বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপস পালের বিরুদ্ধে নিয়মের বাইরে গিয়ে দরপত্র আহ্বানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি নীতিমালা উপেক্ষা করে চারজন ঠিকাদারের অনুকূলে ৩০ লক্ষাধিক টাকার কার্যাদেশও দেন। এই অনিয়ম তদন্তের দাবি জানিয়ে ইউএনও তাপস পাল ও এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। 

১৯ মে এ অভিযোগ দেন ঠিকাদার মো.

রফিকুল ইসলাম মোল্লা। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে চারটি কার্যাদেশই আগের দিন সভা দেখিয়ে (১৮ মে) বাতিল করে উপজেলা প্রশাসন। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ৯ মার্চ চিতলমারীর ইউএনওর বাসভবন মেরামত, সংস্কারসহ বিভিন্ন কাজের জন্য ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার বিভাগ। প্রায় দুই মাস পরে চারটি দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রথম দরপত্রে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিসকক্ষ এবং উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার অফিসকক্ষ সংস্কার ও মেরামত, ইউএনওর বাসভবন (দ্বিতীয় তলা) সংস্কার ও মেরামত, দুই নম্বর দরপত্রে উপজেলা প্রকৌশলীর অফিসকক্ষ সংস্কার ও মেরামত, ইউএনওর বাসভবনের সীমানাপ্রাচীর উঁচুকরণ, ফটক সংস্কার ও মেরামত, তিন নম্বর দরপত্রে তাঁর কার্যালয় ও উপজেলা পরিষদ কার্যালয় সংস্কার ও মেরামত এবং চার নম্বর দরপত্রে ইউএনওর অফিস বাংলো সংস্কার ও মেরামতের কথা বলা হয়। কোনো দরপত্রেই কাজের বিবরণ ও মূল্য উল্লেখ করা হয়নি। শর্ত অনুযায়ী ১৪ মে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে দরপত্র দাখিলের কথা বলা হয়। 

লিখিত অভিযোগে রফিকুল মোল্লা উল্লেখ করেছেন, ৮ মে দরপত্র আহ্বানের তারিখ দেখানো হলেও পত্রিকায় তা প্রকাশিত হয়নি। ১৪ মে বেলা ১১টা পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের নোটিশ বোর্ডে ওই দরপত্র আহ্বানের নোটিশ টানানো হয়নি।

১৫ মে চারটি দরপত্রের বিপরীতে চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেন ইউএনও তাপস পাল। প্রথম দরপত্রের জন্য কার্যাদেশ পায় শেখ মো. জাহিদুজ্জামানের মালিকানাধীন মেসার্স জ্যোতি এন্টারপ্রাইজ। দুই নম্বর দরপত্রের কাজ দেওয়া হয় চিরঞ্জীব বিশ্বাসের মালিকানাধীন মেসার্স বিশ্বাস এন্টারপ্রাইজকে। তিন নম্বর দরপত্রের কার্যাদেশ পায় তাহজ্জত খানের মালিকানাধীন মেসার্স ইউসুফ খান এন্টারপ্রাইজ। চার নম্বর দরপত্রের কার্যাদেশ দেওয়া হয় মো. ফারুক মল্লিকের মল্লিক ইন্টারন্যাশনাল এন্টারপ্রাইজকে। 

জ্যোতি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শেখ মো. জাহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমি কোনো কাজ পাইনি। কে আপনাকে এসব তথ্য দিয়েছে?’

ইউএনও তাপস পাল বলেন, উপজেলা পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে চারটি কাজের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। সামনে জুন মাস হওয়ায় উপজেলা পরিষদের আরও কিছু কাজ করানো হবে, এজন্য একসঙ্গে দরপত্র আহ্বান করা হবে। অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য এড়িয়ে যান তিনি।

জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল আহসান বলেন, ‘চিতলমারীর দরপত্র আহ্বানসংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব গ রহ ট স স ক র ও ম র মত র দরপত র দরপত র র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিন ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন

