সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের বিগত এক-দেড় বছরের পারফরম্যান্স সমর্থকদের মধ্যে হয়তো ভয়ের সঞ্চার করেছে; যে কারণে আরব আমিরাতের কাছে টি২০ সিরিজ হারের শঙ্কা অনেকের মনে। শারজাহতে আমিরাতের বিপক্ষে গত দুই ম্যাচের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করা হলে এ শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়ার মতো না। কারণ বিগত দুই ম্যাচে প্রভাব বিস্তার করে খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। উল্টো স্বাগতিকরা নিজেদের উজাড় করে খেলেছে। আজ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি২০ ম্যাচে তেমনি ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করবে তারা। আর বাংলাদেশ তো সব সময় জেতার জন্যই খেলে। এর পরও সমর্থক মনে শঙ্কার উৎপত্তি প্রিয় দলের বাজে খেলার কারণে। 

আমিরাতের মতো একটি অপেশাদার দলের বিপক্ষে ছন্নছাড়া বোলিং-ফিল্ডিংকে পরাজয়ের কারণ বলে মনে করেন জাতীয় দলের দুই সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান ও মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। গেল ম্যাচের একাদশে চারটি পরিবর্তন হলেও ব্যাটিং মন্দ হয়নি। তানজিদ হাসান তামিম (৫৯) ও লিটন কুমার দাসের (৪০) ভালো করা এবং মিডলঅর্ডারে তাওহীদ হৃদয়ের ৪৫ রান বড় স্কোরে নিয়ে গেছে বাংলাদেশকে। ২০ ওভারে ২০৫ রান করা দলের ম্যাচ হেরে যাওয়া হতাশাজনক। 

রকিবুল হাসানের মতে, 'আমরা কাল (সোমবার) ম্যাচটা হেরেছি তিনটি কারণে- দুর্বল বোলিং, দুর্বল ফিল্ডিং ও দুর্বল চিন্তা। ক্রিকেটে চিন্তা ও উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে খেলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে খুবই বোকার মতো খেলেছে তারা। থ্রো করার দরকার নেই, তবু থ্রো করে অতিরিক্ত ৪ রান দিয়েছে। আউট হয় অথচ আউট করতে পারেনি। যেখানে সাবধানে বল করার কথা, সেখানে নো বল করেছে।

এগুলো চিন্তার বিষয়। একটা টাইট ম্যাচে এত ভুল হলে জেতা যায় না। এর পরও শেষ ওভার পর্যন্ত গিয়েছিল ম্যাচটি। সে সুযোগও আমরা হাতছাড়া করেছি।' তিনি বলেন, ‘শরিফুলের থ্রোটা সাংঘাতিক রকমের ভুল। ব্যাকআপ না থাকার পরও ওভাবে থ্রো করেছে। শেষ ওভারে ৭ রানের খেলা সেখানে নো এবং ওয়াইড বল করেছে। এককথায় বুদ্ধি দিয়ে খেলা হয়নি।”

পাকিস্তান সফরের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজটি ঠিক করা হয়েছিল। সেই সিরিজও চাপহীন খেলতে পারলেন না লিটনরা। কোনো ম্যাচে প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি। পেস বোলিংয়ের সেনসেশন নাহিদ রানার টি২০ অভিষেক হলো পরাজয়ে। ৪ ওভারে ৫০ রান দিয়ে হতাশ করেছেন এই বোলার। প্রত্যাশিত বোলিং করতে পারেননি তিন সংস্করণের ক্রিকেটার হয়ে ওঠা তানজিম হাসান সাকিবও।

তবে বেশি চোখে লেগেছে শরিফের ওভার থ্রো, রানার রানআউট করতে না পারা আর হৃদয়ের খামখেয়ালি ফিল্ডিং। সাবেক প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর চোখে পরাজয়ের কারণ ভুল ফিল্ডিং, ‘২০৫ রান টি২০ ম্যাচে অনেক স্কোর। বোলিং ভালো হলে নিরাপদে জেতার মতো রান। এই রান ইউএই দল তাড়া করে ফেলবে, তা কোনোভাবে চিন্তায় আসে না। আমরা সেভাবে বোলিং-ফিল্ডিং করতে পারিনি। খুবই দুঃখজনক একটি সহযোগী দেশের সঙ্গে খেলে হেরে গেছি। ওরা ছয় দিন চাকরি করে এক দিন ক্রিকেট খেলে। তাদের কাছে ম্যাচ হার ভালো বার্তা দেয় না। এ রকম হারলে প্রশ্ন ওঠে ক্রিকেটটা কোন দিকে যাচ্ছে। এ কারণে এসব দলের বিপক্ষে সিরিয়াস ক্রিকেট খেলতে হয়।' 

কোনো সন্দেহ নেই লিটনরা আজ 'সিরিয়াস' ক্রিকেট খেলে সিরিজ জিতে পাকিস্তান সফরের প্রস্তুতি নেবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম র ত র দল র ব

