সাংবাদিকেরা ক্ষমতাবানদের জবাবদিহির আওতায় আনতে পারছে: ইনমা সিইও
Published: 22nd, May 2025 GMT
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর সংগঠন ইনমার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আর্ল জে উইলকিনসন বলেছেন, সাংবাদিকেরা এখন সময়ের দাবি মেটাতে প্রস্তুত এবং তাঁরা ক্ষমতাবানদের জবাবদিহির আওতায় আনতে পারছেন। ইনমা ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অব নিউজ মিডিয়া-২০২৫-এর এই উদ্বোধনী দিনে আর্ল জে উইলকিনসন এ কথা বলেন।
গত বুধবার নিউইয়র্কে শুরু হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল নিউজ মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের (ইনমা) ৮৫তম এই বার্ষিক বিশ্ব সম্মেলন। বাংলাদেশ থেকে এবারের এই বিশ্ব সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের প্রতিনিধিরা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে থাকা বড় পরিবর্তন, চ্যালেঞ্জ আর সম্ভাবনা নিয়ে বক্তব্য দেন তিনি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সংবাদমাধ্যমআর্ল জে উইলকিনসন শুরুতেই খোলাখুলি আলোচনা শুরু করেন ট্রাম্প প্রশাসনের সংবাদমাধ্যমবিরোধী আক্রমণ প্রসঙ্গে। উইলকিনসন বলেন, ‘আমরা বরং ঘরের হাতিটাকে সরাসরি মোকাবিলা করি, আর আমি মনে করি, আমরা সবাই জানি সেই হাতি কে।’ এরপর তিনি বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে আপনি যা খুশি বলুন, কিন্তু তিনিই এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংবাদ। তিনি আমেরিকান গণতন্ত্রের রক্ষাকবচগুলোকে পরীক্ষা করছেন। তিনি সমাজের স্তম্ভগুলো আক্রমণ করছেন এবং সেগুলোকে নিজের ইচ্ছেমতো পাল্টে দিচ্ছেন।’
ইনমা সম্মেলনে আর্ল জে উইলকিনসন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আর ল জ
এছাড়াও পড়ুন:
শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক
রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।
শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।
তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।
গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।