে ৬৫ মণ ধান শ্রমিকদের পারিশ্রমিক বাবদ দিতে হবে। তিন-চার সপ্তাহ ঝড়-বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পারিশ্রমিক আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বর্তমানে ধানের বাজারদর ভালো। তাই শ্রমিকের পারিশ্রমিক বাবদ একটু বেশি খরচ হলেও কৃষক পুষিয়ে নিতে পারবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