এছাড়াও পড়ুন:

২০২৬ আইপিএলের আগে নতুন হেড কোচ নিয়োগ দিল কেকেআর

আইপিএল ২০২৬ মৌসুমের আগে কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) নতুন হেড কোচ হিসেবে দায়িত্ব দিল অভিষেক নায়ারকে। গত মৌসুমে তিনি ছিলেন চন্দ্রকান্ত পান্ডিতের সহকারী কোচ। এবার সেই জায়গা থেকেই পদোন্নতি পেয়ে দলের দায়িত্বভার নিলেন তিনি। এর আগে এক বছরের বিরতিতে নায়ার কাজ করেছিলেন ভারতের জাতীয় দলের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরের সহকারী হিসেবে।

সম্প্রতি নারী প্রিমিয়ার লিগের দল ইউপি ওয়ারিয়র্সও তাকে প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল।

আরো পড়ুন:

শেষটায় কী অপেক্ষা করছে?

ফাইনালে যেতে ভারতকে ৩৩৯ রানের টার্গেট দিলো অস্ট্রেলিয়া

কেকেআরের সিইও ভেঙ্কি মাইসোর এক বিবৃতিতে বলেন, “২০১৮ সাল থেকে অভিষেক কেকেআর পরিবারের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। মাঠের ভেতরে ও বাইরে- দুই জায়গাতেই তিনি আমাদের খেলোয়াড়দের গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। খেলার সূক্ষ্ম বিষয়গুলো বোঝার ক্ষমতা আর খেলোয়াড়দের সঙ্গে গভীর সংযোগ; দুটোই তাকে আলাদা করে রেখেছে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে, এখন তিনি প্রধান কোচ হিসেবে কেকেআরকে নতুন অধ্যায়ে নেতৃত্ব দেবেন।”

৪২ বছর বয়সী অভিষেক নায়ার একসময় ছিলেন মুম্বাইয়ের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। ২০০৯ সালে ভারতের জার্সি গায়ে তিনটি ওয়ানডেও খেলেছেন তিনি। তবে খেলোয়াড়ি জীবনের চেয়ে কোচ হিসেবে তার সিভিটাই এখন অনেক সমৃদ্ধ।

২০১৮ সালে খেলোয়াড়ি জীবনের শেষ দিকে নায়ার কেকেআর একাডেমির প্রধান কোচ নিযুক্ত হন। ২০১৯ সালে অবসরের পর মূল দলের সহকারী কোচ হিসেবে যোগ দেন। পরে ২০২২ সালে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের প্রধান কোচের দায়িত্বও পালন করেন।

কেকেআরে থাকাকালীন গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে তার গড়ে ওঠে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। যখন গম্ভীর ভারতের জাতীয় দলের প্রধান কোচ হন, তখন নায়ারও তার সহকারী হিসেবে যোগ দেন। তবে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে বিসিসিআইয়ের পর্যালোচনার পর এক বছরেরও কম সময়ে তার চুক্তি নবায়ন করা হয়নি। এরপর আইপিএল ২০২৫ মৌসুমের আগে তিনি ফের ফিরে আসেন কেকেআরে।

তিন মৌসুম পর কেকেআর ও চন্দ্রকান্ত পান্ডিতের পথ আলাদা হয়ে যায়। সেই সময়ের মধ্যে দলটি দশ বছর পর ২০২৪ সালে আইপিএল শিরোপা জিতেছিল। তবে ২০২৫ মৌসুমে হতাশাজনক পারফরম্যান্সে মাত্র পাঁচ জয়ে পয়েন্ট তালিকায় অষ্টম স্থানে থাকাটা শেষ পর্যন্ত পান্ডিতের বিদায়ের কারণ হয়। এরপর তিনি ফিরে যান নিজ রাজ্য মধ্যপ্রদেশে এবং সেখানে ক্রিকেট পরিচালকের দায়িত্ব নেন।

কেকেআরের সহায়ক দলেও বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। বোলিং পরামর্শক ভরৎ অরুণ ও স্পিন-বোলিং বিশেষজ্ঞ কার্ল ক্রো দুজনই চলে গেছেন লখনউ সুপার জায়ান্টসে। ফলে আগামী কয়েক মাসে তাদের বিকল্প খোঁজার কাজ শুরু হবে।

অর্থাৎ, নতুন করে সাজানো কেকেআর এখন নতুন কোচ অভিষেক নায়ারের হাত ধরে এগোতে প্রস্তুত। আইপিএল ২০২৬-এ আবারও পুরনো জৌলুস ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায়।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অ্যালবামের গল্প বলবে ‘পেনোয়া’
  • খেলার নামে আদম পাচার ঠেকাতে তৎপর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ
  • বোলাররা ভাসান, ব্যাটসম্যানেরা ডোবান—আজ কী করবে বাংলাদেশ
  • ২০২৬ আইপিএলের আগে নতুন হেড কোচ নিয়োগ দিল কেকেআর