কক্সবাজার ও যশোরে ১০ তলা বিশিষ্ট ২টি হাসপাতাল ভবন নির্মাণ ও কুমিল্লার পুলিশ লাইনের ভবণ নির্মাণে অতিরিক্ত ব্যয়ের ১টিসহ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মোট ৩ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৪৭৬ কোটি ৫৬ লাখ ৯৩ হাজার ৬৯৫ টাকা।

মঙ্গলবার (২০ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড.সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কমিটির সদস্য ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলায় ১০তলা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভবন নির্মাণের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ‘এস্টাব্লিশমেন্ট অব ৫০০ বেডেড মেডিকেল কলেজ হসপিটাল অ্যান্ড এনসিলারী বিল্ডিং ইন যশোর, কক্সবাজার, পাবনা অ্যান্ড নোয়াখালী (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজার জেলায় ১০তলা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভবন নির্মাণের পূর্ত কাজ ক্রয়ের জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি দরপত্র জমা পড়ে।তার মধ্যে ২টি দরপ্রস্তাব কারিগরিভাবে রেসপনসিভ বিবেচিত হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান দি ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড আর্কিটেক্ট লি.ঢাকা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ২৩৭ কোটি ৯৩ লাখ ৮২ হাজার ১৮৩ টাকা।

সভায় যশোর জেলায় ১০তলা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভবন নির্মাণের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।‘এস্টাব্লিশমেন্ট অব ৫০০ বেডেড মেডিকেল কলেজ হসপিটাল অ্যান্ড এনসিলারী বিল্ডিং ইন যশোর, কক্সবাজার, পাবনা অ্যান্ড নোয়াখালী (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় যশোর জেলায় ১০তলা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভবন নির্মাণের পূর্ত কাজ ক্রয়ের জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি দরপত্র জমা পড়ে। দাখিলকৃত ৩টি দরপ্রস্তাব কারিগরিভাবে রেসপনসিভ বিবেচিত হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে এইচএসএল এবং আরসিসিএল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ২৩১ কোটি ৯৫ লাখ ২ হাজার ১২৮ টাকা।

সভায়,‘কুমিল্লাস্থ পুলিশ লাইন এলাকায় ১৫তলা বিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণের পূর্ত কাজের ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনক্রমে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ পুলিশের জন্য ৯টি আবাসিক টাওয়ার ভবন নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় কুমিল্লাস্থ পুলিশ লাইন এলাকায় ১৫তলা বিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণের পূর্ত কাজ যৌথভাবে টিবিইএল, এসটিআই এবং টিইসি কাজ পায়। তখন ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬৫ কোটি ৯৮ লাখ ১ হাজার ৬১ টাকা। চুক্তি অনুসারে কাজ চলমান অবস্থায় ফাউন্ডেশনের এর ড্রইং সংশোধন হওয়ায় টেন্ডারভুক্ত/টেন্ডার বহির্ভূত কিছু আইটেম হ্রাস/বৃদ্ধি হয়। ফলে ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ৬ কোটি ৬৮ লাখ ৯ হাজার ৩৮৪ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হলে কমিটি অনুমোদন দিয়েছে।

ঢাকা/হাসনাত/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইউএনওর সঙ্গে তর্কের জেরে অফিসে আসেন না পিআইও
  • ‘মালিককে শাস্তিও দিতে পারি’ বলা ইউএনওর অপসারণ দাবি
  • ‘১৭ বছর খাইনি, এখন খাব’
  • ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রপ্রক্রিয়া আহ্বান চেয়ে করা রিটের শুনানি রোববার  
  • ২৫টি নতুন জিপ কেনার প্রস্তাব ফেরত, ১টিতে নীতিগত অনুমোদন
  • ঠিকাদারি নিয়ে রাজশাহী ও নওগাঁর দুই বিএনপি নেতার ‘খাই খাই’ ফোনালাপ
  • যমুনা অভিমুখে পোশাকশ্রমিকদের মিছিল, পুলিশি বাধায় কাকরাইলে অবস্থান
  • গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিন ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন
  • যমুনা অভিমুখে পোশাকশ্রমিকদের মিছিল, পুলিশের বাধা